
যারা দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী করে তাদের নির্বাচিত করলে দুর্নীতি কমবে না বলে মন্তব্য করেছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. আব্দুল মোমেন। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা অডিটোরিয়ামে দুদক আয়োজিত আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনিস্টিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের মহাপরিচালক ড. এ কে এনামুল হক।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছর যারা দুর্নীতি করেছে তাদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে সীমান্ত পার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে রাজনৈতিক এলিটরা। তারা যদি ক্ষমতায় আসে কেমন হবে? তাদের ক্ষমতায় আসার আগে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর সম্পদ বিবরণীতে ঝামেলা ছিল। এতে জমির পরিমাণ ছিল ৫ দশমিক ১ একর। ট্যাক্স ফাইলেও একই পরিমাণ সম্পদ পাওয়া যায়। কিন্তু অনুসন্ধানে পাওয়া যায় ২৯ একর। সেসময় এটা ধরা হলে তার নমিনেশন বাতিল হয়ে যেত। নমিনেশন বাতিল হলে তিনি এমপি হতেন না, প্রধানমন্ত্রী হতেন না, তার দল ক্ষমতায় আসতেন কি না সন্দেহ। তাই আমাদের আগে থেকে সচেতন থাকতে হবে।
আওয়ামী সরকারের ১৫ বছরের ক্ষমতায় থাকাকালীন দুর্নীতির মহামারীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সম্পদ বিবরণীতে অনেক পার্থক্য থাকে। ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী পালানোর আগে অর্থমন্ত্রী পালালেন, গভর্নর পালালেন। অর্থ ব্যবস্থার সবাই পালালেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বির্চারপতি পালালেন। এমনকি বায়তুল মোকাররমের খতিবও পালালেন। এটি দুর্নীতির সবচেয়ে বড় উদাহরণ।
এসময় দুর্নীতির নানান দিক তুলে ধরে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, একবার টাকা কোথাও চলে গেলে তা ফেরত আনার সম্ভাবনা ও সুয়োগ খুব কম থাকে। আবার সেসব দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্কও থাকে না। দুর্নীতির টাকা যেখানে গেছে সেখানে কাজ করার লোক নাই, কাজ করা কষ্ট, সেখানে আমরা ফাস্ট সেক্রেটারি লেভেলের কাউকে পাঠাতে চাই। দুর্নীতি বহুমাত্রার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, বর্তমানে ক্রিপ্টোকারেন্সি আকারে টাকা পাচার হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের প্রশিক্ষণ নেই। সেক্ষেত্রে আমাদের অফিসকে শক্তিশালী করতে হবে। এগুলো প্রতিরোধের পথ বের করতে হবে। কিন্তু সব আমাদের একার পক্ষে সম্ভব নয়।