জি এম কাদেরের সিদ্ধান্ত মানেন না আনিসুল-রুহুল মুজিবুল

প্রকাশ : ০৯ জুলাই ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মো. মুজিবুল হক (চুন্নু) বলেছেন, জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে দলের নেতাদের সব পদণ্ডপদবি থেকে অব্যাহতি দিয়েছেন। তারা জি এম কাদেরের সিদ্ধান্ত মানেন না। তারা দলের কাউন্সিলে অংশ নেবেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশানে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন জাপার সব পদণ্ডপদবি থেকে অব্যাহতি পাওয়া এই তিন সিনিয়র নেতা।

সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও মহাসচিব মুজিবুল হককে গত সোমবার দলীয় সব পদণ্ডপদবি থেকে অব্যাহতি দেন জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের। সোমবার বিকেলে জাপার কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। অন্যদিকে শামীম হায়দার পাটোয়ারীকে দলের মহাসচিব করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে মোট ১১ জন নেতাকে দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলো। এ নিয়ে জাপায় অস্থিরতা চলছে। এসব বিষয় নিয়ে আজ বুধবার জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদের গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন বলে দলের একটি সূত্রে জানা গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, জি এম কাদের যে সভা ডেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন, এই সভা তিনি ডাকতে পারেন না। দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সভা ডাকতে পারেন দলের মহাসচিব। তাই তাদের বিরুদ্ধে যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা তারা মানেন না। তারা তাদের পদে বহাল আছেন। কেউ বলতে পারবেন না, তারা দলের কোনো বিরোধিতা করেছেন। তারা সব সময় সংঘবদ্ধ থাকার কথা বলেছেন।

জাপার গঠনতন্ত্রের যে ধারাবলে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে, তা বাতিলের দাবি জানান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, কোনো গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলে এমন স্বৈরাচারী ধারা থাকতে পারে না। এর মাধ্যমে চেয়ারম্যান একাই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, দলে যে কাউকে যুক্ত করা ও বহিষ্কার করার ক্ষেত্রে। এটি বাতিল করতে হবে।

জাপার তৎকালীন চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ অসুস্থ থাকা অবস্থায় তার কাছ থেকে জোর করে দলের কো-চেয়ারম্যানের দায়িত্ব জি এম কাদের নেন বলে অভিযোগ করেন আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তিনি বলেন, জি এম কাদেরের প্রতিটি বিষয়ে স্বৈরাচারী মনোভাব।

মুজিবুল হক বলেন, দলীয় চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলের ২৮ জনকে পদোন্নতি দিয়েছেন। অথচ তিনি মহাসচিব হিসেবে তা জানেন না। জি এম কাদেরের চেয়ে কোনো অংশে তার যোগ্যতা কম নয়। তিনি যখন সংসদ সদস্য, তখন জি এম কাদের একটি বেসরকারি কোম্পানির ম্যানেজার। একমাত্র এইচ এম এরশাদের ভাই বলে তাকে দলের চেয়ারম্যান হিসেবে তারা মেনে আসছেন।

মুজিবুল হক বলেন, আমরা জাতীয় পার্টি ছাড়ব না। আমরা জাতীয় পার্টি ভাঙতে দেব না। আমাদের অবদান দলের জন্য সবচেয়ে বেশি। আমরা কাউন্সিলে যাব, সেখানে আমাদের কথা গ্রহণ না করলে এরপর আর কথা থাকবে না।

রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, তিনি ১৭ বছর জাপার মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন একটি শক্তিশালী গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রে তাদের দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। জি এম কাদের দলের ক্ষতি করছেন। তিনি যা করছেন, তা কোনো সুস্থ রাজনীতিবিদ করতে পারেন না।

এই তিন নেতা ছাড়াও সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, সাইদুর রহমান টেপা, শফিকুল ইসলাম সেন্টু, মোস্তফা আল মাহমুদ, নাজমা আকতার, জসিমউদ্দিন ভূঁইয়া, আরিফুর রহমান খান, জহিরুল ইসলাম জহির, সোলায়মান আলম শেঠ প্রমুখ।