ঐক্যবদ্ধ না হলে গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব হবে

বললেন তারেক রহমান

প্রকাশ : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কুমিল্লা প্রতিনিধি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, আমরা গণতান্ত্রিক শক্তিগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ না হই, তাহলে আগামী দিনে গুপ্ত স্বৈরাচারের আবির্ভাব হতে পারে। জনগণ যেভাবে চায়, আমাদের সেভাবে চলতে হবে। তিনি বলেন, একটি কথা- সবার আগে বাংলাদেশ। এটিই আমাদের শুরু, এটাই আমাদের শেষ, সবার আগে বাংলাদেশ। গতকাল শনিবার বিকালে কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভার্চুয়ালি এসব কথা বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা সরকারের সমালোচনা করে তারেক রহমান আরও বলেন, হাতকড়া পরা অবস্থায় হাসপাতালে মারা গিয়েছে, জেলের ভেতরে মারা গিয়েছে। হাজারো নেতাকর্মীকে পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে। আজ স্বৈরাচারের পতন হয়েছে। স্বৈরাচার দেশ থেকে বিতাড়িত হয়েছে। এখন হচ্ছে- সামনে দেশ গঠন, দেশকে পুনর্গঠন। দেশকে যদি পুনর্গঠন করতে হয়, যদি জনগণের প্রত্যাশা অনুযায়ী দেশকে গড়তে হয়, তাহলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি বলেন, আজকে এই সম্মেলনে একটি মূল প্রতিপাদ্য থাকতে হবে- সেটি হচ্ছে ঐক্য, সেটি হচ্ছে জনগণ এবং সেটি হচ্ছে দেশ পুনর্গঠন। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, এই দেশটা হচ্ছে আপনার আমার সবার ঘর। এই ঘরে ডাকাত পড়েছিল গত ১৫/১৬ বছর যাবত। সেই ডাকাতকে বাংলাদেশের জনগণ বিতাড়িত করেছে। এখন এই দেশকে আমাদের গঠন করতে হবে।

সম্মেলনের প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, এই দেশ থেকে দুই লক্ষ ৮০ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে যে পরিমাণ ঋণ হয়েছে সেই টাকা দিয়ে ৪০টি পদ্মাসেতু নির্মাণ করা যেত। ব্যাংকিং সেক্টর পাঁচ লক্ষ কোটি খেলাপি ঋণে জর্জরিত। এই আওয়ামী লীগের ইতিহাস লুটপাটের ইতিহাস। জুলাই অভ্যুত্থানে ১৪০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ মারা হয়েছে, ২০ হাজার মানুষকে পঙ্গু করা হয়েছে। এ বিষয়টি আমরা যেন ভুলে না যাই। আমরা এখনও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। সংস্কারের সংগ্রাম, বিচারের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। এই দেশের মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হতে হয়েছে। প্রত্যেকটি অপরাধের বিচার হবে। কিন্তু এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। যার জন্য নির্বাচন প্রলম্বিত হতে পারে না।

সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ। সম্মেলনের উদ্বোধন করেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপাসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাবেক এমপি মনিরুল হক চৌধুরী ও আমিন উর-রশিদ ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, শিল্প বিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমন। সঞ্চালনা করেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিম।

গতকাল শনিবার অনুষ্ঠিত দক্ষিণ জেলা বিএনপির এই সম্মেলনে একাধিক প্রার্থী না থাকায় বর্তমান আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের সুমনকে সভাপতি ও সদস্য সচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ ওয়াসিমকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ঘোষণা করা হয়। আগামী সপ্তাহে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে বলে সম্মেলনে জানানো হয়।