হাসিনা-জয়-পুতুলের বিরুদ্ধে মামলার রায় ২৭ নভেম্বর
প্রকাশ : ২৪ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক

ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলার রায়ের দিন ২৭ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তারিখ ঘোষণা দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর খান মোহাম্মদ মাইনুল হাসান লিপন এটি নিশ্চিত করেন।
এদিন দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর খান মো. মাইনুল হাসান (লিপন) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তিনি শেখ হাসিনাসহ অপর আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন প্রত্যাশা করেন। মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহীনুর রহমান যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে তার খালাসের প্রার্থনা করেন। এদিন শুনানিকালে খুরশীদ আলমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা ৬ মামলায় গত ৩১ জুলাই এ তিন মামলাসহ পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা পরিবারের সাত সদস্যসহ অপরদের বিরুদ্ধে গঠন করেন আদালত। এসব মামলার শেখ পরিবারের অন্য আসামিরা হলেন-শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক। শেখ পরিবার ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপ-পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
হাসিনা-রেহানা-টিউলিপের মামলার যুক্তিতর্ক ২৫ নভেম্বর : ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের জন্য আজ ২৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেন আদালত। গতকাল রোববার ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলম এ দিন ধার্য করেন। এদিন আসামিদের আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য ছিল। আসামি খুরশীদ আলম আত্মপক্ষ সমর্থনে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে ন্যায় বিচার প্রত্যাশা করেন। তবে শেখ হাসিনাসহ অপর ১৬ আসামি পলাতক থাকায় আত্মপক্ষ সমর্থন করেনি।
দুদক-এর পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহম্মেদ সালাম বাসস’কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদক-এর উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়।
মামলাটির তদন্ত শেষে, গত ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদক-এর সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া।
এই মামলায় অন্যান্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।
