নিয়োগের ২৬ দিন পর পদত্যাগ করলেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশ : ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পদত্যাগ করেছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকর্নু। তার মন্ত্রিসভা ঘোষণা হওয়ার একদিনেরও কম সময়ের মধ্যে পদত্যাগ করলেন তিনি। এলিসি প্রাসাদ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গতকাল সোমবার সকালে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর সঙ্গে এক ঘণ্টার বৈঠকের পর লেকর্নু তার পদত্যাগপত্র জমা দেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

এই আকস্মিক পদক্ষেপ আসে লেকর্নু নিয়োগ পাওয়ার মাত্র ২৬ দিন পর। তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্রাঁসোয়া বেয়ারুর সরকারের পতনের পর নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। জাতীয় পরিষদের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল লেকর্নুর মন্ত্রিসভার গঠন নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেছিল। কারণ সেটি মূলত বেয়ারুর সরকারের প্রায় অপরিবর্তিত সংস্করণ ছিল। তারা হুমকি দিয়েছিল যে সংসদে সেই মন্ত্রিসভাকে প্রত্যাখ্যান করবে।

এখন বেশ কয়েকটি দল আগাম নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছে। এমনকি কেউ কেউ প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর পদত্যাগের আহ্বানও জানিয়েছে। যদিও ম্যাক্রোঁ আগেই বলেছেন, ২০২৭ সালে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে তিনি পদত্যাগ করবেন না। ‘ম্যাক্রোঁর এখন বেছে নিতে হবে সংসদ ভেঙে দেওয়া নাকি পদত্যাগ,’ বলেছেন চরম ডানপন্থি ন্যাশনাল র‍্যালি দলের অন্যতম শীর্ষ নেতা সেবাস্তিয়েন শেনু।

যিনি সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও ম্যাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী লেকর্নু ছিলেন গত দুই বছরের মধ্যে ফ্রান্সের পঞ্চম প্রধানমন্ত্রী। ২০২৪ সালের জুলাই মাসে অনুষ্ঠিত আগাম সংসদ নির্বাচনের পর থেকে ফ্রান্সের রাজনীতি মারাত্মক অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। কারণ সেই নির্বাচনে ঝুলন্ত সংসদ গঠিত হয়। এর ফলে কোনো প্রধানমন্ত্রীই সংসদে প্রয়োজনীয় সমর্থন নিয়ে কোনো বিল পাস করতে পারছেন না।বেয়ারুর সরকার সেপ্টেম্বর মাসে পতন হয়, যখন সংসদ তার কঠোর কৃচ্ছ্রনীতি বাজেটকে সমর্থন দিতে অস্বীকার করে। সেই বাজেটে সরকারি ব্যয় ৪৪ বিলিয়ন ইউরো কমানোর প্রস্তাব ছিল।

২০২৪ সালে ফ্রান্সের বাজেট ঘাটতি দাঁড়ায় জিডিপির ৫.৮ শতাংশে, আর জাতীয় ঋণের পরিমাণ জিডিপির ১১৪ শতাংশে পৌঁছায়। গ্রিস ও ইতালির পরেই এটি ইউরোজোনে তৃতীয় সর্বোচ্চ সরকারি ঋণ এবং প্রতি ফরাসি নাগরিকের গড় ঋণ প্রায় ৫০ হাজার ইউরোর সমান। গতকাল সোমবার সকালে লেকর্নুর পদত্যাগের খবর প্রকাশিত হওয়ার পর প্যারিসের শেয়ার বাজারে তীব্র দরপতন ঘটেছে।