ঢাকা সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশে বিনিয়োগ বন্ডের প্রয়োগ

ইসলামি অর্থনীতির অগ্রগতিতে বাংলাদেশের অবস্থান কাঙ্ক্ষিত পর্যায়ে নেই। প্রচলিত সুদি বন্ড-এর অন্যতম উদাহরণ। দীর্ঘদিন পর্যন্ত এ দেশে ইসলামি বন্ড ছিল না। কিছুদিন হলো, এ বিষয়ে কিছু আইন ও গেজেট পাস হয়েছে। এ দেশে ইসলামি বন্ডের প্রয়োগ, সমস্যা ও সমাধান নিয়ে লিখেছেন আইএফএ কনসালটেন্সি লিমিটেড ঢাকার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বন্ডের প্রয়োগ

বন্ড কী?

সরকার বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের যখন তারল্য সংকট দেখা দেয়, তখন জনগণ থেকে ঋণ গ্রহণ করা হয়। এ ঋণ গ্রহণের প্রক্রিয়াটাই বন্ড নামে পরিচিত। বন্ড ক্রয় করার অর্থঋণ প্রদান করা, বন্ড ইস্যু করা বা বিক্রয়ের অর্থঋণ গ্রহণ করা। পুরো প্রক্রিয়াটাই হয়ে থাকে সুদভিত্তিক।

বন্ডের ব্যবহার

বাংলাদেশে বন্ডের ব্যবহার সাধারণত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারের ঋণ সরবরাহের জন্য হয়ে থাকে। সাধারণত সরকার এক বছরের বেশি সময়ে অর্থাৎ সর্বোচ্চ বিশ বছরের জন্য ঋণ নিলে, তার বিপরীতে বন্ড সরবরাহ করা হয়। আর এক বছরের কম সময়ের জন্য ঋণ নিলে, এর বিপরীতে ব্যাংকগুলোকে ট্রেজারি বিল দেওয়া হয়।

কারা বন্ড বেচাকেনা করে?

সাধারণত বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো বন্ড বেচাকেনা করে থাকে। বিষয়টি খোলাসা করার জন্য ব্যাংকের আমানতের বিপরীতে বিনিয়োগ পলিসি নিয়ে কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন।

ব্যাংকের বিনিয়োগ পলিসি

ব্যাংকের একটি সাধারণ নীতি হলো, ঋণের প্রবাহ আমানতের চেয়ে কম হতে হবে। অর্থাৎ ১০০ টাকা আমানত হলে, ঋণ প্রদান এর কম হতে হবে; যেন জমাকারীদের অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়। এ কমের পরিমাণ কত হবে, এটি নির্ধারণ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গত তিন বছরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এ সংক্রান্ত সার্কুলেশন অন্তত চার দফা পরিবর্তন করতে হয়েছে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ব্যর্থতা ঢাকার এক ঘৃণ্য প্রয়াস। যার যার ইচ্ছেমতো জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যাংক থেকে লুটেরারা লুটে নিচ্ছে। ঋণ খেলাপিদের সংখ্যা আগের সব রেকর্ড ভেঙে দিচ্ছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিনিয়োগসীমার ব্যাপারে কঠোর না হয়ে চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এর সঙ্গে সুদের ভয়াবহতা তো আছেই।

বাংলাদেশ ব্যাংকে অর্থ জমা : সিআরআর (CRR)

সাধারণ ব্যাংকগুলোকে বাধ্যতামূলকভাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে কিছু অর্থ সংরক্ষণ করতে হয়। মূলত আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষার্থেই এমন বিধান। এটি আমানতকারীদের রক্ষাকবচ। এ পলিসিকে ‘লিকিউডিটি রেশিও পলিসি’ (liquidity ratio monetary policy) বা তারল্য হার নীতি বলা হয়। এ নীতি অনুযায়ী, সাধারণ ব্যাংকগুলোকে উক্ত টাকার পর একটি অংশ ক্যাশ হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে রাখতে হয়। ব্যাংকিং পরিভাষায় একে ‘সিআরআর’ (Cash reserve requirement) বা নগদ জমার হার বলে।

সিআরআর ও সঞ্চয় অনুপাত

সাধারণত ব্যাংকে মানুষ বিভিন্ন উদ্দেশে অর্থ জমা করে। কেউ যখন তখন টাকা তুলে নেবে, এমন নিয়ত করে। একে কারেন্ট বা তলবি হিসাব বলে। কেউ মেয়াদে টাকা তুলবে, এ উদ্দেশে টাকা জমা করেন। একে টার্ম বা মেয়াদি সঞ্চয় বলে। ব্যাংকের কাছে এই উভয় প্রকার সঞ্চয় দায় হিসেবে গণ্য। একটি ব্যাংকের যে পরিমাণ মেয়াদি ও তলবি দায় থাকে, তার ন্যূনতম দৈনিক হার ৩.৫ শতাংশ। দ্বিসাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৪ শতাংশ নগদ টাকা প্রতিদিন বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হয়। একেই সিআরআর বলে। এ জমার অর্থের নগদ টাকা হাতে হাতে নয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অধীন তফসিলি ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে ডিপোজিট করতে হয়।

সিআরআর রেশিও পরিবর্তন

সময়ে সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রাবাজারে নগদ টাকার প্রবাহ ঠিক রাখতে গিয়ে সিআরআর হার পরিবর্তন করে থাকে। কয়েকদিন আগেও সিআরআর রেট ছিল দৈনিক ভিত্তিতে ৪.৫ শতাংশ এবং দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৫ শতাংশ। কিন্তু করোনার সময় দেশের অর্থনীতিতে যেন ক্ষতিকর কোনো প্রভাব না পড়ে এবং মুদ্রাবাজারে নগদ টাকার প্রবাহ ঠিক থাকে, সে কারণে সিআরআর রেট দৈনিক ভিত্তিতে ৩.৫ শতাংশ এবং দ্বি-সাপ্তাহিক গড় ভিত্তিতে ৪ শতাংশ করা হয়েছে।

মুদ্রাবাজারে নগদ টাকার প্রবাহ

ধরুন, এবিসি ব্যাংকের মেয়াদি দায় এবং তলবি দায়ের পরিমাণ ২০০ টাকা। এর ওপর ৫ শতাংশ সিআরআর জমা রাখতে হলে, ১০ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে জমা রাখতে হবে। এখন যদি সিআরআর ৩ শতাংশ করা হয়, তাহলে ব্যাংকটিকে ৬ টাকা জমা রাখতে হবে। সিআরআর রেট কমার কারণে ব্যাংকটির কাছে (১০-৬) বা ৪ টাকা বেশি থাকবে। এই ৪ টাকা ব্যাংকটি বাজারে বেশি বিনিয়োগ করতে পারবে। অর্থাৎ মুদ্রা বাজারে নগদ টাকা বেশি থাকবে। আবার সিআরআর যদি বাড়িয়ে দেওয়া হয়, তাহলে মুদ্রা বাজারে নগদ টাকা কমে যাবে। এভাবেই মূলত সিআরআর মুদ্রাবাজারে নগদ টাকার প্রবাহ ঠিক রাখতে কাজ করে থাকে। করোনার সময় যেহেতু বাজারে নগদ টাকার প্রবাহের চাহিদা বেড়ে যায়, তাই সিআরআর রেট হ্রাস করা হয়। উল্লেখ্য, সিআরআর-এর বিপরীতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো সুদ প্রদান করে না। এটি সুদমুক্ত সঞ্চয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকে অর্থ জমা : এসএলআর (SLR)

এডিআর অনুযায়ী, ব্যাংক যে অংশটি বিনিয়োগ করতে পারে না, এর এক অংশ সিআরআর হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে জমা করতে হয়; পাশাপাশি আরেকটি অংশ সম্পদ দিয়ে সংরক্ষণ করতে হয়। ব্যাংকিং পরিভাষায় একে ‘স্ট্যাটিউটরি লিকুইডিটি রেশিও’ (Statutory liquidity ratio) বলে। যা সংক্ষেপে ‘এসএলআর’ (SLR)। বাংলায় ‘বিধিবদ্ধ তারল্য সংরক্ষণ হার’ বলে। বর্তমানে এর হার ১৩ শতাংশ।

এসএলআর ও বন্ড

সুদি ব্যাংকগুলো ‘এসএলআর’ ট্রেজারি বিল ও বন্ড দিয়ে সংরক্ষণ করে থাকে। অর্থাৎ এডিআর অনুযায়ী একটি অংশ নগদ ক্যাশে জমা করতে হয়, আরেকটি অংশ দিয়ে বন্ড কিনতে হয়। এই বন্ডই সম্পদ। ব্যাংক কখনও লিকিউডিটি ক্রাইসিসের সম্মুখীন হলে বন্ড কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে বিক্রি করে নগদ টাকা তুলে নেওয়া যায়।

ইসলামি ব্যাংকিং ও সিআরআর/এসএলআর

ইসলামি ব্যাংকগুলোর জন্য এ ক্ষেত্রে ভিন্ন আইন রয়েছে। তাদের জন্য এডিআর ভিন্ন। তাদের এডিআর অনুযায়ী তারা সর্বোচ্চ ৯০ শতাংশ পর্যন্ত বিনিয়োগ করতে পারবে। বাকিটা SLR ও CRR হিসেবে রাখতে হয়। অন্তত ৫.৫ শতাংশ রাখতে হয় CRR হিসেবে। আর বাকি ৫.৫ শতাংশ রাখা হয় SLR হিসেবে।

ইসলামি ব্যাংকিং-এ এসএলআর ও সুদ

এসএলআর সম্পূর্ণ সুদি বন্ড। দীর্ঘদিন পর্যন্ত ইসলামি ব্যাংকগুলোর জন্যও এ ক্ষেত্রে অভিন্ন আইন ছিল। তাদেরকে এই সুদি বন্ডে বিনিয়োগ করতে হতো। তখন ইসলামি ব্যাংকগুলোকে বন্ড থেকে প্রাপ্ত সুদ দান করে দিতে হতো। সারকথা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী ব্যাংকগুলোকে CRR ও SLR রাখতে হয়। এ CRR ও SLR হিসেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে ১৮.৫ শতাংশ টাকা জমা দেওয়ার পর বাকি ৮১.৫ পর্যন্ত ঋণ বিতরণ করতে পারে। উল্লেখ্য, অতিরিক্ত ৩.৫ শতাংশ মূলত বন্ডে বিনিয়োগ হয়। তাই একে বিনিয়োগসীমার মধ্যেই ধরা হয়।

এসএলআর ও ইসলামি বন্ড

ইসলামি ব্যাংক প্রতিষ্ঠার ২১ বছর গত ২০০৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো ‘বাংলাদেশ সরকার ইসলামি বিনিয়োগ বন্ড বিধি ২০০৪’ প্রবর্তন করেছে। সংক্ষেপে একে ‘বিজিআইআইবি’ বা বাংলাদেশ গর্ভমেন্ট ইসলামিক ইনভেস্টমেন্ট বন্ড বলে। এটি মূলত ইসলামি ব্যাংকগুলোকে ইসলামি এসএলআর সুবিধা প্রদানের জন্য করা। ১২ পৃষ্ঠাব্যাপী মূলবিধি ও প্রজ্ঞাপনটির ধারা ৩-এর ভাষ্যমতে ইসলামি বন্ড ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী লাভ-ক্ষতির গ্রহণের ভিত্তিতে কিনতে হবে। আইনে একে কোথাও ‘মোদারাবা’ বলা হয়নি। অথচ বাস্তবে এটি মোদারাবা বন্ড। এ প্রজ্ঞাপন কার্যকর হওয়ার পর ইসলামি ব্যাংকগুলো এসএলআর হিসেবে সুদি বন্ডের পরিবর্তে মোদারাবা বন্ড কিনে রাখার সুযোগ পেয়েছে।

ইসলামি বিনিয়োগ বন্ড বিধি ২০০৪ : পর্যালোচনা

১. এ বিধিতে ‘ইসলামি বন্ড’ শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। তবে সেটা ইসলামি কীভাবে, এর কোনো ব্যাখ্যা নেই। বাহ্যত মনে হয়, সেটি মোদারাবা হিসেবে গণ্য হবে।

২. প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বন্ডটি হস্তান্তরযোগ্য হবে। তবে সেটা কী নীতিতে হবে, তা উল্লেখ নেই। মোদারাবা তহবিল পুরোটাই যদি তরল থাকে, তাহলে তো কমবেশি করে মোদারাবা বন্ড বেচাকেনা করা যাবে না। এসব বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কিছু উল্লেখ নেই।

৩. প্রজ্ঞাপনটির ধারা ৬-এ স্পষ্ট বলা হয়েছে, অভিহিত মূল্য ও মুনাফা দুটিই ফেরত দেওয়া হবে। লোকসান হলে, তা বন্ডধারী বহনের কথা নেই। এর অর্থ, বিনিয়োগকৃত পুজির পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদান করা হয়েছে। সুতরাং এটি আর ‘ইসলামি’ থাকে না, সম্পূর্ণ সুদি বন্ড হয়ে যায়। কারণ, ইসলামি বন্ডে মূলের নিরপত্তা প্রদান মানেই ঋণের বিপরীতে অতিরিক্ত গ্রহণ; যা সম্পূর্ণরূপে সুদি কারবার।

৪. প্রজ্ঞাপনটির ধারা ৭-এ ইসলামি বন্ড ফান্ডের বিনিয়োগ পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে-

ক. ইসলামি ব্যাংক বা অন্য কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ড ফান্ড থেকে বিনিয়োগ নিতে পারে। এর জন্য প্রদেয় অর্থের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে তাদের দায়মুক্ত কোনো সিকিউরিটিজ কিংবা বাংলাদেশ ব্যাংকে রক্ষিত হিসেবে দায়মুক্ত স্থিতি বন্ধক রাখতে হবে।

খ. মোদারাবা সঞ্চয় আমানত হিসেবে মুনাফার যে হার রয়েছে, সেটা মাসিক ভিত্তিতে প্রদান করতে হবে।

গ. ছয় মাস মেয়াদি ইসলামি বন্ডের ক্ষেত্রে ধারক ৮০ শতাংশ শতাংশ, ইসলামি বন্ড ফান্ড ২০ শতাংশ পাবে।

ঘ. ইসলামি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো ইসলামি বন্ড তহবিল থেকে অর্থ নিতে হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে ইসলামি বন্ড ৩ ফরমে আবেদন করতে হবে। এখানে এ ফর্মটা গুরুত্বপূর্ণ। তাতে লেখা আছে, ‘আমরা ইসলামি বন্ড বিধানের ধারা অনুযায়ী অর্জিত মুনাফাসহ অর্থায়নের সমুদয় অর্থ মেয়াদপূর্তির তারিখে পরিশোধ করব।’

এ আলোচনা থেকে স্পষ্ট হলো, কেন্দ্রীয় ব্যাংক আলোচিত ইসলামি বন্ডের বিনিয়োগ করে থাকে অন্যান্য ইসলামি ব্যাংকের তারল্য সংকট পূরণের জন্য। অর্থাৎ এসএলআর হিসেবে ইসলামি ব্যাংকগুলো বন্ড ক্রয় করে। এরপর যাদের তারল্য সংকট আছে, তাদের কাছেই সেটা পুনরায় বিনিয়োগ করা হয়। আর সেই বিনিয়োগটা হয়ে থাকে মূলের নিরাপত্তাসহ। যা স্পষ্ট সুদ। কিন্তু একেই বলা হচ্ছে ইসলামি বন্ড।

ইসলামি বিনিয়োগ বন্ড নীতিমালা ২০০৪ (সংশোধিত ২০১৪) : পর্যালোচনা

প্রায় ১০ বছর পর ইসলামি বন্ড আইন সংশোধন করা হলো। এই দীর্ঘ ১০ বছর এসব প্রশ্নবিদ্ধ ইসলামি বন্ড থেকে প্রাপ্ত মুনাফা কোথায় ব্যয় হয়েছে, এর সদুত্তর আমাদের জানা নেই। যা-ই হোক, সংশোধিত আইনটি আগের আইনের তুলনায় অনেকটাই শরিয়া দিক থেকে স্বচ্ছ। এতে ‘মেয়াদ পূর্তিতে পরিশোধ পদ্ধতি’র অধীনে বলা হয়েছে, ‘সংঘটিত লোকসানের সব ক্ষেত্রে লোকসান সমন্বয়পূর্বক স্পেশাল ইসলামি বন্ড ফান্ড অ্যাকাউন্ট বিকলন করিয়া বন্ড ধারককে অবশিষ্ট মূল্য পরিশোধ করা হইবে।’ আগের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছিল, অভিহিত মূল্য ও অর্জিত মুনাফা প্রদান করা হবে। আর এ আইনে লোকসান হলে অবশিষ্টটুকু দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। এতে শরিয়া স্বচ্ছতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি অবশ্যই ভালো দিক। তবে এরপরও আরও কিছু বিষয় সংশোধন করে নিলে ভালো হয়। যথা-

১. ইসলামি টার্মস স্পষ্ট করা হয়নি। মোদারাবা, মোশারাকা শব্দগুলো ব্যবহার করা উচিত। এতে ইসলামিকরণটি আরও অধিক স্পষ্ট হবে। তাই একে ইসলামি বন্ড-এর পরিবর্তে ‘মোদারাবা বন্ড’ বা ‘মোদারাবা সুকুক’ নাম দেওয়া অধিক সমীচীন।

২. সংশোধিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ইসলামি ব্যাংকগুলো নিজেদের মধ্যে অথবা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে রেপো বা রি-পারচেজিং করতে পারবে। এটি খুবই অস্পষ্ট। রেপুর জন্য শরিয়তে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা আছে। অ্যাসেট না থাকলে কমবেশিতে তা করা যায় না। তা ছাড়া ইস্যুকারীর সঙ্গে করা হলে সেটা বাই-ব্যাক হয়ে যেতে পারে। তাই এ বিষয়গুলোর ব্যাপারে শরিয়া নির্দেশনা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা উচিত।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত