পশ্চিমতীর অধিগ্রহণ করলে মার্কিন সহায়তা হারাবে ইসরায়েল
প্রকাশ : ২৪ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর অধিগ্রহণ করলে দখলদার ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের সব সহায়তা হারাবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত ১৫ অক্টোবর টাইম ম্যাগাজিনের সঙ্গে একটি সাক্ষাৎকার দেন ট্রাম্প। সেখানে তাকে পশ্চিমতীর নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি এমন হুঁশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকারটি প্রচার করেছে টাইম ম্যাগাজিন। এতে দেখা গেছে প্রশ্নকর্তা ট্রাম্পকে জিজ্ঞেস করছেন, ইসরায়েলি সরকারের উগ্রপন্থিরা পুরো পশ্চিমতীর অধিগ্রহণের জন্য চাপ দিচ্ছেন।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘এটি হবে না। এটি হবে না। এটি হবে না কারণ আমি আরব দেশগুলোকে কথা দিয়েছি। আমাদের প্রতি আরবদের অনেক সমর্থন রয়েছে। ইসরায়েল পশ্চিমতীর অধিগ্রহণ করতে পারবে না কারণ আমি আরবদের কথা দিয়েছি। যদি ইসরায়েল এমন কিছু করে থাকে তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সব সমর্থন হারাবে তারা।’
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের শর্ত দিলে সৌদি আরবের সঙ্গে ইসরায়েল কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে না বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলি অর্থমন্ত্রী বাজায়েল স্মোরিচ।
বৃহস্পতিবার এক অনুষ্ঠানে এ দখলদার বলেন, ‘যদি সৌদি আরব আমাদের বলে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের বদলে তারা আমাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করবে। আমি বলব, বন্ধুরা— না ধন্যবাদ। সৌদি আরবের মরুভূমিতে উটে চড়া অব্যাহত রাখুন।’
সৌদি আরবের নেতাদের নিয়ে স্মোরিচের এমন মন্তব্যে সমালোচনা শুরু হয়েছে। তিনি এমন সময় এসব কথা বললেন যখন আগামী মাসে সৌদির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান যুক্তরাষ্ট্রে সফরে যাবেন বলে শোনা যাচ্ছে।
তার এ সফলে দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে সৌদির কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ব্যাপারে আলোচনা হতে পারে। যদিও সৌদি স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যে যখন স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠিত হবে ঠিক তখন ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দেবে তারা। এরআগে ইসরায়েলের সঙ্গে কোনো ধরনের সম্পর্ক হবে না।
ইসরায়েল আমেরিকার আশ্রিত রাজ্য নয় -নেতানিয়াহু : ইসরায়েল আমেরিকার কোনো আশ্রিত রাজ্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তার দাবি, তার দেশ নিজেই নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম। গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা নিয়ে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্সের সঙ্গে বৈঠকের আগে একথা বলেন তিনি। গত বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম টিআরটি ওয়ার্ল্ড।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যকে গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনীর বিষয়ে ইসরায়েলের আপত্তি হিসেবে দেখা হচ্ছে। আর ওই পরিকল্পনা এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পক্ষ থেকে। গত বুধবার নিজ কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা যুক্তরাষ্ট্রের কোনো প্রটেক্টরেট (আশ্রিত রাজ্য) নই। ইসরায়েল নিজেই নিজের নিরাপত্তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।’
এদিকে নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট ভ্যান্স স্বীকার করেন, শান্তির পথে এখনো অনেক বড় বাধা রয়ে গেছে। বৈঠক শেষে নেতানিয়াহু ও ভ্যান্স একসঙ্গে বলেন, ইসরায়েল কোনো “মার্কিন ক্লায়েন্ট রাষ্ট্র” নয়। বরং ওয়াশিংটনের গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব রয়েছে।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘আমরা ইসরায়েলে কোনো ভাসাল (কারও অধীনস্ত বা নিয়ন্ত্রিত) রাষ্ট্র চাই না, আর ইসরায়েল তেমন কিছু নয়ও। আমরা চাই অংশীদারিত্ব, মিত্র।’ তিনি আরও বলেন, ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের নির্দেশে কাজ করছে বলে যে ধারণা রয়েছে তা ভুল। নেতানিয়াহু বলেন, ‘এক সপ্তাহ বলা হয় ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করে, পরের সপ্তাহে বলা হয় যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, দুটোই বাজে কথা।’
এদিকে ইসরায়েল সরকার জানিয়েছে, শুক্রবার (আজ) মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও ইসরায়েল সফর করবেন এবং নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠক করবেন।
