‘ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষের বিভাজন ক্ষতিকর হবে’

প্রকাশ : ২০ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষগুলোর মধ্যে বিভাজন দেশের জন্য ভালো হবে না।’ গতকাল মঙ্গলবার আগারগাঁওয়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের ৪৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। তারেক রহমান বলেন, ‘আগামীদিনের রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি। প্রচলিত রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে চায় বিএনপি।’ জনগণের মধ্যে বিএনপির প্রতি বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি হয়- এমন কাজ থেকে দূরে থাকতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের বক্তব্যে গণতন্ত্রকামী মানুষের মনে নানা প্রশ্ন জেগেছে। ৫ আগস্টের পর ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির নিত্যনতুন ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিতর্কে লিপ্ত হওয়া শহিদদের আত্মত্যাগের প্রতি অবমাননা।’ তিনি বলেন, ‘জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনই একমাত্র পথ। নির্বাচনের পথে বাধা এলে পতিত ফ্যাসিবাদের ফিরে আসা সহজ হবে। স্বৈরাচার আবার ফিরে এলে সমস্ত রাষ্ট্র ক্ষতির মুখে পড়বে। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

তারেক রহমান বলেন, ‘সংবিধান ও লিখিত বিধি-বিধান দিয়ে কখনও ফ্যাসিবাদ ঠেকানো যায় না। রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে ফ্যাসিবাদ ঠেকাতে হলে অবশ্যই জনগণকে রাজনৈতিকভাবে শক্তিশালী করার কোনো বিকল্প নেই। সরাসরি ভোট দিয়ে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের চর্চার মাধ্যমেই জনগণ শক্তিশালী হয়ে উঠবে। নির্বাচনই হচ্ছে এর অন্যতম প্রধান মাধ্যম।’

তিনি আরও বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় নির্ধারণ করেছে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে দেশের জনগণ দেড় দশকের বেশি সময় পর নিজেদের এজেন্ডা-ম্যানিফেস্টো বাস্তবায়নের সুযোগ পাবেন। তবে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠান নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী দলগুলোর কিছু সদস্যের বক্তব্যে গণতন্ত্রকামী জনগণের মনে নানা প্রশ্ন জন্ম দিয়েছে।’

দেশের সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘দূরত্ব তৈরি হলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে পতিত, পরাজিত ফ্যাসিস্ট চক্রের পুনর্বাসনের পথ সহজ হয়ে উঠবে, তাদের সুযোগ তৈরি হবে। তাই সতর্ক ও সজাগ থাকতে গণতন্ত্রকামী জনগণের প্রতি বিনীত আহ্বান জানাই।’

ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তির মধ্যে বিভেদ ঘোচানোর বার্তা দিয়ে তিনি বলেন, ‘একাত্তর ছিল স্বাধীনতা অর্জনের যুদ্ধ, চব্বিশ স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধ। হাজারো শহীদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে ইতিহাসের নৃশংসতম এক ফ্যাসিস্টের পদত্যাগ এবং পলায়নের পর এখন ফ্যাসিবাদবিরোধী গণতান্ত্রিক শক্তি নিজেদের মধ্যে নিত্যনতুন ইস্যু নিয়ে অহেতুক বিতর্কে লিপ্ত হওয়া শহীদদের আত্মত্যাগের অবমাননার শামিল। গণতান্ত্রিক ইনসাফভিত্তিক দেশ গড়ার মাধ্যমেই শহীদদের রক্তের ঋণ শোধ করা এখন সময়ের দাবি।’

আগামীতে বিএনপির রাজনীতি হবে জনগণের জীবনমান উন্নয়নের রাজনীতি- এমন মন্তব্য করে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘সেটি দেশের ভেতরে হোক, বিদেশে হোক। যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা যায়। আমাদের আরেকটি লক্ষ্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করা।’