এককভাবে নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছি, ৩০০ আসনই লক্ষ্য
জানালেন নাহিদ ইসলাম
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা এককভাবে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। সে লক্ষ্যে সব কটি আসনেই শাপলা কলির জন্য প্রার্থী দেওয়ার কাজ করছি। সমঝোতা বা জোট রাজনৈতিক বা আদর্শিক জায়গা থেকে হতে পারে। জুলাই সনদ ও আমাদের সংস্কারের দাবিগুলোর সঙ্গে যদি কোনো দল ঐক্যবদ্ধ বা সংহতি প্রকাশ করে, সে ক্ষেত্রে জোটের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে। কিন্তু আমরা এখন পর্যন্ত এককভাবেই এগোচ্ছি।’ গতকাল বুধবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ২ নম্বর ঢাকেশ্বরী এলাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন নাহিদ ইসলাম। এর আগে তিনি সেখানে জুলাই আন্দোলনে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিহত গার্মেন্টসের নিরাপত্তাকর্মী গাজী সালাউদ্দিনের পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সর্বাধিক আসনে এনসিপির প্রার্থী দেওয়ার কথা জানিয়ে নাহিদ ইসলাম বলেন, ফ্যাসিবাদবিরোধী ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য মনোনীত আসনগুলোয় হয়তো কোনো প্রার্থী দেওয়া হবে না। এনসিপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বাচনের সংস্কৃতিতে দেখেছি, যাদের টাকা আছে, গডফাদারগিরি করে, তারাই নির্বাচনে দাঁড়ায়। আমরা সেই সংস্কৃতিকে চ্যালেঞ্জ করতে চাই। এলাকার যার গ্রহণযোগ্যতা আছে, সাধারণ মানুষের পাশে পাওয়া যায় যাকে, এমন খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে এলাকার শিক্ষক, ইমাম ও গ্রহণযোগ্য কাউকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চাই। আমরা সেই উদ্দেশ্যে কাজ করছি।’
এনসিপির আরেক নেতা নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এনসিপির প্রাথমিক প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। শাপলা কলি প্রতীকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। জুলাই আন্দোলনে আহত গাজী সালাউদ্দিনের মৃত্যু প্রসঙ্গে নাহিদ ইসলাম বলেন, তিনি আন্দোলনের সাহসী সৈনিক ছিলেন। গত বছরের ১৯ জুলাই জালকুড়ি এলাকায় গুলিতে আহত হয়ে গলায় স্প্লিন্টারবিদ্ধ ও তার একটি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আহত যোদ্ধাদের যে চিকিৎসা দেওয়ার কথা ছিল, তারা যথাযথভাবে সেই দায়িত্ব পালন করতে পারেনি। ফলে এখনো অনেকেই কষ্টে আছেন, লাশের সারি বাড়ছে। তিনি বলেন, আহত ব্যক্তিদের দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল আমিন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আহমেদুর রহমানসহ অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা গাজী সালাউদ্দিনের কবর জিয়ারত করেন।
কোনও দলের কাছে আসন বা মন্ত্রিসভার সদস্য পদ চায়নি এনসিপি : এদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলেছে, কোনও দলের কাছে আসন বা মন্ত্রিসভায় অংশগ্রহণের দাবি তোলেনি এনসিপি। বরং জনগণের আস্থায় একটি বাংলাদেশপন্থি, দায়িত্বশীল ও স্বতন্ত্র রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এতে উল্লেখ করা হয়, ৫ নভেম্বর একটি জাতীয় দৈনিকে ‘বিএনপির কাছে ২০ আসন চায় এনসিপি, চায় মন্ত্রিসভায়ও হিস্যা’ শিরোনামের প্রতিবেদনে বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা ও মন্ত্রিসভায় হিস্যা চাওয়ার খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এনসিপি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে জোট, আসন সমঝোতা বা ক্ষমতা ভাগাভাগি বিষয়ে কোনও আলোচনা বা সিদ্ধান্ত নেয়নি। এমন কোনও প্রস্তাবও দলের নীতি নির্ধারণী পর্ষদে কখনও গৃহীত হয়নি। এনসিপি বিশ্বাস করে, দেশের ভবিষ্যৎ রাজনীতি হবে জনগণের অধিকার, জবাবদিহি, সংস্কার ও গণতান্ত্রিক পুনর্গঠনের রাজনীতি। সে লক্ষ্যেই দলটি সারা দেশে সাংগঠনিক প্রস্তুতি ও প্রার্থী যাচাই প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেদনে উল্লিখিত তথাকথিত ‘সূত্র’ সম্পূর্ণ অনুমাননির্ভর এবং সাংবাদিকতার মৌলিক নীতির পরিপন্থি। এতে জনগণ বিভ্রান্ত হয়েছে এবং দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তাই অবিলম্বে এ ধরনের প্রতিবেদনের জন্য প্রকাশ্যে দুঃখপ্রকাশ ও সংশোধনী দেওয়ার আহ্বান জানায় এনসিপি।
