৩৩ বছর পর জাকসুর ভোট আজ

প্রকাশ : ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

দীর্ঘ ৩৩ বছর পর আজ বৃহস্পতিবার জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হতে যাচ্ছে।

ভোটগ্রহণকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এবার কেন্দ্রীয় সংসদে ২৫ পদে লড়ছেন ১৭৭ জন। হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৪৫ জন। কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ৯ এবং জিএস পদে লড়ছেন ৮ জন। তবে শেষ মুহূর্তে জিএস পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দা অনন্যা ফারিয়া। অন্যদিকে হাইকোর্টের আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর চেম্বার আদালতে ওই রায় স্থগিত হওয়ায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারছেন না সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের ভিপি প্রার্থী অমর্ত্য রায়। জাকসু নির্বাচনে মোট ভোটার ১১ হাজার ৯১৯ জন। ভোটারের ৪৮ দশমিক ৮ শতাংশ ছাত্রী। প্রচার প্রচারণার সময় শেষ হয়েছে গত মঙ্গলবার রাত ১২টায়।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, জাকসু নির্বাচনে বিভিন্ন হলে ২২৪টি বুথ বসানো হবে। ব্যালট পেপারে টিক চিহ্নের মাধ্যমে ভোট দিতে হবে। প্রতি ২০০ ব্যালট পেপারের জন্য একটি বাক্স থাকবে। কেন্দ্রীয় সংসদ ও হল সংসদের ব্যালট বাক্স আলাদা করে চিহ্নিত থাকবে। নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য ৬৭ জন পোলিং এজেন্ট এবং ৬৭ জন সহকারী অফিসার কেন্দ্রগুলোতে উপস্থিত থাকবেন, যারা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক।

নির্বাচন উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১২টি গেটে ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২শ পুলিশ মোতায়েন করা হবে। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনীর উপস্থিতি চেয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছেও আবেদন করা হয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ভোটকেন্দ্রে নিরাপত্তার জন্য আনসার মোতায়েন করা হবে। গত মঙ্গলবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে অবস্থিত জাকসু নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মত বিনিময়কালে এসব কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান।

এ সময় অধ্যাপক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, পুলিশ সদস্যদের একটি অংশ সিভিল পোশাকেও দায়িত্ব পালন করবেন। স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনীকে উপস্থিত থাকার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছেও আবেদন করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে কেন্দ্রীয় ও হল সংসদের প্রার্থীদের ডোপ টেস্ট করা হয়। কেন্দ্রীয় সংসদের ১৬৩ জন ও হল সংসদের ৪০৩ জন পরীক্ষার নমুনা দিয়েছেন। বাধ্যতামূলক করা হলেও ৫৬ প্রার্থী নমুনা দেননি।

এদিকে জাকসু নির্বাচনে ‘সম্পৃতীর ঐক্য’ প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদপ্রার্থী জাবি শাখা ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা বাতিলকে কেন্দ্র করে নির্বাচনের এক দিন আগে জাকসু নির্বাচন কমিশন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে রাতভর অবরুদ্ধ করে রাখা হয়।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা পৌনে ৭টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে জাকসু নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে ছাত্র ইউনিয়ন সমর্থিত সম্প্রীতির ঐক্য প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচন কমিশন ও উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে রেখে এই ঘটনার সমাধানের দাবি জানান।

শিক্ষার্থীরা জানান, প্রার্থিতা ফিরে পেতে হাইকোর্টে গত সোমবার রিট করেন অমর্ত্য। এরপর আদালতে শুনানি শেষে অমর্ত্য রায় প্রার্থিতা ফিরিয়ে পান। পরবর্তীতে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আপিল করা হয় চেম্বার আদালতে। সর্বশেষ তথ্য মতে, অমর্ত্য রায়ের প্রার্থিতা চূড়ান্তভাবে বাতিল করেছে চেম্বার জজ আদালত।