শান্তিতে নোবেল মারিয়া কোরিনার

প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আলোকিত ডেস্ক

এ বছর শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভেনেজুয়েলার রাজনীতিবিদ ও মানবাধিকারকর্মী মারিয়া কোরিনা মাচাদো। গতকাল শুক্রবার নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি তার নাম ঘোষণা করে। কমিটি বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ভেনেজুয়েলার জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় অবিরাম প্রচেষ্টা এবং একনায়কতন্ত্র থেকে ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ গণতন্ত্রে উত্তরণের সংগ্রামের জন্য তিনি এই পুরস্কার পাচ্ছেন। ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়ে মারিয়া কোরিনা মাচাদো সাম্প্রতিক সময়ে লাতিন আমেরিকায় নাগরিক সাহস ও দৃঢ়তার এক অনন্য প্রতীক হয়ে উঠেছেন।

মাচাদোর জন্ম ১৯৬৭ সালে ভেনেজুয়েলায়। ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ফাইন্যান্সে পড়াশোনা শেষ করে কিছুদিন ব্যবসায় কাটান। ১৯৯২ সালে তিনি অ্যাথেনিয়া ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এটি কারাকাসের পথশিশুদের কল্যাণে কাজ করে। ২০১০ সালে তিনি জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হন, সর্বাধিক ভোটে জয়ী হয়ে রেকর্ড গড়েন। তবে ২০১৪ সালে স্বৈরশাসকরা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। তারপরও তিনি থামেননি।

মাচাদো বিরোধী দল ভেন্টে ভেনেজুয়েলার নেতৃত্বে রয়েছেন। ২০১৭ সালে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন সোই ভেনেজুয়েলা জোট, যা দেশের রাজনৈতিক বিভাজন অতিক্রম করে সব গণতন্ত্রপন্থী শক্তিকে একত্রিত করে। ২০২৩ সালে তিনি ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেন। প্রার্থিতা আটকে দিলে তিনি এডমান্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে সমর্থন জানান। বিরোধীরা তখন সারা দেশে সংগঠিত হয়। তারা ফল প্রত্যাখ্যান করে। কিন্তু স্বৈরশাসকেরা ক্ষমতা আঁকড়ে ধরে এবং চাপ বাড়িয়ে দেয়। মাচাদো এই নোবেল শান্তি পুরস্কার পাচ্ছেন মূলত ভেনেজুয়েলায় গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু তিনি শুধু তার দেশকেই নয়, বরং বিশ্বকে মনে করিয়ে দেন যে গণতন্ত্রের অধিকার- মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ভোটাধিকার এবং নির্বাচিত সরকারের প্রতিনিধিত্ব- সেটিই সত্যিকারের শান্তির ভিত্তি।

ট্রাম্প কেন নোবেল পেলেন না, জানাল নোবেল কমিটি : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবারের নোবেল পাওয়ার ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। প্রকাশ্যে একাধিকবার তিনি নোবেলের কথা বলেছেন। মারিয়া কোরিনা মাচাদো নোবেল জেতার পর এক সাংবাদিক নোবেল কমিটিকে ট্রাম্পের ব্যাপারে প্রশ্ন করেছিলেন। তিনি জিজ্ঞেস করেন, ট্রাম্পকে নোবেল দিতে ট্রাম্পের নিজের কাছ থেকে এবং বিশ্বের অন্যান্য যেসব জায়গা থেকে চাপ এসেছিল, সেই চাপ তাদের পুরস্কার ঘোষণায় কোনো প্রভাব ফেলেছে কি না। জবাবে নোবেল শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান জোর্গেন ওয়াটনে ফ্রায়ডেন্স বলেছেন, ‘দীর্ঘ ইতিহাসে নোবেল কমিটি এ ধরনের ক্যাম্পেইন ও মিডিয়ার উত্তেজনা দেখেছে। এছাড়া নোবেল কমিটির কাছে প্রতি বছর হাজার হাজার চিঠি আসে। কিন্তু নোবেল শুধুমাত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত ব্যক্তির কাজের ওপর নির্ভর করে এবং আলফ্রেড নোবেলের করা উইল অনুযায়ী দেওয়া হয়।’

এদিকে নোবেল নিয়ে নিজের সর্বশেষ বক্তব্যে ট্রাম্প বলেছিলেন, বিশ্বব্যাপী তিনি ৮টি যুদ্ধ বন্ধ করেছেন। তাই তারই নোবেল পাওয়ার উচিত। তিনি বলেন, ‘ওবামা নোবেল পেয়েছে কিছু না করে। তিনি পুরস্কার পেয়েছেন, কিন্তু তিনি জানেনও না কেন তাকে পুরস্কারের জন্য নির্বাচিত করা হয়েছে। ওবামা আমাদের দেশ ধ্বংস ছাড়া আর কিছু করেনি।’ ট্রাম্প আরও বলেন, ‘আমি ৮টি যুদ্ধ বন্ধ করেছি। এমন কিছু আগে কখনো হয়নি। (নোবেল কমিটির) যা করা উচিত এখন তাই করতে হবে। তারা যাই করে ঠিক আছে। আমি জানি আমি নোবেল জন্য যুদ্ধ বন্ধ করিনি। আমি যুদ্ধ বন্ধ করেছি... আমি অনেক মানুষের জীবন রক্ষা করেছি।’