তুরস্ক থেকে আনসারদের জন্য কেনা হবে ১৭ হাজার শটগান
প্রকাশ : ১৯ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

সাশ্রয়ী মূল্যে আনসার ভিডিপির জন্য সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ১৭ হাজার ৫০টি ১২ বোর শটগান কেনা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালাহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ তথ্য জানান।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আনসার ভিডিপির প্রায় ১৭ হাজার ৫০টি ১২ বোর শটগান কিনতে হবে। এগুলো অনেক পুরনো হয়ে গিয়েছিল। যেই দরে পাচ্ছি তা বেশ সাশ্রয়ী। আমরা এটি অনুমোদন করেছি। আনসারদের শটগান কেনায় কত ব্যয় হবে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলেই খুব সাশ্রয়ী। আগের কেনার চেয়ে এবার অনেক প্রতিযোগিতামূলক দাম।
নির্বাচনের আগে এই কেনাকাটা নির্বাচনী প্রস্তুতির অংশ কিনা, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আনসারের শটগান কেনা নির্বাচনের বিষয় নয়। তাদের অনেক দিন ধরে শটগান দেওয়া হয়নি। আর যেই দামে কিনছি, আগেও এই দামে পাওয়া কঠিন ছিল। আজ ইকোনমিক অ্যাফেয়ার্স কমিটিতে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। পারচেজ কমিটিতে গেলে বিস্তারিত জানা যাবে। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরে ১৭,০৫০ পিস ১২ বোর শটগান সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকার। প্রস্তাবক মন্ত্রণালয় সকল বিধিবিধান অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
জানা গেছে, এতে মোট ব্যয় হবে ৩৫ কোটি ৬২ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৬ টাকা। ব্যাংক ঋণ নিয়ে এই শটগান কেনা হতে পারে। গত ৯ নভেম্বর অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভায় ‘বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী’র জন্য ১৭,০৫০ পিস ১২ বোর শটগান সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে কেনার প্রস্তাব নীতিগতভাবে অনুমোদিত হয়। দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হলে ৪টি প্রতিষ্ঠান প্রস্তাব দাখিল করে। প্রস্তাব মূল্যায়ন ও দরকষাকষির পর সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান তুরস্কের বে গ্যালাতালকে নির্বাচিত করা হয়। তাদের কাছ থেকে ১৭,০৫০ পিস শটগান ৩৫ কোটি ৬২ লাখ ২৭ হাজার ৬৯৬ টাকায় কেনার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি পিস শটগানের মূল্য ধরা হয়েছে ১৪৬ ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ২০ হাজার ৮৯৩ টাকা। এর প্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তাবটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে উপস্থাপন করে। কমিটি বিষয়টি অবহিত হয় এবং প্রস্তাবক মন্ত্রণালয়কে সকল বিধিবিধান অনুসরণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়।
স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলোতে বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের সুপারিশ : আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠপর্যায়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে চলেছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্পর্শকাতর কেন্দ্রগুলোতে বডি ওর্ন ক্যামেরা ব্যবহারের সুপারিশ করা হলেও- প্রাথমিক পরিকল্পনায় থাকা ৪০ হাজার ক্যামেরার সংখ্যা এখন কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা। তিনি বলেন, বডি ওর্ন ক্যামেরা নিয়ে দীর্ঘ পর্যালোচনা করা হয়েছে। আগে পরিকল্পনা ছিল বড় আকারে ক্রয় করার, কিন্তু এখন তা যৌক্তিকভাবে সাজানো হচ্ছে। মূল্য, ক্রয়পদ্ধতির স্বচ্ছতা এবং মনিটরিং সক্ষমতা বিবেচনায় সংখ্যা কমানোর সিদ্ধান্ত এসেছে।
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, সব জায়গায় ক্যামেরা লাগানো সম্ভব নয়। যেসব এলাকা স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত, সেসব জায়গার জন্যই আমরা পরামর্শ দিয়েছি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও নির্বাচন কমিশন আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। প্রাথমিক পরিকল্পনার ৪০ হাজার ক্যামেরা কমে কতটুকু হবে- এ প্রশ্নে তিনি বলেন, এখনই নির্দিষ্ট সংখ্যা জানানো যাচ্ছে না। প্রস্তাব আনলেই তা জানা যাবে। কবে নাগাদ ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু হবে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই উদ্যোগ নেওয়া হবে, সম্ভবত আগামী সপ্তাহেই আনুষ্ঠানিক প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে।
