খাগড়াছড়িতে পর্যটকদের ভ্রমণ নিরাপদ
প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নুরুচ্ছাফা মানিক, খাগড়াছড়ি

পাহাড়, ঝরনা, নদী ও রহস্যময় সুড়ঙ্গ পথের মায়া ঘেরা পাহাড়ি জনপদ খাগড়াছড়ি। স্রষ্টা তার আপন মহীমায় সাজিয়েছেন পাহাড়ী কন্যা খ্যাত এ জেলাকে। পার্বত্য চট্টগ্রামের অন্য দুই জেলা রাঙ্গামাটি ও বান্দরবানে প্রায় সময় পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহীত করা হলেও খাগড়াছড়ি সেক্ষেত্রে ভিন্ন। এখানকার স্থানীয় অধিবাসীরাও পর্যটকবান্ধব। তবে বলে রাখা ভালো সরকার নির্ধারিত পর্যটন কেন্দ্রের বাইরে স্থানীয় অধিবাসীদের গ্রামে গিয়ে অযথা ঘোরাঘুরি না করা ভালো। এ বার আসা যাক, এ জেলার পর্যটনকেন্দ্র পরিচিতির দিকে। খাগড়াছড়ি জেলার সবচেয়ে প্রাচীন ও জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যের নাম আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। এ আলুটিলার রহস্যঘেরা সুড়ঙ্গ পথ পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের মাঝে অন্যরকম অ্যাডভেঞ্চার দেয়। ২০১৯ সালের আগ পর্যন্ত এ সুড়ঙ্গ পথে মশাল হাতে প্রবেশের অনুমতি থাকলেও পরিবেশ সুরক্ষায় তা এখন নিষিদ্ধ। এ সুড়ঙ্গ পথ ঘিরে অনেক রহস্য থাকলেও কখনও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর শোনা যায়নি। আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্রে রহস্যময় সুড়ঙ্গ পথ ছাড়াও আছে নন্দনকানন, অ্যাম্ফিথিয়েটার ও বেশ কয়েকটি ভিউ পয়েন্ট। যেখান থেকে অদূরের খাগড়াছড়ি জেলা শহরের পাখির চোখের দৃশ্য দেখে যে কারও মন উৎফুল্ল হয়ে উঠে। বর্ষা ও শীত এ সময় গুলোতে ভিন্ন ভিন্ন রূপে ধরা দেয় আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসন পরিচালিত এ কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ নিরাপদ।
রিছাং ঝরনা হচ্ছে খাগড়াছড়ির সর্বপ্রথম আবিস্কৃত পাহাড়ী ঝরনা। যেটির ব্যবস্থাপনা খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের। বর্ষায় ভয়াল রূপে দেখা দেয় রিছাং ঝররা। ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠী অধ্যুষিত গ্রামে এ ঝরনার অবস্থান। ঝর্ণায় আগত পর্যটক ও দর্শণার্থীদের ওপর নির্ভর করে ওই গ্রামের অনেক অধিবাসীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। বর্ষাকালে ঝরনার পানিতে গোসলে নেমে কিংবা হাঁটতে গিয়ে ছোট বড় দুর্ঘটনা ছাড়া নিরাপত্তাজনিত অন্য কোন ইস্যু নেই।
মানিকছড়ি ডিসি অ্যাডভেঞ্চার পার্ক হলো ট্রাকিং প্রিয়দের অন্যতম গন্তব্য। শত একর জায়গা জুড়ে গড়ে উঠা এ কেন্দ্রে নানা রকম এক্টিভিটিষ্ট করার সুযোগ রয়েছে। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কটি সরকারি একটি বিনোদন কেন্দ্র। ঝুলন্ত সেতু, শিশু পার্ক, কৃত্রিম লেকসহ নানা রকম ইভেন্ট করার সুযোগ আছে এ পার্কে।
মায়াবিনী পার্ক বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় খাগড়াছড়ির প্রথম বিনোদনকেন্দ্র। জেলা সদর ও পানছড়ি উপজেলার সীমান্তবর্তী ভাইবোন ইউনিয়নের কাংচারী পাড়ায় অবস্থিত এটি। মারমা সম্প্রদায়ের যুবদের উদ্যোগে এ পার্ক স্থাপন করা হয়। মায়াবিনী লেকে কায়াকিং, পেডল বোড রাইডিংসহ পিকনিকের সুযোগ রয়েছে। খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, খাগড়াছড়িতে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক ভ্রমণে আসেন। তাদের নিরাপত্তায় ট্যুরিষ্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। সরকার ঘোষিত পর্যটন কেন্দ্র গুলোর বাইরে পর্যটকদের না যেতে বলা হলেও অনেকে স্থানীয় গাইডদের মাধ্যমে ভ্রমণ করে থাকেন।
