প্রশ্ন : স্ত্রীর জন্য স্বামীর পকেট থেকে টাকা লুকানো বা সরিয়ে ফেলার হুকুম কী? আমাদের দেশের নারীরা সাধারণত এরূপ করে থাকে। এ টাকা দিয়ে অনেক সময় সাজজ্জার জিনিস কেনে, অনেক সময় এভাবে টাকা সঞ্চয় করে এবং কখনও কখনও মা-বাবাকেও সাহায্য করে। এরূপ করা জায়েজ হবে?
উত্তর : অন্যের সম্পদ গ্রহণ সংক্রান্ত মূলনীতি হলো, স্বামীসহ অন্য কারও সম্পদই মালিকের অনুমতি ছাড়া ভোগ করা যায় না। তবে স্ত্রী ও সন্তানদের প্রয়োজনীয় ভরণপোষণ বহন করা স্বামীর ওপর আবশ্যকীয় দায়িত্ব। স্বামী যদি কৃপণ হয় এবং এ হকগুলো ঠিকমতো আদায় না করে, তবে ন্যায়সঙ্গত পরিমাণ টাকা স্বামীর অজ্ঞাতে নেয়া যাবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় খরচ বহন করে থাকলে তার অজ্ঞাতে টাকা চুরি করা বা সরিয়ে ফেলা যাবে না। এমনিভাবে কৃপণতার ক্ষেত্রেও ন্যায়সঙ্গত পরিমাণের চেয়ে বেশি গ্রহণ করা যাবে না। আর পিতামাতাকে দান করার জন্য স্বামীর অজ্ঞাতে টাকা সরানোও জায়েজ নয়। তবে সামাজিক প্রচলন অনুযায়ী টুকটাক যে যৎসামান্য টাকা মেয়েরা বাবা-মাকে দিয়ে থাকে এবং স্বামী এত সামান্য পরিমাণ দেয়াতে পরে জানতে পারলেও তাতে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করে না, এ সামান্য পরিমাণ টাকাণ্ডপয়সাও স্বামীর পকেট থেকে সরিয়ে নেয়া যাবে। কিন্তু এ পরিমাণ কখনোই গ্রহণ করা যাবে না, যা সমাজ বা প্রচলনে গ্রহণ করে না এবং স্বামী পরে জানতে পারলে মেনে নেবে না। আয়েশা (রা.) সূত্রে বর্ণিত; হিন্দা বিনতে উকবা রাসুল (সা.)-এর দরবারে উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আবু সুফিয়ান একজন কৃপণ ব্যক্তি। তিনি আমার এবং আমার সন্তানদের জন্য প্রয়োজনীয় খরচ দেন না। তবে আমি তার অজ্ঞাতেই তার সম্পদ থেকে প্রয়োজনীয় খরচ গ্রহণ করে থাকি। এতে কি আমার কোনো পাপ হবে?’ তখন রাসুল (সা.) বললেন, ‘তুমি তার সম্পদ থেকে ততটুকু গ্রহণ করতে পার, যা তোমার ও তোমার সন্তানদের জন্য যথেষ্ট হয়।’ (মুসলিম : ৪৫৭৪)।