শেখ হাসিনার আরেক মামলার রায় এ মাসেই
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
চলতি মাসেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আরেকটি মামলার রায় হবে। দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর জানিয়েছেন, পূর্বাচলের প্লট দুর্নীতির মামলার রায় হতে যাচ্ছে এ মাসেই। গত জানুয়ারিতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার বোন শেখ রেহানাসহ পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম নিয়ে পর্যাপ্ত তথ্য পাওয়ার কথা জানান দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন। সে সময় তিনি বলেন, ‘অনুসন্ধান চলছে, অনেক অগ্রগতি আছে। অনুসন্ধান দল এ নিয়ে অনেক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। হাতে পর্যাপ্ত তথ্য এসেছে। বিশেষ করে রাজউকের পূর্বাচল প্রকল্পের ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দণ্ডসংক্রান্ত বিষয়ে শিগগিরই ভালো কিছু তথ্য দিতে পারব।’ পরবর্তীতে ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে রাজধানীর পূর্বাচলে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে চার্জশিট দাখিল হয়। সাক্ষ্যগ্রহণ ও বাদীর জেরাও শেষ পর্যায়ে ছিল, ফলে খুব শিগগিরই মামলার রায় হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছিল।
শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত করেছেন আদালত। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দেন। গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সংস্থাটির সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়াকে জেরা করেন আসামি খুরশীদ আলমের আইনজীবী শাহিন উর রহমান। এদিন তার জেরা শেষ হওয়ায় আদালত সাক্ষ্যগ্রহণ সমাপ্ত ঘোষণা করেন। এরপর আদালত আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য আগামী ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটির তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরো দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন— জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।
গত সোমবার চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যার দায়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দুটি অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও একটি অভিযোগে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে ফাঁসির দড়িতে ঝুঁলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
