ঢাকা শুক্রবার, ১৫ আগস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ইসলামে পরোপকার ও খোঁটাদান

মুহাম্মদ আবু আহনাফ
ইসলামে পরোপকার ও খোঁটাদান

ইসলামে পরোপকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল। এটা ঈমানের দাবি এবং আল্লাহতায়ালার অত্যন্ত পছন্দনীয় কাজ। এক হাদিসে এরশাদ হয়েছে- যে ব্যক্তি মানুষের বেশি উপকার করে, সেই শ্রেষ্ঠ মানুষ। (আল-মুজামুল আওসাত : ৫৭৮৭)। অর্থ, শক্তি, বুদ্ধি কিংবা বিদ্যা যে পন্থায়ই পরোপকার করা হোক, আল্লাহতায়ালার কাছে তা কবুল হওয়া এবং একটি মর্যাদাপূর্ণ কাজরূপে গণ্য হওয়ার জন্য শর্ত হলো- ইখলাস থাকা। অর্থাৎ আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টিলাভের উদ্দেশ্যে করা এবং পার্থিব কোনো উদ্দেশ্য না থাকা। মোমিনের পরোপকারের মূল কথা হবে- ‘আমরা তো তোমাদের খাওয়াই কেবল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে। আমরা তোমাদের কাছে কোনো প্রতিদান চাই না এবং কৃতজ্ঞতাও না।’ (সুরা দাহর : ৯)।

মোমিন তো এই ভেবে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করবে যে, আল্লাহর দেওয়া জান-মাল ও জ্ঞান-বুদ্ধিকে সে আল্লাহর বান্দার সেবায় ব্যয় করতে পারছে। কেননা, আল্লাহতায়ালা তো মেহেরবানি করে তার প্রদত্ত জান-মাল জান্নাতের বিনিময়ে তার কাছ থেকে কিনে নিয়েছেন। আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন- ‘আল্লাহ মোমিনদের কাছ থেকে তাদের জীবন ও তাদের সম্পদ খরিদ করে নিয়েছেন, তাদের জন্য জান্নাত আছে এর বিনিময়ে।’ (সুরা তাওবা : ১১১)।

হাদিসে বর্ণিত- ‘যে ব্যক্তি কোনো মোমিনের দুনিয়াবি সংকটগুলো থেকে একটা সংকট মোচন করে দেয়, আল্লাহতায়ালা তার আখেরাতের সংকটগুলোর একটা সংকট মোচন করবেন। যে ব্যক্তি কোনো অভাবগ্রস্তের অভাব মোচনে সাহায্য করবে, আল্লাহতায়ালা তার দুনিয়া ও আখেরাতে স্বাচ্ছন্দ্য দান করবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-গুণ গোপন করবে, আল্লাহতায়ালা দুনিয়া ও আখেরাতে তার দোষ গোপন করবেন। আল্লাহ বান্দার সাহায্যে থাকেন, যতক্ষণ বান্দা তার ভাইয়ের সাহায্যে নিয়োজিত থাকে।’ (মুসলিম : ২৬৯৯; সুনানে আবু দাউদ : ৪৯৪৬; তিরমিজি : ১৪২৫; মুসনাদে আহমাদ : ৭৪২৭)।

পরোপকারের লাভ কেবল আখেরাতেই নয়, দুনিয়ায়ও পাওয়া যায়। তবে তা পাওয়া যায় কেবল তখনই, যখন লক্ষ্যবস্তু হয় আল্লাহর সন্তুষ্টি। পরোপকারের সুফল লাভের জন্য ইখলাসের উপরে প্রতিষ্ঠিত থাকাও জরুরি। অন্যথায় তার কৃত পরোপকারও নিষ্ফল হয়ে যায়। তাই তো আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা নিজ সম্পদ আল্লাহর পথে ব্যয় করে আর ব্যয় করার পর খোঁটা দেয় না এবং কোনো কষ্টও দেয় না, তারা নিজ প্রতিপালকের কাছে তাদের প্রতিদান পাবে। তাদের কোনো ভয় থাকবে না এবং তারা দুঃখিতও হবে না।’ (সুরা বাকারা : ২৬২)।

খোঁটা দ্বারা কেবল দান-খয়রাত ও পরোপকারের সওয়াবই নষ্ট হয় না; বরং এটি একটি কঠিন পাপও বটে। কেননা, এর দ্বারা উপকৃত ব্যক্তির অন্তরে আঘাত দেওয়া হয়। হাদিসে আসছে, মুসলিম তো সে, যার হাত ও মুখ থেকে সব মুসলিম নিরাপদ থাকে। (বোখারি : ১০; মুসলিম : ৪১)। আর মোমিন সে, যার ক্ষতি থেকে সব মানুষ নিরাপদ থাকে। (মুসনাদে আহমাদ : ১২৫৬১ )।

কোরআন মাজিদে এরশাদ হয়েছে- ‘হে মোমিনরা! খোঁটা দিয়ে ও কষ্ট দিয়ে নিজেদের দান-সদকাকে সেই ব্যক্তির মতো নষ্ট করো না, যে নিজের সম্পদ ব্যয় করে মানুষকে দেখানোর জন্য এবং আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস রাখে না। সুতরাং তার দৃষ্টান্ত এরকম, যেমন এক মসৃণ পাথরের ওপরে মাটি জমে আছে, অতঃপর তাতে প্রবল বৃষ্টি পড়ে এবং তা সেই মাটিকে ধুয়ে নিয়ে যায় এবং সেটিকে পুনরায় মসৃণ পাথর বানিয়ে দেয়। এরূপ লোক যা উপার্জন করে, তার কিছুমাত্র তারা হস্তগত করতে পারে না। আর আল্লাহ এরূপ কাফেরদের হেদায়াতপ্রাপ্ত করেন না।’ (সুরা বাকারা : ২৬৪)।

আর যে দান-খয়রাত আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির জন্য হয় না, তার পরিণাম সম্পর্কে হাদিসে এরশাদ হয়েছে- ‘হাশরের দিন আল্লাহতায়ালা এরূপ ব্যক্তিকে বলবেন- তোমাকে আমি যে অর্থ-সম্পদ দিয়েছিলাম, তা দ্বারা তুমি আমার জন্য কী করেছ? সে বলবে, হে আল্লাহ! আমি তা তোমার পথে ব্যয় করেছি। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। তুমি তো এজন্য করেছিলে যে, লোকে তোমাকে দাতা বলবে। তা বলাও হয়েছে। অর্থাৎ যে উদ্দেশ্যে দান করেছিলে তা পেয়ে গেছ। আজ আমার কাছে তোমার কোনো বদলা নেই। অতঃপর তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।’ (মুসতাদরাকে হাকেম : ২৫২৮)।

যে ব্যক্তি কারও উপকার নেয়, সে এমনিতেই মানসিকভাবে দুর্বল থাকে। তার ওপর যদি খোঁটা দেওয়া হয়, তবে তা তার অন্তরে রীতিমতো রক্তক্ষরণ ঘটায়। উপকারটা উপকৃত ব্যক্তির পক্ষে হয়ে যায় এক দুঃসহ বোঝা। যেন এই উপকার না পাওয়াই তার পক্ষে ভালো ছিল। তাই তো এরশাদ হয়েছে- ‘উত্তম কথা বলে দেওয়া ও ক্ষমা করা সেই দান-সদকা অপেক্ষা শ্রেয়, যার পর কোনো কষ্ট দেওয়া হয়। আল্লাহ অতি বেনিয়াজ ও সহনশীল।’ (সুরা বাকারা : ২৬৩)।

হজরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন- ‘তিন ব্যক্তি এমন, কেয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালা যাদের সঙ্গে কথা বলবেন না, তাদের দিকে রহমতের দৃষ্টিতে তাকাবেন না, তাদের পরিশুদ্ধ করবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তি।’ আবু যর (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) এ কথাটি তিন-তিনবার বললেন। আমি বললাম, ইয়া রাসুলুল্লাহ! তারা কারা, তারা তো সর্বস্বান্ত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেল? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি পরিধেয় কাপড় টাখনুর নিচে ঝুলিয়ে রাখে; যে ব্যক্তি উপকার করার পর খোঁটা দেয় এবং যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে।’ (মুসলিম : ১০৬)।

বস্তুত খোঁটাদানকারী নিজেকে মহানুভবতার উচ্চস্তর থেকে হীনতার গভীর খাদে নিমজ্জিত করে। যে পরোপকার করে, সে তা আল্লাহর খলিফা হিসেবেই করে। সৃষ্টির ওপর তার হাত যেন আল্লাহর প্রতিনিধিত্বের হাত। হাদিসে বর্ণিত- ‘ওপরের হাত নিচের হাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ।’ (বোখারি : ১৪২৭)। অর্থাৎ দাতার হাত গ্রহীতার হাত অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। কিন্তু খোঁটা দ্বারা দান-উপকারের এই মহিমা নষ্ট হয়। খোঁটা দেওয়ার দ্বারা প্রমাণ হয়- সে মাখলুকের কাছে আশাবাদী ছিল। মাখলুকের কাছে আশাবাদ মনুষ্যত্বের মর্যাদাকে খর্ব করে এবং দৃষ্টিকে করে সংকীর্ণ। মাখলুক কতটুকুই বা দিতে পারে! অথচ আসমান-জমিনের মালিক দান-উপকারের যে বিনিময় ঘোষণা করেছেন, তা সৃষ্টির কল্পনারও অতীত।

খোঁটা দেওয়া একরকম অহমিকাও বটে। কারণ এর দ্বারা সে যাকে উপকার করেছে, তাকে নিজ কৃপাধন্য মনে করে। তাকে হীন ও ছোট ভাবে। অথচ দান-উপকার করা চাই ব্যক্তির মান-সম্ভ্রমের প্রতি লক্ষ্য রেখেই। হতে পারে বিশেষ কোনো আমলের কারণে সে তার মতো বহু দান-খয়রাতকারী অপেক্ষা আল্লাহতায়ালার কাছে উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন। তাই উপকার করা উচিত সেবার মানসিকতা নিয়ে। অত্যন্ত বিনয় ও নম্রতার সঙ্গে।

খোঁটা দেওয়া আল্লাহর নেয়ামতের সঙ্গে ধৃষ্টতার শামিল। কারণ মানুষ খোঁটা কেবল তখনই দেয়, যখন উপকার করতে পারাকে নিজ কৃতিত্ব মনে করে, এটি যে আল্লাহর দান ও তাওফিকের বলে হয়েছে, তা বেমালুম ভুলে যায়। কেবল সামর্থ্য ও ক্ষমতা থাকলেই তো উপকার করা যায় না। এর জন্য আল্লাহর তাওফিকের দরকার হয়। দান করার পরে খোঁটা দিলে সেই তাওফিকের অমর্যাদা করা হয় এবং করা হয় অকৃতজ্ঞতা। যার পরিণাম ভয়াবহ; যেমনটা ওপরের হাদিসে বর্ণিত হয়েছে।

বলা হয়ে থাকে- তুমি কারও উপকার করলে প্রস্তুত থেক একদিন সে তোমার অপকার করবে। আসলে এটা উপকার করার দোষ নয়; বরং খোঁটা দেওয়া ও নিয়ত সহিহ না থাকার পরিণাম। নিয়ত সহিহ না থাকলে বিনিময়ের প্রত্যাশা থাকে। প্রত্যাশা অনুযায়ী সেই বিনিময় না পেলে খোঁটা দেওয়া হয়। যার পরিণামে সৃষ্টি হয় মনোমালিন্য। একপর্যায়ে তা শত্রুতায় গড়ায়। আর তখন ভাবা হয়, এটা সেই উপকার করার পরিণাম। অথচ সহিহ নিয়তে উপকার করলে শত্রুতা সৃষ্টির প্রশ্নই আসে না; বরং শত্রুর সঙ্গেও ভালো ব্যবহার করলে, তার কোনো উপকার করলে এবং আদর-আপ্যায়ন করলে সে বন্ধুতে পরিণত হয়ে যায়। কোরআন মাজিদে এরশাদ- ‘ভালো ও মন্দ সমান হয় না। তুমি মন্দের জবাব দাও ভালোর দ্বারা। তাহলে যার ও তোমার মধ্যে শত্রুতা ছিল, সহসাই সে হয়ে যাবে তোমার অন্তরঙ্গ বন্ধু।’ (সুরা ফুস্সিলাত : ৩৪)।

হজরত আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি যে-কোনো ব্যক্তির উপকার করেছি। পরে দেখা গেছে তার ও আমার মধ্যে এক স্নিগ্ধময় সম্পর্ক সৃষ্টি হয়ে গেছে। আর যার প্রতি কখনও আমার দ্বারা মন্দ ব্যবহার হয়ে গেছে, পরে দেখতে পেয়েছি- তার ও আমার মধ্যে সম্পর্কে মলিনতা সৃষ্টি হয়েছে।’ (উয়ুনুল-আখবার খ. ২, পৃ. ১৭৭)। সুতরাং দান-খয়রাত ও উপকার করার পরিণাম কখনও খারাপ হতে পারে না, যদি তাতে আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টিই উদ্দেশ্য থাকে এবং পরে কোনো রকম খোঁটা ও কষ্টদান না করা হয়।

বস্তুত উপকার করা অপেক্ষা কৃত উপকারকে হেফাজত করা অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, এমনিতে উপকার করা তো একটি নফল কাজ; কিন্তু তার হেফাজত করা ফরজ এবং নষ্ট করা মহাপাপ। সেই হেফাজতের জন্যই কর্তব্য খোঁটাদান থেকে বিরত থাকা। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মোমিনরা! তোমরা তোমাদের দান-সদকাকে প- করো না খোঁটাদান ও কষ্ট দেওয়ার দ্বারা।’ (সুরা বাকারা : ২৬৪)।

কারও উপকার করার পরে কোনো অবস্থাতেই যাতে খোঁটাদানের অপরাধ ঘটে না যায়, সে জন্য কয়েকটি নিয়ম অনুসরণ করা যেতে পারে।

১. উপকার করার সময় এবং তার পরও আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টিলাভের চেতনাকে অন্তরে জাগ্রত রাখা। কিছুতেই পার্থিব কোনও বিনিময়ের আশাবাদী না হওয়া। সে বিনিময় বৈষয়িক হোক বা সুনামণ্ডসুখ্যাতি হোক কিংবা হোক উপকৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে প্রশংসা ও কৃতজ্ঞতা।

২. যার উপকার করা হবে, উপকার করার সময় এবং তার পরও তার প্রতি শ্রদ্ধা বজায় রাখা। মনে করতে হবে প্রকৃতপক্ষে সেই আমার উপকারকারী। কেননা, আমার কাছে সাহায্য চেয়ে এবং আমার উপকার গ্রহণ করে সে আমাকে বিশেষ মর্যাদার আসনে বসিয়েছে। যেই উপকারের সাথে এরকম মানসিকতা থাকে, খোঁটা দেওয়ার মতো হীনতা তাকে স্পর্শ করতে পারে না। এ ব্যাপারে হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর একটি উক্তি প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেন, ‘আমি তিন ব্যক্তির বদলা দিতে সক্ষম নই। যে আমাকে প্রথম সালাম দেয়; যে আমাকে মজলিসে বসার সুযোগ করে দেয় এবং যে সালামণ্ডকালামের ইচ্ছায় আমার কাছে আসার জন্য নিজ পদযুগলকে ধুলোমলিন করে। আর চতুর্থ এক ব্যক্তি আছে- আমার পক্ষ থেকে এক আল্লাহ ছাড়া আর কেউ তাকে বদলা দিতে পারবে না। জিজ্ঞেস করা হল, সে কে? তিনি বললেন- ওই ব্যক্তি, যে কোনো বিপদের সম্মুখীন হয়েছে, তারপর সারা রাত চিন্তা করেছে সাহায্যের জন্য কার কাছে যাবে। অবশেষে আমাকেই তার উপযুক্ত মনে করল এবং আমার কাছে এসে তার সেই মসিবতের কথা বলল।’ (উয়ুনুল-আখবার খ. ২, পৃ. ১৭৭)।

৩. নিজের দান-খয়রাত ও উপকারকে ক্ষুদ্র গণ্য করা ও বিনয়ের সঙ্গে দান করা। অর্থাৎ কল্পনা করতে হবে যে, তার যা প্রয়োজন সে অনুপাতে আমি অতি সামান্যই করতে পারছি এবং আমার যা করণীয় ছিল, সে অনুযায়ী যা করছি তা খুবই নগণ্য। আর খোদা না করুন, যদি এটা কবুল না হয়, তবে তো নিতান্তই তুচ্ছ। মানুষ মানুষের উপকারার্থে কত কিছুই করছে। সে হিসেবে আমি যা করছি তা কোনো হিসাবেই আসে না।

৪. উপকারের বিষয়টিকে গোপন রাখা। অর্থাৎ যার যেই উপকার করা হবে, যথাসম্ভব তা গোপন রাখার চেষ্টা করতে হবে। হাদিস শরিফে বর্ণিত, সাত ব্যক্তি হাশরের ময়দানে আরশের ছায়াতলে জায়গা পাবে। তার মধ্যে এক ব্যক্তি হলো- ‘ওই ব্যক্তি, যে কোনো দান-সদকা করে এবং তা গোপন রাখে এমনকি তার বাম হাত জানে না ডানহাত কী খরচ করে।’ (বোখারি : ৬৬০; মুসলিম : ১০৩১)।

৫. উপকার করার কথা ভুলে যাওয়া। এক ব্যক্তি তার সন্তানদের উপদেশ দিয়েছিল- তোমরা যদি কারও কোনো উপকার করো, তবে তা ভুলে যেও। কেননা, তা স্মরণ রাখলে খোঁটা দেওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়। আর খোঁটা দিলে উপকার নিষ্ফল হয়ে যায়।

সর্বোপরি, উপকৃত ব্যক্তিরও কর্তব্য উপকারকারীর কাছে কৃতজ্ঞ থাকা। কেননা, হাদিসে এরশাদ হয়েছে- ‘যে ব্যক্তি তোমাদের কোনো উপকার করে, তোমরা তার বদলা দিও। যদি বদলা দেওয়ার মতো কিছু না পাও, তার জন্য দোয়া করো।’ (সুনানে আবু দাউদ : ১৬৭২; সুনানে নাসাঈ : ২৫৬৭; সহিহ ইবনে হিব্বান : ৩৪০৮)। আল্লাহতায়ালা আমাদের সবরকমের অহংকার ও লোক দেখানো আমল থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দিন। আমিন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত