শশী থারুরের মন্তব্যে ডাকসুর আন্তর্জাতিক সম্পাদকের উদ্বেগ
প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন সম্পর্কে ভারতের কংগ্রেস নেতা শশী থারুরের মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডাকসুর নবনির্বাচিত আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও জুলাই আন্দোলনে চোখ হারানো জসীম উদ্দিন খান। গতকাল শুক্রবার ফেসবুক স্ট্যাটাসে জসীম লিখেছেন, ডাকসু নির্বাচন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের স্বাধীন ইচ্ছা এবং গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের প্রতিফলন। নির্বাচনের ফলাফলকে উদ্বেগের বিষয় হিসেবে উল্লেখ করা কেবল অযৌক্তিকই নয়, এটি বাংলাদেশের ছাত্রদের গণতান্ত্রিক ইচ্ছাকে অবজ্ঞা করার সামিল। একটি কার্যকর গণতন্ত্র বিভিন্ন মত এবং দৃষ্টিভঙ্গির ওপর ভিত্তি করে বিকশিত হয়। তিনি আরও লিখেছেন, আমরা সম্মানের সঙ্গে মি. থারুরকে অনুরোধ করছি, তিনি যেন ভারতের নিজ গণতান্ত্রিক কাঠামোর মধ্যে চলমান সমস্যাগুলো সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করেন। ভারতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় মুসলিম, খ্রিস্টান, দলিত এবং আদিবাসী ক্রমাগত বৈষম্য এবং সহিংসতার শিকার হচ্ছে। একটি প্রকৃত গণতন্ত্র তার সকল নাগরিকের অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষা করে, এবং আমরা দৃঢভাবে ভারতীয় নেতাদের অনুরোধ করি, প্রতিবেশী দেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার সমালোচনার আগে তারা যেন নিজের দেশে ন্যায়বিচার এবং সমতার প্রতি অগ্রাধিকার দেন।
নবনির্বাচিত ডাকসু নেতৃত্ব হিসেবে আমরা সারা বিশ্বের ছাত্রদের সঙ্গে সংলাপ, বন্ধুত্ব এবং একাডেমিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা বিশ্বাস করি শিক্ষা, সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং যুব নেতৃত্বাধীন উদ্যোগ দেশগুলোর মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ? করতে পারে। তবে, মি. থারুরের মতো মন্তব্য যা ভুল ধারণা তৈরি করে বা শত্রুতার জন্ম দেয়, তা গঠনমূলক সংলাপকে বাধাগ্রস্ত করে এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। ডাকসু সংলাপ, সহযোগিতা এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধার মাধ্যমে বাংলাদেশ ও বিশ্বের মধ্যে আস্থা গড়ে তোলা এবং সম্পর্ক গভীর করার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে শশী থারুর জামায়াত-সমর্থিত ছাত্র সংগঠনের বিজয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে লিখেছিলেন, ‘এটি হয়তো বেশিরভাগ ভারতীয়র কাছে আলোড়ন সৃষ্টি করেনি, কিন্তু এটি ভবিষ্যতের জন্য এক অশনি সংকেত। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ (বর্তমানে নিষিদ্ধ) ও বিএনপির প্রতি মানুষের বিরক্তি বেড়েছে। অনেকে এই দুই দলের বিকল্প হিসেবে জামায়াতকে বেছে নিচ্ছে। ধর্মীয় উগ্রতার কারণে নয়, বরং এজন্য যে দলটি, সঠিক হোক বা ভুল, দুর্নীতি ও কুশাসনে কলঙ্কিত নয়।’ তিনি আরও প্রশ্ন তোলেন, ‘এই প্রবণতা ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনে কীভাবে প্রতিফলিত হবে? ভারতকে কি তখন প্রতিবেশী হিসেবে জামায়াত সংখ্যাগরিষ্ঠতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে হবে?’
