ঢাকার চারপাশে বিজিবি মোতায়েন

নাশকতা ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় সরকার

* সড়কে ব্যক্তিগত গাড়ি কম * নাশকতার শঙ্কায় রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও থানাগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার * লকডাউন নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই : ডিবিপ্রধান * বাসচালককে পুড়িয়ে হত্যায় সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার * ককটেলসহ আটক ১, ঢাকায় গ্রেপ্তার আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ৪৪ জন * চট্টগ্রামে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুলের বাসায় অভিযান, সাতজন আটক

প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

বেশকিছু দিন ধরে রাজনীতি ঢাকা থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্নস্থানে বাসে অগ্নিসংযোগ, গুলিতে মানুষ হত্যা, ককটেল বিস্ফোরণ ও নাশকতাসহ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড বেড়েছে। অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সর্বোচ্চ চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। আজ বৃহস্পতিবার কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ঢাকায় ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। ঘোষিত কর্মসূচি কেন্দ্র করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও চোরাগোপ্তা ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এর প্রভাব পড়েছে সড়কে যানবাহন চলাচলে। অন্য সাধারণ দিনের তুলনায় গতকাল বুধবার ঢাকার সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ি চলাচল কিছুটা কম।

গত দুদিন গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও চোরাগোপ্তা ককটেল বিস্ফোরণে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যদিও এসব নাশকতা ঠেকাতে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার। তবে এ অবস্থায় অনেকে ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে বের হওয়া এড়িয়ে চলছেন। তবে অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে- মোটরসাইকেল, রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল। অন্য সময়ের মতো ভিআইপি সড়কে গতকাল রিকশা চলাচল করতে দেখা গেছে। সড়কে বাস চলাচলও স্বাভাবিক।

সরেজমিন গতকাল রাজধানীর যাত্রাবাড়ী, শনিরআখড়া, গুলিস্তান, মিরপুর, ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, মিন্টো রোড ও হাতিরঝিল এলাকা ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। তেজগাঁও লাভরোডে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়, যাদের চলাচলে সন্দেহ হচ্ছে, তাদের ব্যাগ চেক করছেন পুলিশ সদস্যরা। এসব এলাকায় গত কয়েকদিনের তুলনায় গতকাল প্রাইভেটকারের চলাচল তুলনামূলক কম।

সড়কে দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, যানবাহনে আগুন ও বিভিন্ন এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় ব্যক্তিগত গাড়ি কম বের হয়েছে।

কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ডাকা ‘লকডাউন’ কর্মসূচি ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। রাস্তাঘাটে কোনো ব্যক্তি নাশকতা করতে পারেন, এমন সন্দেহ হলেই তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বাড়তি পুলিশ মোতায়েন দেখা গেছে। কিছু চেকপোস্টে গাড়ি তল্লাশি করতেও দেখা গেছে।

রাজধানীর লালবাগ, আজিমপুর, নিউমার্কেট ও ধানমন্ডি এলাকায় তুলনামূলক গাড়ির সংখ্যা কম দেখা গেছে। তবে নিউমার্কেট খোলা থাকায় মার্কেটের সামনের সড়কে কিছু গাড়ির জটলা দেখা গেছে। মোটরসাইকেল চালক মুসা মল্লিক বলেন, অনেকে নিজের গাড়ি রেখে গণপরিবহনে চলাচল করছেন। রাস্তাঘাটে লোকজনও কম মনে হচ্ছে। বিজয় নামের একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক বলেন, গতকাল (বুধবার) যানজট কম। লোকজন কম সবখানে। মানুষ আতঙ্কে আছে। জরুরি প্রয়োজন না হলে খুব একটা বের হচ্ছে না। আজ (বৃহস্পতিবার) এমন হবে বলে মনে হচ্ছে।

রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও থানাগুলোয় নিরাপত্তা জোরদার : কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত লকডাউন কর্মসূচি কেন্দ্র করে রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও থানাগুলোয় নিরাপত্তা জোরদার করেছে প্রশাসন। যদিও ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই কর্মসূচিকে ঘিরে কোনো ধরনের নিরাপত্তা হুমকি নেই। গত কয়েক দিনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে ঢাকায় অবস্থিত রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে, ডিএমপির ৫০টি থানায় অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল, সুপ্রিম কোর্ট, সচিবালয়সহ প্রধান প্রধান সরকারি অফিসগুলোতে পুলিশের পাশাপাশি পর্যাপ্ত সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করছেন।

বিশেষ নজর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে : বিশেষ নজর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরসহ সম্পূর্ণ ধানমন্ডি এলাকায়। কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে কোনো ধরনের নাশকতার ঘটনা যেন না ঘটতে পারে, সেজন্য গত দুই দিন ধরেই সেখানে পুলিশের ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। সন্দেহজনক যান চলাচল দেখলে পুলিশ ব্যারিকেডে আটকে তল্লাশি করছে।

এ বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর বর্তমান নিরাপত্তাব্যবস্থা ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ একটি দলের বৃহস্পতিবার কর্মসূচি কেন্দ্র করে সরকারি গুরুত্বপূর্ণ অফিসগুলোতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নাশকতার শঙ্কায় রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে শুরু করে প্রতিটি থানার সামনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৮ থেকে ১০ জন করে অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

রমনা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় গত কয়েক দিন ধরে রমনা থানায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। শুধু থানায় নয়, রমনা থানার অধীনে যেসব এলাকা আছে, সেসব এলাকায়ও নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।

ডিএমপির শাহবাগ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, থানার সামনে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েনের বিষয়টি স্বাভাবিক নিরাপত্তা কার্যক্রম। এছাড়া, শাহবাগ থানা এলাকায় প্রায়ই দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংঘটিত হয়। এসব বিষয় এবং বর্তমান পরিস্থিতি মাথায় রেখে বাড়তি পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, বর্তমান আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।

বিজিবি মোতায়েন : বিজিবি সদর দপ্তরের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. শরীফুল ইসলাম জানান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা, নায়ারণগঞ্জ ও গাজীপুরে বিজিবির (বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ) ১৪ প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

লকডাউন নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই- ডিবিপ্রধান : বুধবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ১৩ নভেম্বরের লকডাউন নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। তিনি বলেন, যারা ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি বা অপতৎপরতার চেষ্টা করছে, আইনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তাদের দমন করা হবে। ডিবিপ্রধান বলেন, আমরা রাজধানীতে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালনাকারীদের পাশাপাশি তাদের নেপথ্যে যারা রয়েছে, তাদেরও গ্রেপ্তার করছি। গতকাল ৪৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শফিকুল ইসলাম বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় যারা বিভিন্ন উসকানি ও নির্দেশনা দিচ্ছে, তাদের বিষয়ে ডিবি সতর্ক রয়েছে। আমরা দেখছি, সোশ্যাল মিডিয়াতে বিভিন্ন উসকানি ও নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে, তবে রাজপথে তাদের দেখা যায় না। এমনকি একজন নিরীহ রিকশাওয়ালাকে ৫০০ টাকা দিয়ে স্লোগান দিতে বলা হয়েছে, পরে সেই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ওই রিকশাচালকের কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড নেই। এভাবে সাধারণ মানুষকে ব্যবহার করে বিভ্রান্তি তৈরি করার চেষ্টা চলছে, যা ডিবি কঠোরভাবে দমন করছে। তিনি বলেন, আইনের সর্বোচ্চ ক্ষমতা প্রয়োগ করে এ ধরনের অপতৎপরতা দমন করা হবে। গুজবে কান না দিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নাগরিকদের সহযোগিতা চায় পুলিশ।

বাসচালককে পুড়িয়ে হত্যা, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আ.লীগ নেতা গ্রেপ্তার : ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় বাসে অগ্নিসংযোগ ও চালককে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আনোয়ার হোসেন (৩৫) নামের এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বুধবার ভোর ৪টার দিকে ফুলবাড়িয়া পৌরসভার চাঁদপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ার হোসেন পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের চাঁদপুর এলাকার আব্দুর রশিদের ছেলে। তিনি একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বলে জানিয়েছে ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রোকনুজ্জামান। ওসি জানান, ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখেছি। ফুটেজে কিছুটা অস্পষ্ট থাকায় আনোয়ার হোসেনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা হয়েছে। ফুটেজ দেখে ৮০ পার্সেন্ট নিশ্চিত হয়েছি- আনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছেন। তাই আনোয়ার হোসেনকে সন্দেহভাজন হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে বিকালে ৭ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে আগুনে পুড়ে মারা যাওয়া বাসচালক মো. জুলহাসের (৩০) ছোট বোন ময়না বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে ফুলবাড়িয়া থানায় মামলা করেন। এ মামলায় আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত সোমবার ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আলম এশিয়া পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আসে। রাত ২টা ৪৫ মিনিটে বাসটি তেল নেওয়ার জন্য পেট্রল পাম্পের সামনে এলে সব যাত্রী নেমে যান। প্রতিদিনের মতো রাতে বাসটি সেখানেই রাখা হয়। রাত বেশি হওয়ার কারণে বাড়ি যেতে ঝুঁকির কথা চিন্তা করে ভোরে নামবে এমন চিন্তা করে চর রাধাকানাই গ্রামের বাবুল হোসেনের স্ত্রী শারমিন সুলতানা রুমকি ও তার ছেলে শহিদুল ইসলাম বাদশা বাসের ভেতরেই থেকে ভোর হওয়ার অপেক্ষায় ঘুমিয়ে যান। বাসের ভেতরের সিটে ঘুমিয়ে পড়েন চালক জুলহাস। এ সময় তিনজন দুর্বৃত্ত এসে বাসে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তাৎক্ষণিক চলে যায়। এতে বাসটিতে আগুন দাও দাও করে জ্বলতে থাকা অবস্থায় ভেতরে থাকা শহিদুল ইসলাম বাদশা বের হতে পারলেও তার মা শারমিন সুলতানা রুমকি আহত অবস্থায় বের হন। এ সময় ভেতরে থাকা জুলহাস অগ্নিদগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান।

মোহাম্মদপুরে ককটেলসহ আটক ১, ঢাকায় গ্রেপ্তার ‘আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট’ ৪৪ জন : রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান এলাকা থেকে দুটি ককটেলসহ মো. আব্দুর রহমান (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাকে আটক করা হয়। মোহাম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী রফিক আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আমরা একজনকে আটক করেছি। পরে তার ব্যাগ তল্লাশি করে দুটি তাজা ককটেল পাওয়া গেছে।’ রফিক আরও বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, তিনি ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার একটি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’ এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের আরও ৪৪ নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়।

চট্টগ্রামে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুলের বাসায় অভিযান, সাতজন আটক : জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর চট্টগ্রাম নগরের বাসভবনে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় বাসভবনে থাকা সাতজনকে আটক করা হয়। বুধবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নগরের ২ নম্বর গেটের চশমা হিল এলাকায় এ অভিযান চালায় পাঁচলাইশ থানা-পুলিশ। অভিযানের পর যাচাই-বাছাইয়ের জন্য বাসার সিসিটিভি ক্যামেরার ডিভিডিআর বক্স জব্দ করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য কয়েকজন সেখানে জড়ো হচ্ছেন বলে একটি ফেসবুকে পোস্টে বলা হয়। সেটির সূত্র ধরে অভিযান পরিচালনা করে পুলিশ। পুলিশ বলছে, ২ নম্বর গেট এলাকায় মহিবুল হাসানের ছোট ভাই বোরহান ও বিএনপি নেতা নিয়াজ ‘ক্যাফে মিলানো’ নামে একটি রেস্তোরাঁ পরিচালনা করতেন। সেটি গত বছরের ৫ আগস্টের পর বন্ধ, তবে অনলাইনে তারা খাবার বিক্রি করেন। আটক সাতজন ওই রেস্তোরাঁয় কাজ করতেন বলে দাবি করেছেন। সে ধরনের তথ্যও পাওয়া গেছে। পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সোলাইমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা একটি ফেসবুক পোস্ট পেয়েছি, যেখানে বলা হচ্ছে ১৩ নভেম্বরের কর্মসূচি ঘিরে এখানে জড়ো হচ্ছে কিছু লোক। তথ্য ছিল এখানে যারা জড়ো হচ্ছেন, তাদের জন্য বাইরে থেকে খাবার আসছে। তবে আমরা সে ধরনের কিছু পাইনি। আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেওয়া হয়।’ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে দরকার আগে থেকে খবর জোগাড় করা। নাশকতার আগে নাশকতাকারীদের ধরা এবং হেফাজতে (কাস্টডিতে) রাখতে হবে। আর যেসব জায়গা বা এলাকা স্পর্শকাতর (সাবজেক্টেড), সেখানে সার্বক্ষণিক তল্লাশি করতে হবে। তাহলে এসব ঘটনা যে মাত্রা পেতে পারে, সেখান থেকে কমে আসবে।