সংসদ নির্বাচনের তফসিল ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে

প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল ঘোষণা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসিরউদ্দিনের সভাপতিত্বে কমিশনের সভা শেষে ব্রিফিংয়ে তিনি একথা জানান। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ২০২৬ এর ফেব্রুয়ারিতে ভোট আয়োজনে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দেয়া চিঠি হাতে পায় নির্বাচন কমিশন।

চিঠি হাতে পাওয়ার পরই সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, আরপিও সংশোধন, প্রবাসী ভোট পদ্ধতির অগ্রগতিসহ কয়েকটি বিষয়ে সিদ্ধান্তে আসতে সভা করে নির্বাচন কমিশন। দিনভর বৈঠক শেষে সন্ধ্যায় ব্রিফিংয়ে নির্বাচন কমিশনার অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, প্রার্থীর আচারণবিধি, পোস্টাল ব্যালট পেপার, আরপিও এবং প্রবাসীদের ভোট নিশ্চিত করতে চায় কমিশন। তিনি জানান, ভোটার বাড়ানোর জন্য জেলখানা বা অন্যান্য জায়গায় অনলাইনের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করা হবে। কারো প্রার্থীতা বাতিল হলে আদালতে গিয়ে ফেরত পাওয়ার সুযোগ থাকবে।

তিনি আরও জানান, প্রধান উপদেষ্টার চিঠির ভিত্তিতে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ভোটার হবেন তারা ভোট দিতে পারবেন। অভিযোগ করেন, এআই এর মাধ্যমে অনেক মিস ইনফরমেশন ছড়িয়ে পরছে। তাই যাচাই বাছাই করে ভিডিও শেয়ার দেয়া পরামর্শ নির্বাচন কমিশনের।

প্রধান উপদেষ্টার চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আপনারা ভোটের তারিখ নিয়ে আলোচনা করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজকে এটা নিয়ে আলোচনা করি নাই। তবে আমরা অতি শিগগিরই আলোচনা করব।

প্রবাসীদের নিয়ে তিনি বলেন, প্রবাসীদের কাছে সিম্বল ব্যালট (প্রতীক সংবলিত) যাবে যাতে সময় কম লাগে। প্রার্থী চূড়ান্ত করার পর সিম্বল ব্যালটে ভোট দেবেন। ইসিতে এসে পোস্ট অফিস ব্যালট নিয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে নিবন্ধন করে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর তারা অনলাইনে প্রার্থীর তালিকা দেখতে পারবেন। সেই অনুযায়ী তারা পছন্দের প্রার্থী দেখে ব্যালটে থাকা সেই প্রার্থীর সিম্বলে ভোট দেবেন।

এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, প্রবাসীদের ভোট নিশ্চিত করতে চাই। মাধ্যমটা হবে পোস্টাল ব্যালট। অতীতে এই বিধান থাকলে সময়ের কার্যকর করা যেতো না। এবার তিনভাবে পোস্টাল ব্যালটে ভোট হবে। যারা প্রবাসে থাকেন, কারাগারে থাকেন ও ভোটের দায়িত্বে থাকেন। তাদের জন্য এই ব্যবস্থা থাকবে। এজন্য আগেই নিবন্ধন করতে হবে। পোস্টাল ব্যালটের ক্ষেত্রে সেপ্টেম্বর থেকে প্রচার ও ভোটারশিক্ষণের কাজ চলবে।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শেষ মুহূর্তে প্রার্থী পরিবর্তন হলে আদালতের আদেশে তবে সেখানে পোস্টাল ব্যালট হবে না। তবে আইনি কার্যক্রম যেন দ্রুত হয় সে ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।

ইসি সানাউল্লাহ জানান, এটা ব্যয় সাপেক্ষ প্রসেস। আনা-নেওয়া করতে ব্যালট প্রতি ৫শ টাকা থাকবে। এরপর ছাপানোর খরচও আছে। আবার নিবন্ধন কার্যক্রমের জন্য ৪৮ টাকার প্রকল্প নেওয়া হবে। প্রতি এক লাখ ভেটারের জন্য সবমিলিয়ে ৬ থেকে ৭ লাখ টাকা লাগবে।

তিনি বলেন, ভোটার তালিকা আইনে সামান্য সংশোধন করেছিলাম। এজন্য বছরের মাঝামাঝিতে ভোটার করে নিতে পারবো। এজন্য ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত যারা ১৮ বছর পূর্ণ করবে তাদের তালিকায় নেওয়ার সিদ্ধান্ত হবে। এতে ১৮ থেকে ২০ লাখের তরুণ ভোটার যোগ হতে পারে।

সানাউল্লাহ বলেন, আচরণ বিধিমালায় এআইয়ের অপবব্যহার আমরা কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছি। ডিসইনফরমেশন ছড়াতে এআইয়ের ব্যবহার বেশি করা হয়।

নির্বাচনে ড্রোন ব্যবহারের বিষয়ে প্রশ্নে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, নির্বাচনে কেউই, এমনকি গণমাধ্যমও ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে না। কমিশনের পক্ষ থেকেও এর প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হচ্ছে না।

তবে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহারের বিষয়ে তিনি বলেন, এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে কমিশন এটি ব্যবহারে আগ্রহী।