শাপলা না দিলে নির্বাচন নিয়ে কিছু ঘটলে দায়ভার ইসির
বললেন এনসিপি নেতারা
প্রকাশ : ১০ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) শাপলা প্রতীক না দিলে দলটি নির্বাচন কমিশন (ইসি) নিবন্ধন নেবে না। এছাড়া আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেবে না দলটি। শাপলা প্রতীক না দেওয়া হলে ফেব্রুয়ারির নির্বাচন নিয়ে কিছু ঘটলে দায়ভার ইসিকে নিতে হবে বলে জানিয়েছে এসসিপি নেতারা। এ প্রতীক না দেওয়াকে নির্বাচন নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে মনে করছে দলটি। গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে দলটির নেতারা এসব কথা বলেন। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্যসমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা উপস্থিত ছিলেন। জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের সামনে দু’টো পথ খোলা আছে। শাপলা প্রতীক দিতে হবে। অন্যথায় প্রতীকের তালিকা থেকে ধানের শীষ, সোনালি আঁশ বাদ দিতে হবে। নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, শাপলার ব্যাপারে ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে। আশা করি, আমরা পাব। এটা না পাওয়ার ক্ষেত্রে আইনি প্রতিবদ্ধকতা পাইনি।
শাপলার ক্ষেত্রে অনড় নিয়ে তিনি বলেন, আমরা শাপলার ক্ষেত্রে অনড় আছি, অনড় থাকব। কারণ এটা অধিকার। আপনাদের মাধ্যমে একটা বিষয় আমরা জানান দিতে চাই, প্রতীক হিসেবে শাপলা দিতে আইনি প্রতিবন্ধকতা নেই। রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা নেই। কোথাও প্রতিবন্ধকতা নেই। তাহলে এটা করতে সমস্যা কোথায়? এবং আমরা তাদের আজকে বলেছি। তারা গত মিটিংয়ে আমাদের ডিজিএফআই-এর কিছু উদাহরণ দিয়েছিল, বিভিন্ন সংস্থার উদাহরণ দিয়েছিল, সেটাও আমরা আজকে বলেছি, যে আপনারা যদি কোথা থেকে প্রেসার ফিল করেন বা কেউ আপনাদের চাপ দিয়ে থাকে, আপনারা আমাদের জানান। আমরা আপনাদের সঙ্গে কোনো কিছু বলব না।
আমরা তাদের সঙ্গে রাজপথে মোকাবিলা করব। কোনো অদৃশ্য শক্তি পেছনে রেখে আপনি (ইসি সচিব) প্রেসারটা নিয়েন না। আপনি এমনি অসুস্থ মানুষ। আপনি এ ধরনের প্রেসার সহ্য করতে পারবেন না। তারপরে উনি চুপ ছিল। কিন্তু যেহেতু ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। আমরা ওনাদের বলে দিয়েছি যে, নিবন্ধন যদি আমাদের দিতে হয় এবং নিবন্ধন প্রশ্নে সেটা শাপলা দিয়েই হবে। শাপলা ছাড়া এনসিপির নিবন্ধন হবে না। এনসিপিও শাপলা ছাড়া নিবন্ধন মানবে না।
তিনি বলেন, আমরা আশা করি যে, আমাদের যারা ভাতৃপ্রতিম অন্যান্য রাজনৈতিক সংগঠন রয়েছে, আমরা তাদের সঙ্গেও এ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ, যে কারোটাই বাতিল, না হোক। সুতরাং আমরা শাপলা পেতে আইনি বাধা এবং রাজনৈতিক বাধা কোথাও দেখছি না। এজন্য আমরা আশাবাদী শাপলা পাব। সে বিষয়টা আমরা জানিয়ে এসেছি উনাদের। উনারা এ বিষয়ে নিশ্চুপ ছিলেন। উত্তর দিতে পারেননি। আমরা ধরে নেব যে, উনারা এটাতে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। যেটা আমরা বিয়ের ক্ষেত্রে দেখি সম্মতি প্রকাশ করে থাকে।
পাটওয়ারী আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান। আমাদের ব্যাখ্যা চেয়েছে, আমরা ব্যাখ্যা দিয়েছি। আমরা আজকে এসে উনাদের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছি, কেন শাপলা দেবেন না, উনারা দুই ঘণ্টা নিশ্চুপ থেকেছে। এমন কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান আছে বা কোথাও এ ধরনের চিত্র রয়েছে? এ ধরনের চিত্র এখানে আমরা পাচ্ছি যে, নির্বাচন কমিশনার বললেন, যে উনি নাকি মেন্টালি প্রস্তুত আগে যারা নির্বাচন কমিশনার ছিলেন তাদের মতো পরিস্থিতি বরণ করতে, তিনি মেন্টালি প্রস্তুত আছেন। এই ধরনের উদ্ভট কথাবার্তা এবং অনাকাঙ্ক্ষিত কথাবার্তা এবং উদ্ভট চিন্তা-ভাবনার যারা রয়েছেন- আমরা স্টিল উনাদের পদত্যাগ চাচ্ছি না।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, এনসিপি শাপলা ছাড়া নিবন্ধন নেবে না এবং শাপলা ছাড়া এনসিপির নিবন্ধন হবে না। আমরা শাপলার অবস্থানেই রয়েছি। শাপলা প্রতীক হিসেবে নিতে আইনি বা রাজনৈতিক বাধা নেই। অদৃশ্য শক্তির হাত রয়েছে। নির্বাচন কমিশন কোনো আইনি বা রাজনৈতিক ব্যাখ্যা দিতে পারেননি, কেন তারা দেবেন না শাপলা।
এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘৩১ অক্টোবরের মধ্যে যাদের ১৮ বছর হবে, তারা সংসদ নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন বলে ইসি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে আমরা ভোটের দিন যাদের বয়স ১৮ হবে, তারা যেন ভোট দিতে পারে সেটা বলেছি। প্রতীকসহ আরও কয়েকটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।’
এনসিপি যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম মুসা বলেন, ‘জাতীয় লীগের প্রধান একসময় বাকশালে যোগ দিয়েছিলেন।
৯১ সালে তার মৃত্যুর পর কী করে দলের ধারাবাকিতা থাকে? দলের গঠতন্ত্র নেই, অফিসের ঠিকানা ঠিক নেই। কী করে নিবন্ধন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এর জবাব কী দেবেন- এমনটা আমরা বলেছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এরই মধ্যে বিষয়টি রিভিউ করার জন্য ১০ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। যে অফিসার আগে ভুল বা মিথ্যা তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’
