জামায়াত আমিরের সঙ্গে তিন রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে তুরস্ক, কসোভা ও সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত সাক্ষাৎ করেছেন। গতকাল সোমবার রাজধানীর বসুন্ধরাস্থ আমিরে জামায়াতের কার্যালয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ. বরিস একিঞ্চি এবং ঢাকায় নিযুক্ত রিপাবলিক অব কসোভোর রাষ্ট্রদূত লুলজিম প্লানা গতকাল আমিরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এর আগে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল বিকেল ৩টা ২৮ মিনিটে আমিরের বাসভবনে প্রবেশ করেন এবং বিকেল সাড়ে ৪টায় বের হয়ে যান। বৈঠক অত্যন্ত আন্তরিক ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে জানান জামায়াত নেতা মুজিবুল আলম।

সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, উনারা সাক্ষাৎ করতে আসায় জামায়াতে আমির সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তারা আমিরের স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার খোঁজখবর নিয়েছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগানের নেতৃত্বে ফিলিস্তিনের মুসলমানের জন্য যে উদ্যোগ এবং সহযোগিতার কথা স্মরণ করেছেন, জামায়াতের আমির তার জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের দেশের জুলাই অভ্যুত্থানের প্রসঙ্গ জানতে চেয়েছেন। আমির অত্যন্ত আগ্রহের সঙ্গে জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্রদের আন্দোলনের কথা স্মরণ করেছেন। আমাদের প্রায় ১২০০ ছাত্র-জনতার জীবনদান ও প্রায় ২৫/৩০ হাজার ছাত্র জনতা আহত হওয়ার কথা বলেছেন। জামায়াত ইসলামী আহত-নিহতদের পাশে সহানুভূতির আদর্শ মানবিক সহায়তা নিয়ে দাঁড়িয়েছেন সেসব প্রসঙ্গগুলো তিনি তুলে ধরেছেন।

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, তুরস্কের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের সংস্কার ও নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেছেন। আমির ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার বিষয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। সংস্কার ইস্যুতে মতের যে একটা সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে যদি সব রাজনৈতিক দল এবং স্টেকহোল্ডাররা ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হয় তাহলে ফেব্রুয়ারির যে টাইমলাইন সেখানে একটা নির্বাচন, একটা ফ্রি ফেয়ার ইলেকশন হওয়া সম্ভব। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ- তুরস্ক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, নির্মাণ, কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে সহযোগিতার সুযোগ, দক্ষ জনশক্তি উন্নয়নে যৌথ উদ্যোগের সম্ভাবনা, দুই দেশের ঐতিহাসিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গুরুত্ব, তুরস্কের উন্নয়ন ও সংস্কার প্রক্রিয়ায় ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামী সংগঠনের অতীত কঠিন সময়ের প্রসঙ্গ এবং জামায়াতের নিবন্ধন ফিরে পাওয়া ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা করা হয়।

জামায়াত আমিরের সঙ্গে কসোভো রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ : বৈঠকের শুরুতে রাষ্ট্রদূত আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং তার পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনা করেন। বৈঠকে বাংলাদেশে বিরাজমান সার্বিক পরিস্থিতি এবং বাংলাদেশ ও কসোভোর দ্বিপক্ষীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে তারা খোলামেলা আলোচনা করেন। ভবিষ্যতে বাংলাদেশের প্রতি কসোভোর দৃঢ় সমর্থন থাকবে বলেও তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আলোচনাকালে আমিরে জামায়াতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের।

জামায়াতের আমিরের সঙ্গে সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ : এর আগে গত রোববার সকাল ৯টায় রাজধানীর বসুন্ধরাস্থ জামায়াতের আমিরের কার্যালয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমানের সঙ্গে ঢাকায় নিযুক্ত সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত রেতো রেংগলি এক সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। রাষ্ট্রদূত বৈঠকের শুরুতেই জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমানের স্বাস্থ্যের খোঁজখবর নেন এবং তার পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনা করেন। বৈঠকে তারা বাংলাদেশের সার্বিক পরিস্থিতি, বাংলাদেশ-সুইজারল্যান্ডের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও কূটনৈতিক বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন। ভবিষ্যতে উভয় দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারা আরও জোরদার হবে বলে তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন। আলোচনাকালে রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন— সুইস দূতাবাসের কাউন্সিলর, হেড অব পলিটিক্যাল, ইকোনমিক ও কমিউনিকেশন অ্যাফেয়ার্স আলবের্তো জিওভানেত্তি এবং সিনিয়র পলিটিক্যাল, ইকোনমিক ও প্রেস অফিসার খালেদ চৌধুরী। এ সময় জামায়াতের আমিরের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন-বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এবং কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের প্রধান এডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন এবং জামায়াতের আমিরের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান।