‘সরকারের একটি অংশ গণতন্ত্রপন্থি শক্তি ঠেকাতে চায়’
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অভিযোগ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরেই একটি অংশ সচেতনভাবে দেশের গণতান্ত্রিক শক্তিকে ক্ষমতায় আসতে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। সেই সঙ্গে, একটি রাজনৈতিক মহল নির্বাচন প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে নতুন নতুন দাবি তুলছে। গতকাল বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা সরকারকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছি, কোথাও বাধা সৃষ্টি করিনি এবং রাজপথে বড় কোনো দাবিও তুলে সরকারকে বিব্রত করিনি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আজ কিছু রাজনৈতিক মহল খুব উদ্দেশ্যমূলকভাবে নতুন দাবি তুলে নির্বাচন বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তারা এমন সব দাবি তুলছে, যেগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষ পরিচিত নয়।’
নিউইয়র্কে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ওপর হামলার ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘কোথায় যাব আমরা?’ রাজনীতি ও সমাজে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতি নিয়ে নিজের হতাশার কথা জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি রাজনীতিতে কখনও হতাশ হইনি। সব সময় সবাইকে সাহস দিয়েছি। কিন্তু সম্প্রতি আমার মধ্যে হতাশার ছায়া এসেছে। আপনারা জিজ্ঞেস করতে পারেন, কেন? আমি যেদিকেই তাকাই, দেখি অধিকাংশ মানুষ নষ্ট হয়ে গেছে।
দুর্নীতির উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, কোনো অফিস-আদালতে যাওয়া যায় না। একজন শিল্পপতি আমাকে বলেছেন, আগে এক লাখ টাকা দিতে হতো, এখন পাঁচ লাখ টাকা দিতে হয়। এর মানে হলো, মানুষের মানসিকতার যে পরিবর্তন আসার কথা ছিল, তা আসেনি। দুর্ভাগ্যজনকভাবে রাজনৈতিক নেতারাও এর সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন, যা বাংলাদেশের আরও বেশি ক্ষতি করছে।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আমরা ‘৭১-এর যুদ্ধ করেছি। আমরা ‘৭১ ভুলিনি, ভোলা সম্ভব নয়। মানুষকে ‘৭১ ভুলিয়ে দেওয়ার অনেক চেষ্টা চলছে... যারা তখন শত্রুদের সাহায্য করেছিল, তারা এখন বড় গলায় কথা বলছে। এজন্য আমি অনুরোধ করব, আমাদের খুব সতর্ক ও সাবধান থাকতে হবে। যদি আমরা মনে করি জিতে গেছি, সব ঠিক হয়ে গেছে, তাহলে সেটা বড় ভুল হবে।
সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখনও সরকারের হাতে সময় আছে। খুব দ্রুত জুলাই সনদ, সংস্কারের কাজগুলো শেষ করুন, জটিলতা বাড়াবেন না। দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। রাজনৈতিক দলগুলোকে নির্বাচনমুখী করুন। নির্বাচনের মাধ্যমেই জনগণের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।’
আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতির মতো দাবির সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘এসব দাবি তুলে হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যা সাধারণ মানুষ জানে না। আপনি ভোট দেবেন, কিন্তু কাকে ভোট দিলেন তা জানবেন না। আপনার এলাকার জনপ্রিয় ব্যক্তিকে ভোট দিলেন, কিন্তু দেখা যাবে অন্য একজন নির্বাচিত হয়ে সংসদ সদস্য হয়ে গেছেন, যাকে আপনি চেনেনও না। এই বিষয়গুলো এখনও আমাদের কাছে ও জনগণের কাছে পরিষ্কার নয়।’
