বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ
মনোনয়নবঞ্চিতদের ‘সম্মানিত’ করার আশ্বাস বিএনপির
* সীতাকুণ্ডে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের চার নেতাকে বহিষ্কার * নলতায় হরতাল-অবরোধ * ঘাটাইলে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ * মনোনয়ন না পাওয়ায় ফরিদগঞ্জে আগুন জালিয়ে সড়ক অবরোধ টেকনাফে প্রতীকী কলাগাছ রোপণ করে প্রতিবাদ
প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আমিরুল ইসলাম অমর

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ২৩৭ আসনে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা ঘোষণা করেছে বিএনপি। গত সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত বিএনপি চেয়ারপার্সনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণার আগে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির বৈঠক হয়। সেখানে দলীয় প্রার্থীদের নামের প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত করা হয়। এ সময় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘দীর্ঘ ১৬ বছর পরে আগামী ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আমরা জাতীয় সংসদের নির্বাচন পেতে যাচ্ছি। আমরা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য দীর্ঘ ১৫ বছর সংগ্রাম ও লড়াই করেছি।’ তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রে উত্তরণের পথকে সুগম করার জন্য এবং আগামী আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের সব ইউনিট এরইমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তারই ধারাবাহিকতায় আমরা দেশের ২৩৭টি আসনে আমাদের সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছি।’
প্রার্থীদের নাম ঘোষণার পরপরই কয়েকজনকে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। দেশের কয়েকটি আসনে মনোনয়নবঞ্চিতদের সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল, সড়ক অবরোধ ও হরতাল পালন করেছে। এরইমধ্যে এসব ঘটনায় কয়েকজনকে দল থেকে বহিস্কারও করা হয়েছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা মনোনয়ন পাননি, বিশ্বাস রাখুন, দল তাদের যথাযথ দায়িত্ব ও সম্মান দেবে।
সীতাকুণ্ডে স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের চার নেতাকে বহিষ্কার : এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য গত সোমবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ২৩৭ আসনে দলীয় প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের নাম ঘোষণা করা হয়। বাদ পড়েন কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরী। সন্ধ্যা সাতটার দিকে এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ভাটিয়ারী, সলিমপুরসহ বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। রাত নয়টার দিকে ভাটিয়ারী রেলস্টেশন এলাকায় রেললাইনের ওপর কাঠের স্লিপার তুলে আগুন ধরিয়ে দেন। ফলে রেল চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এই সময় তারা নানা রকম স্লোগান দিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। রাত ১১টার দিকে আসলাম চৌধুরীর পক্ষে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়ার পর বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও রেলপথ থেকে ছেড়ে দেন। ফলে দীর্ঘ চার ঘণ্টা আটকে থাকা যানবাহন ও ট্রেন চলাচল শুরু হয়।
এ ঘটনার পর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল ও যুবদলের চার নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলটির সাবেক যুগ্ম মহাসচিব আসলাম চৌধুরীর মনোনয়ন না পাওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ ও টায়ারে অগ্নিসংযোগ করার ঘটনার পর এ সিদ্ধান্ত এলো। রাতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তিটি বিএনপির মিডিয়া সেলের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট দেওয়া হয়। বহিষ্কৃত নেতারা হলেন- সীতাকুণ্ড উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আলাউদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক হেলাল উদ্দিন বাবর, সীতাকুণ্ড পৌরসভার আহ্বায়ক মো. মামুন, যুবদলের সোনাইছড়ীর সাধারণ সম্পাদক মমিন উদ্দিন। বিএনপির মিডিয়া সেলের ফেসবুক পেজের পোস্টে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, গত সোমবার সন্ধ্যার পরে দলীয় মনোনয়নকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সীতাকুণ্ডে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কদমরসুল, ভাটিয়ারী বাজার, জলিল গেট এলাকায় সহিংসতা, হানাহানি ও রাস্তা অবরোধসহ নানাবিধ জনস্বার্থবিরোধী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়ায় ওই চার নেতাকে প্রাথমিক সদস্যসহ সব পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
টাঙ্গাইলে মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে টায়ার জ্বালিয়ে মহাসড়ক অবরোধ : টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে বিএনপির মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে অগ্নিসংযোগ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন দলটির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা লুৎফর রহমান আজাদের সমর্থকরা। এ সময় তারা আজাদকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবিও জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার কলেজ মোড় চত্বরে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি করেন তারা। এতে এক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ ছিল। ফলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় ওই সড়কে। বিক্ষোভ কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন ধলা, পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহিদসহ অঙ্গসংগঠনে নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা বলেন, টাঙ্গাইল-৩ আসন থেকে কেন্দ্রীয় বিএনপি ওবায়দুল হক নাসিরকে মনোনয়ন দিয়েছে। কিন্তু নাসিরের বাসা ঘাটাইলে নয়। ঘাটাইলের সাবেক এমপি ও মন্ত্রী লুৎফর রহমান খান আজাদ দীর্ঘদিন ধরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে কাজ করছেন। কিন্তু আজাদকে মনোনয়ন না দিয়ে নাসিরকে দেওয়া হয়েছে। আমরা তা মানি না, কখনও মানবো না। দ্রুতই নাসিরের মনোনয়ন বাতিল করে আজাদকে দেওয়ার দাবি করছি।
সাতক্ষীরায় মনোনয়ন না পেয়ে বিএনপি নেতার হরতাল-অবরোধ : সাতক্ষীরা-৩ (কালিগঞ্জ-আশাশুনি) আসনে কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য ডা. শহিদুল আলম মনোনয়ন না পাওয়ায় সাতক্ষীরার নলতায় মঙ্গলবার অর্ধ-দিবস হরতাল ও সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেছে তার কর্মী-সমর্থকরা। নলতা হাসপাতাল মোড়ে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১১টায় সড়ক অবরোধ করে তারা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করে। তবে ঘণ্টাব্যাপী সড়ক অবরোধে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয় সাতক্ষীরা-মুন্সিগঞ্জ সড়কে। এ সময় বন্ধ ছিল নলতা বাজারের দোকাপাট। এতে জনভোগান্তি চরমে উঠে।
নলতা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কিসমাতুল বারীর সভাপতিত্বে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সদস্য শেখ নুরুজ্জামান, উপজেলা বিএনপির সাবেক ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক বিষ্ণুপুর ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম, নলতা ইউপি চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান পাড়, বিএনপি নেতা এসএম হাফিজুর রহমান বাবুসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা। প্রতিবাদ সভায় বক্তারা সাতক্ষীরা-৩ আসনের জন্য ঘোষিত কাজী আলাউদ্দীনের মনোনয়ন বাতিল করে ডা. শহিদুল আলমকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান। অন্যথায় আজ বিকালে কালিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশসহ আগামী দিনে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার ঘোষণা দেন নেতারা।
এছাড়া বক্তারা ডা. শহিদুল আলমকে মনোনয়ন না দিলে আসনটি বিএনপি নিশ্চিতভাবে হারাবে বলে কেন্দ্রীয় নেতাদেরকে হুশিয়ার করেন। এসব কর্মসূচিতে সাধারণ জনগণের পাশাপাশি অনেক নারীকেও অংশগ্রহণ করতে দেখা গেছে। এছাড়া নলতা ও কালিবাড়িসহ এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় সব ব্যবসাসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠান অর্ধ-দিবস বন্ধ থাকতে দেখা যায়।
কক্সবাজারে বিএনপির মনোনয়নবঞ্চিত সমর্থকদের প্রতীকী কলাগাছ রোপণ করে প্রতিবাদ : কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় বিক্ষোভ করেছেন জেলা বিএনপির অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আবদুল্লাহর সমর্থকেরা। টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের পাশাপাশি প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে তারা সড়কের পাশে কলাগাছ রোপণ করেন। গত সোমবার বিএনপি ২৩৭টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করে। এতে কক্সবাজার-৪ আসনে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর নাম না থাকায় তার সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এরপর দিবাগত রাত ১টা থেকে গতকাল মঙ্গলবার ভোর সকাল ৪টা পর্যন্ত টেকনাফ পৌর শহরের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন তারা।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা ‘অবৈধ মনোনয়ন মানি না, মানব না’-এমন স্লোগান দেন। টেকনাফ পৌরসভার শাপলা চত্বর, বাস স্টেশন, পুরাতন বাজার, হোয়াইক্যং মোড় এলাকায় কয়েকটি স্থানে প্রতীকী প্রতিবাদ হিসেবে কলাগাছ রোপণ করেন তারা। অন্যদিকে মোহাম্মদ আবদুল্লাহর ছোট ভাই ও টেকনাফ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিহাদ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে নেতাকর্মীদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। সবাইকে ধৈর্য ধরে দলের প্রতি আনুগত্য বজায় রাখতে হবে।
মনোনয়ন না পাওয়ায় ফরিদগঞ্জে আগুন জালিয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের সড়ক অবরোধ : চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এমএ হান্নান দলীয় মনোনয়ন না পাওয়ায় সড়কে আগুন জালিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছে নেতাকর্মীরা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড ফরিদগঞ্জ-রায়পুর সড়কে এমএ হান্নান সমর্থিত নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধ করে রাখে। পরে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে তাদেরকে শান্ত করার চেষ্টা করে। সকাল থেকেই ফরিদগঞ্জ পৌর বিএনপি ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা বাসস্ট্যান্ডে ঝড়ো হন। সেখানে তারা টায়ারে আগুন দিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে। ওই সময় তারা মনোনয়ন পাওয়া লায়ন মো. হারুনুর রশিদের বিলবোর্ড ভাঙচুর করে আগুন জালিয়ে দেয়। যার ফলে আঞ্চলিক সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এসব বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয়- উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক পৌর মেয়র মঞ্জিল হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক আমির হোসেন খসরু মোল্লা ও নজরুল ইসলাম পাটোয়ারী, পৌর বিএনপির সভাপতি আমানত গাজী, উপজেলা যুবদলের সভাপতি আমজাদ হোসেন শিপন, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্টু, পৌর যুবদলের সভাপতি ইমাম হোসেন পাটোয়ারী, সাধারণ সম্পাদক আমিন মিজি, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আক্তার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মেহেদী হাসান মঞ্জুর, সাধারণ সম্পাদক আবু ইউসুফ চৌধুরী শাওন, পৌর ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন শিবলুসহ প্রায় ৫ শতাধিক নেতাকর্মী।
এ সময় বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও সাবেক মেয়র মঞ্জিল হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি আমানত গাজী, উপজেলা যুবদলের সভাপতি আমজাদ হোসেন শিপন, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম নান্টু, সিনিয়র সহ-সভাপতি ফারুক খান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম। তারা বলেন, আমাদের প্রিয় নেতা ও দুর্দিনের সাহসী সংগঠক এমএ হান্নানকে দল মনোনয়ন না দেওয়ায় তৃণমূল নেতাকর্মীরা হতাশ। আমরা চাই কেন্দ্রীয় নেতারা আমাদের দাবির প্রতি সম্মান দেখিয়ে তাকেই পুনরায় মনোনয়ন প্রদান করবেন। তারা আরও বলেন, দলীয় মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে আলহাজ্ব এমএ হান্নানকে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ঘোষণা না করা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। এদিকে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন পেয়ে সাবেক সংসদ সদস্য লায়ন মো. হারুনুর রশিদের সমর্থিত নেতাকর্মীরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে গত সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে একই স্থানে বিলবোর্ড ও টায়ারে আগুন এবং সড়ক অবরোধ করে এ বিক্ষোভ শুরু করে এমএ হান্নানের সমর্থকরা। পরে তারা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে থানার মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে।
যারা মনোনয়ন পাননি, দল তাদের যথাযথ দায়িত্ব-সম্মান দেবে- মির্জা ফখরুল : আসন্ন ত্রয়োদশ নির্বাচন ঘিরে মনোনয়ন তালিকা দিয়েছে বিএনপি। দলটি ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, যারা মনোনয়ন পাননি, বিশ্বাস রাখুন, দল তাদের যথাযথ দায়িত্ব ও সম্মান দেবে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে এমনটি বলেন তিনি। পোস্টে বিএনপি মহাসচিব লেখেন, বিএনপি আমাকে ঠাকুরগাঁও ১ আসনে মনোনীত করেছে। আমি বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমান, এবং সব নেতা-নেত্রীকে আমার কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানাই। দলের সব কর্মীকে জানাই আমার আন্তরিক ধন্যবাদ, আজীবন আমার সঙ্গে থাকার জন্য।
মির্জা ফখরুল লেখেন, আমরা যারা সারাজীবন রাজনীতি করেছি, জেলে গিয়েছি, আমাদের নিজেদের একটা গল্প থাকে...গল্পগুলো অন্য কোনো দিন বলব যদি আল্লাহ চান। এরকম গল্প আমাদের হাজার হাজার নেতাকর্মীর আছে। তিনি লেখেন, এই নির্বাচন হয়তো আমার শেষ নির্বাচন। যারা মনোনয়ন পাননি, বিশ্বাস রাখুন, ইনশাআল্লাহ দল আপনাদের যথাযথ দায়িত্ব ও সম্মান দেবে। আপনারা সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন, আমাদের দলের প্রত্যেক নেতাকর্মীর জন্য দোয়া করবেন। ‘আমরা সবাই মিলে আপনাদের পাশে থাকব এবং কাজ করব, ইনশাআল্লাহ। বিএনপির সেই যোগ্যতা আছে দেশকে মর্যাদার সঙ্গে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। ইনশাআল্লাহ! আপনারা পাশে থাকবেন।’
এর আগে গত রোববার দলীয় এক কর্মসূচিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যারা ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে আমাদের সঙ্গে রাজপথের সঙ্গী ছিলেন এমন প্রার্থীকেও বিএনপি সমর্থন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই বাস্তবতার কারণে হয়তো কিছু সংসদীয় সংসদীয় আসনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন বঞ্চিত হবেন। বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মী সমর্থকদের কাছে আমাদের প্রত্যাশা দেশ এবং জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে আপনারা এই বাস্তবতাটিকে মেনে নিবেন দয়া করে। দলের সিদ্ধান্তকেই চূড়ান্ত হিসেবে গণ্য করবেন।
