ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে সরানোর প্রস্তাব প্রেসিডেন্টের
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ইরানের রাজধানী তেহরান থেকে দক্ষিণে সরানো ছাড়া কোনো উপায় নেই। দেশটির প্রেসিডেন্ট এমনটি বলেছেন। তার কথা হলো, শহরের বিস্তার সীমা ছাড়িয়ে গেছে, পর্যাপ্ত পানি সরবরাহে ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ভূমিধসের ঝুঁকিও তৈরি হয়েছে। দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এমনটি জানানো হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান গত বৃহস্পতিবার বলেন, গত বছর ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনির কাছে তিনি রাজধানী সরানোর এই প্রস্তাব তুলে ধরেন। তিনি স্বীকার করেন, তার এই প্রস্তাব ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে। তবে প্রেসিডেন্টের যুক্তি হলো, সংকট এত গভীর যে, ইরানের রাজধানী সরিয়ে নেওয়া এখন বাধ্যতামূলক। এর কোনো বিকল্প নেই।
পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত হরমোজগান প্রদেশে সফরে গিয়ে মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেন, এই অঞ্চল পারস্য উপসাগরের তীরে অবস্থিত, এখান থেকে সহজেই খোলা সমুদ্রে যাওয়া যায়। এতে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর ভালো সুযোগ আছে।
তিনি বলেন, যদি আমরা এই জায়গার সম্ভাবনাকে নতুনভাবে কাজে লাগাই, তাহলে এটি একটি সমৃদ্ধ ও উন্নত এলাকা হয়ে উঠতে পারে। বর্তমান অবস্থা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকা ঠিক নয়, ভবিষ্যতের জন্য সঠিক ও বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা দরকার।
তিনি আরও বলেন, দেশ এখন যেসব সমস্যার মধ্যে আছে, সেগুলো মোকাবিলার জন্য উন্নয়ন পরিকল্পনা বা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র পারস্য উপসাগর এলাকার দিকে সরাতে হবে। তেহরান, কারাজ ও কাজভিনে এখন ভয়াবহ পানি সংকট চলছে, আর এই সমস্যা সহজে সমাধান করা সম্ভব না। তেহরান শহরে এখন এক কোটির বেশি মানুষ বাস করে। তারা ইরানের মোট পানির প্রায় এক-চতুর্থাংশ ব্যবহার করে। আগেও কয়েকজন প্রেসিডেন্ট রাজধানী সরানোর কথা বলেছিলেন। সাবেক প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিও একটি পরিকল্পনা করেছিলেন, যেখানে রাজধানী সরানোর নানা বিকল্প ছিল।
পেজেশকিয়ান অনেক দিন ধরেই দেশের পানি সংকট নিয়ে সতর্ক করে আসছেন। তিনি বলেন, গত বছর বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৪০ মিলিমিটার, যেখানে স্বাভাবিক পরিমাণ ২৬০ মিলিমিটার। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক কমে গেছে। এ বছরও অবস্থা একই রকম। তিনি আরও বলেন, বাঁধে পানি কমে যাচ্ছে, অনেক কূপ শুকিয়ে গেছে, আর অন্য জায়গা থেকে পানি আনার খরচও অনেক বেশি। এসব দেখে বোঝা যাচ্ছে, আমাদের এখন দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতে হবে। যদি এখান থেকে তেহরানে পানি নিতে হয়, তাহলে প্রতি ঘনমিটারের খরচ হবে ৪ ইউরো।
