ডেঙ্গু আক্রান্ত ৯ হাজারের বেশি

বরগুনা

প্রকাশ : ২৬ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  জাফর হোসেন হাওলাদার, বরগুনা

বরগুনায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল আকারধারণ করছে। জেলার স্বাস্থ্য বিভাগের সর্বশেষ তথ্যে জানা গেছে, চলতি বছরে জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৯ হাজার ১৭৯ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন হাসপাতাল ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০৯ জন রোগী। গত রোববার (১৬ নভেম্বর) বরগুনা সিভিল সার্জন কার্যালয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বরগুনা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নতুন করে ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন ডেঙ্গু রোগী। বর্তমানে হাসপাতালটিতে চিকিৎসাধীন আছেন ৫৯ জন। একই সময়ে জেলার পাঁচ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আরও ১৮ জন রোগী ভর্তি হন। আমতলীতে ৩, বামনায় ২, বেতাগীতে ৪ এবং পাথরঘাটায় ৯ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। উপজেলা পর্যায়ে বর্তমানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৬৭ জন। চলতি

বছর জেলায় চিকিৎসা নেওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ২৯ জনে। এর মধ্যে ৮ হাজার ৯২৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। জেনারেল হাসপাতাল একাই চিকিৎসা দিয়েছে ৭ হাজার ৪৪ জনকে, আর উপজেলার বিভিন্ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৯৮৫ জন। ডেঙ্গু আক্রান্তের দিক থেকে বরগুনা সদর উপজেলার পর দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পাথরঘাটা উপজেলা। এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত ৯১০ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন, যার মধ্যে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সরকারি হিসাবে বরগুনায় ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যু ১৫ জনের মধ্যে জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন, আমতলীতে ১ জন এবং বাকি মৃত্যু পাথরঘাটায়। তবে জেলার বাইরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অন্তত ৪৮ জনের মৃত্যুর তথ্য পাওয়া গেছে। ফলে বেসরকারি হিসাবে জেলায় ডেঙ্গুতে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬৫ জনে। বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ আবুল ফাত্তাহ জানান, মার্চ মাসে বরগুনাকে ডেঙ্গুর হটস্পট ঘোষণা করা হলেও বিভিন্ন দফার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, সমন্বিত উদ্যোগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এত রোগী আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও সরকারি হিসাবে মৃত্যুর সংখ্যা ১৫-এ সীমাবদ্ধ রাখতে পেরেছি। তবে বাস্তবে মৃত্যুর সংখ্যা আরও বেশি। জনবল সীমিত থাকা সত্ত্বেও আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারত।’ তিনি আরও বলেন, ‘ডেঙ্গু সম্পূর্ণ নির্মূল করা সম্ভব নয়। তবে জনগণের সচেতনতা, বাসাবাড়ির আশপাশ পরিষ্কার রাখা এবং মশার প্রজননস্থল ধ্বংসের মাধ্যমে বরগুনায় ভবিষ্যতে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী করা সম্ভব।