ব্যারিকেড ভেঙে দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে ঢোকার চেষ্টা

প্রকাশ : ২৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে গতকাল মঙ্গলবার বড় ধরনের বিক্ষোভ দেখিয়েছেন ‘উগ্র হিন্দুত্ববাদী’ সংগঠনের সদস্য ও সমর্থকরা। এসময় তারা ব্যারিকেড ভেঙে কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেন।

জানা গেছে, ময়মনসিংহে হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাসকে হত্যার প্রতিবাদে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়, যার নেতৃত্ব দেয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি) ও বজরঙ্গ দল।

এদিকে, পরিস্থিতি আমলে নিয়ে হাইকমিশনের বাইরে নিরাপত্তা বাড়িয়েছে দিল্লি পুলিশ। তীব্র নিরাপত্তা ব্যবস্থার পরও কিছু প্রতিবাদকারী ব্যারিকেড ভেঙে কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানের দিকে এগোতে দেখা গেছে। বিভিন্ন রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রতিবাদকারীরা অন্তত দুটি স্তরের ব্যারিকেড ভেঙে হাইকমিশনের দিকে এগিয়েছে। পাশাপাশি, অনেক প্রতিবাদকারী ব্যানার এবং প্ল্যাকার্ড হাতে তুলে ধরে হাইকমিশনের সামনে নিন্দাজ্ঞাপক স্লোগান দেন।

তবে নিরাপত্তা সংস্থা আগেই এই প্রতিবাদের সম্ভাবনা নিয়ে সতর্ক ছিল ও কোনো অপ্রত্যাশিত ঘটনা রোধে হাইকমিশনের বাইরে শক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছিল। এলাকায় তিন স্তরের ব্যারিকেড স্থাপন করা হয়েছে এবং পুলিশ ও প্যারামিলিটারি সদস্যরা টহল দিচ্ছেন।

এদিকে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে তলব করে নয়াদিল্লি ও শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কূটনৈতিক স্থাপনায় হামলা এবং ভাঙচুরের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পাশাপাশি এসব ঘটনাকে ‘পূর্বপরিকল্পিত’ উল্লেখ করে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা। গতকাল মঙ্গলবার সকালে ভারতীয় হাইকমিশনারকে তলব করার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এসব ঘটনা সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শনের শামিল। এ ধরনের কর্মকাণ্ড কেবল কূটনৈতিক কর্মীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি নয়, বরং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, শান্তি ও সহনশীলতার মূল্যবোধের পরিপন্থি।

সূত্র জানায়, সকাল ৯টা ৪০ মিনিটে ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এসে পররাষ্ট্রসচিব আসাদ আলম সিয়ামের দপ্তরে প্রবেশ করেন। আসা-যাওয়া মিলিয়ে পাঁচ মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে তিনি মন্ত্রণালয় ত্যাগ করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, এ সময় বাংলাদেশ সরকার গত ২০ ডিসেম্বর নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের প্রাঙ্গণ ও আবাসস্থলের বাইরে ঘটে যাওয়া অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এবং গত ২২ ডিসেম্বর শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের ভিসা কেন্দ্রে উগ্রপন্থি গোষ্ঠীর ভাঙচুরের ঘটনায় ভারত সরকারের কাছে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে। এ ছাড়া ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের সামনে সহিংস বিক্ষোভের ঘটনাকেও উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ সরকার এসব ঘটনার পূর্ণাঙ্গ ও নিরপেক্ষ তদন্ত, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ভারতে অবস্থিত বাংলাদেশের কূটনৈতিক মিশন ও সংশ্লিষ্ট স্থাপনাগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

আন্তর্জাতিক আইন ও কূটনৈতিক দায়বদ্ধতা অনুযায়ী কূটনৈতিক কর্মী ও স্থাপনাগুলোর মর্যাদা ও নিরাপত্তা সুরক্ষায় ভারত সরকার অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে এমন প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছে ঢাকা।