কুয়েটের ভিসি ও প্রোভিসির পদত্যাগ, ক্যাম্পাসে উল্লাস

প্রকাশ : ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক ও খুলনা ব্যুরো

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ ও প্রোভিসি অধ্যাপক ড. এসকে শরীফুল আলম। গত বুধবার রাতে তারা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এ পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বৃত্তি ও প্রকৌশল শাখার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করে গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সরকার সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার পরও যখন বিষয়টা সুরাহা হচ্ছিল না, তখন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে বিষয়টি বিবেচনার জন্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়। এরপর তারা পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, নিয়ম অনুযায়ী এ পদত্যাগপত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য রাষ্ট্রপতির দপ্তরে পাঠানো হবে। তিনি পদত্যাগপত্র গ্রহণ করলে তা কার্যকর হবে।

এদিকে, কুয়েটের উপাচার্য মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীরা প্রায় ৫৮ ঘণ্টা পর তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। গত বুধবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তাদের জুস পান করিয়ে অনশন ভাঙান বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য (ইউজিসি) অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান। অনশন ভাঙানোর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো একটি বার্তা অনশনরত শিক্ষার্থীদের পড়ে শোনান অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান। সেখানে তিনি বলেন, সাম্প্রতিক ঘটনাবলির পরিপ্রেক্ষিতে সমস্যা নিরসন ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে কুয়েটের উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পরিচালনার লক্ষ্যে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকদের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ওই বার্তা পাওয়ার পর ক্যাম্পাসের স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার অঞ্চলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা উল্লাসে ফেটে পড়েন। সেখান থেকে আনন্দমিছিল বের করা হয়।

কুয়েট শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের বিভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেওয়া হয় ‘কুয়েট ১৯’ নামের একটি ফেসবুক পেজে। শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙার পর ওই পেজে লেখা হয়, ‘আলহামদুলিল্লাহ। আমরা জিতেছি। আমার ভাইরা জিতেছে। মাসুদ পদত্যাগ করেছে!’

এর আগে গত বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে শিক্ষা উপদেষ্টা সিআর আবরার কুয়েট ক্যাম্পাসে আসেন। তিনি অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তিনি তাদের দাবি শোনেন ও অনশন ভাঙতে অনুরোধ করেন। তবে শিক্ষার্থীরা সেই অনুরোধ না রেখে তাদের দাবিতে অনড় থাকেন।

শিক্ষা উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার পরপরই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। এদিকে গত বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিং করে শিক্ষক সমিতি। চাপ দিয়ে উপাচার্যের অপসারণ করা হলে মেনে নেবেন না বলে জানান শিক্ষকরা। এছাড়া ইউজিসির গঠন করা কমিটির তিন সদস্যের দলও কুয়েটে আসে। তারা বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলাদা আলাদা কথা বলে। এছাড়াও দুপুরে সিন্ডিকেট সভা বসে। ১৪ এপ্রিল সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। সিন্ডিকেটে সেই বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এছাড়া সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গতকাল বিকাল থেকে ছাত্রদের ছয়টি ও ছাত্রীদের একটি হল আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হয়। সভায় আগামী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরু করার আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক লোক আহত হন। পরদিন প্রশাসনিক ভবনসহ সব একাডেমিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। ওইদিন দুপুরে সিন্ডিকেট সভায় কুয়েটে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে ১৩ এপ্রিল বিকাল থেকে শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেন। এরপর ১৪ এপ্রিল রাতে সিন্ডিকেট সভায় সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগে ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ঘটনার জেরে গত রোববার উপাচার্যের পদত্যাগের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে উপাচার্য পদত্যাগ না করায় গত সোমবার থেকে অনশন চালিয়ে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলম বলেছেন, আমি গতকাল রাত ১০টায় ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়েছি। তবে কোনো কাগজে স্বাক্ষর করিনি। এটা অব্যাহতি হতে পারে। কিন্তু আমি পদত্যাগ করিনি বা আমাকে পদত্যাগ করতে বলাও হয়নি। আমাদের যদি বলত ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে পদত্যাগ করতেই হবে, এটাই একমাত্র সমাধান। তাহলে আমরা পদত্যাগ করতাম। আমি কোনো পদত্যাগপত্র পাঠাইনি। গতকাল বৃহস্পতিবার কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য পদত্যাগ করেছেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর শেখ শরীফুল আলম এসব কথা জানিয়েছেন।

উপ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলম বলেন, ইউজিসির টিম গতকাল সকাল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ করেছে। বেশিরভাগ সময় ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলেছে। আমার সঙ্গে কথা বলেছে বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে ৫টা পর্যন্ত। ১৮ ও ১৯ তারিখের ঘটনার বিষয়ে কথা হয়েছে। তাদের কোনো প্রশ্নই আমার কাছে মনে হয়নি যে আমার কোনো একটা জায়গা থেকে ত্রুটি বা স্বচ্ছতা, নিষ্ঠার অভাব আছে। প্রতিষ্ঠান বা ছাত্রদের কল্যাণে কাজ করছি। তবে আমি বুঝতেই পারছি না যে, আসলে আমার অপরাধটা কি?

এর আগে, বুধবার দিবাগত রাতে কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. শেখ শরীফুল ইসলামকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদানের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. মামুন অর রশিদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, অনতিবিলম্বে একটি সার্চ কমিটি গঠনের মাধ্যমে এ দুটি পদে নতুন নিয়োগ প্রদান করা হবে। অন্তর্বর্তীকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত কার্যক্রম চালু রাখার স্বার্থে জ্যেষ্ঠ অধ্যাপকগণের মধ্য থেকে একজনকে সাময়িকভাবে উপাচার্যের দায়িত্ব অর্পণ করা হবে।

বিষয়টি জানার পর অব্যাহতি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকা এবং অধিকতর তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে বৃহস্পতিবার শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কুয়েটের উপ-উপাচার্য শেখ শরীফুল আলম।

শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর লেখা ওই চিঠিতে অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলম লিখিছেন, জুলাই ২০২৪ অভ্যুত্থানে ছাত্র-জনতার পক্ষে বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখি। পরবর্তী সময়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত ২০২৪ সালের ৪ ডিসেম্বর আমাকে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেন। উপ-উপাচার্য পদে যোগদানের পর বিভিন্ন দাপ্তরিক সভা ও সিন্ডিকেটে প্রতিষ্ঠানের স্বার্থ ও শিক্ষার্থীদের স্বার্থ সমুন্নত রাখতে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। যোগদানের পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আমাকে কোনো প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজে সহযোগিতা করেননি।

চিঠিতে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কর্তৃক উপ-উপাচার্যের সীমিত আকারে প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজ করার যে নীতিমালা ছিল তা গত ১১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে বাতিল করে দেওয়া হয়। ফলশ্রুতিতে গত ৪ মাসে প্রশাসনিক কার্যাদি এবং আর্থিক বিলে স্বাক্ষর করতে না দিয়ে আমাকে বঞ্চিত করা হয়েছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদটি একটি অলংকারিক পদে পরিণত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য হিসেবে আমি শুধুমাত্র লাইব্রেরি কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করি।

শেখ শরীফুল আলম উল্লেখ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে সর্বদা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে কাজ করেছি। এ অবস্থায় গত রাতে প্রিন্ট/ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া মারফত জানতে পারি সরকারের তরফে আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বাস্তবতা হলো আমি নিজে এখনও আমার অপরাধ সম্পর্কে জানি না এবং আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হয়নি যা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে সংঘটিত ন্যক্কারজনক হামলার সময়ে ছাত্র ও বহিরাগত সন্ত্রাসী উভয়পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করি এবং আমার শরীরে দুটি ঢিল/পাটকেল লাগে এবং ছাত্রদের সঙ্গে আমি নিজেও আহত হই। এ ব্যাপারে সাধারণ ছাত্রদের বক্তব্য নেয়া যেতে পারে ও ঘটনার ফুটেজ দেখা যেতে পারে। তিনি আরও উল্লেখ করেন, আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেওয়া এবং কোনো অপরাধ/অপকর্ম না করে অব্যাহতি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুল বার্তা যাবে বলে মনে করি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেওয়ার মতো পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানাচ্ছি বা অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

কুয়েটের ঘটনায় ভিসির স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে- শিবির সভাপতি: খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ভিসি যেভাবে স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশ করেছেন, তদন্ত থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা পর্যন্ত সব কিছুতেই তার স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব প্রকাশ পেয়েছে। তিনি পদত্যাগ করেননি, বরং সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে তাকে পদচ্যুত করা হয়েছে। এটি একটি বড় বার্তা, আগামী দিনে যারা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব পোষণ করবেন, তাদের জন্য বাংলাদেশে কোনো স্থান নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে কুয়েটের সাম্প্রতিক ঘটনাবলি ও দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম ঠাকুরগাঁও শহরের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত সাথি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

কুয়েটের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই মাস ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকাকে অযৌক্তিক মন্তব্য করে শিবির সভাপতি বলেন, যারা স্বৈরতান্ত্রিক মনোভাব পোষণ করেন, তারা এখান থেকে শিক্ষা নেবেন।

ডাকসু নির্বাচন প্রসঙ্গে জাহিদুল ইসলাম বলেন, ডাকসু নির্বাচনের কথা আমরা আগেও বলেছি। আশা করছি, বেশ কিছু উদ্যোগ এরইমধ্যে গ্রহণ করা হয়েছে। আমরা চাই, ছাত্রসংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত প্রতিনিধি নির্বাচিত হোক। এতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার আদায়ে সোচ্চার হবে এবং লেজুড়ভিত্তিক রাজনীতির ধারা অনেকটাই কমে যাবে।

সামনের দিনের রাজনীতি সম্পর্কে তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবের যে গতি শুরু হয়েছে, সেখানে আর আধিপত্যের রাজনীতি থাকবে না। থাকবে মত ও আদর্শের স্বাধীনতা। কেউ কারও ওপর মত চাপিয়ে দেবে না। ছাত্রশিবির আগামী দিনের আদর্শ, সৎ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা চাই, তারা দক্ষ ও সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠুক।

তদন্ত ছাড়া উপাচার্যের অব্যাহতিতে ন্যায়বিচারের পরাজয় হয়েছে- শিক্ষক সমিতি: সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া চাপের মুখে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অব্যাহতির সিদ্ধান্তে ন্যায়বিচারের পরাজয় হয়েছে বলে মন্তব্য করেছে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) শিক্ষক সমিতি।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ফারুক হোসেন গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তারা বলেন, ?আমরা চেয়েছিলাম একটা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাস। কিন্তু বর্তমান সময়ে যারা রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আন্দোলন করে আসছিল, আমরা দেখতে পাচ্ছি তারাই আজ অন্ধকার রাজনীতির করালগ্রাসে বন্দি।

এ কারণে ১৮ ফেব্রুয়ারি ক্যাম্পাসে উদ্ভূত সংকট নিরসনে শিক্ষকদের কোনো চেষ্টাই সফল হয়নি। তারা বলেন, শিক্ষা উপদেষ্টাসহ তার পাঠানো প্রতিনিধিদলও এক্ষেত্রে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। ফলে সুষ্ঠু তদন্ত ছাড়া চাপের মুখে উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের অব্যহতির সিদ্ধান্তে মূলত ন্যায়বিচারের পরাজয় হয়েছে। বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, গৌরবান্বিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দীর্ঘ আট মাস পরও যদি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন কার্যক্রম চলতে থাকে, তা শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, সমগ্র বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলতে পারে- যা নিয়ে শিক্ষক সমিতি উদ্বেগ প্রকাশ করছে। তবে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে শিক্ষকরা সব সময় সচেষ্ট থাকবে।