ঢাকা ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

জাতীয় ঐক্যের সমর্থনে ৫০ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

জাতীয় ঐক্যের সমর্থনে ৫০ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

জাতীয় ঐক্যের সমর্থনে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ৫০ বিশিষ্ট নাগরিক। গতকাল শনিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার ফেসবুক পোস্টে বিবৃতিটি শেয়ার করেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক অভ্যুত্থানের মুখে স্বৈরাচারী শাসনের পতন ঘটে এবং শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। এরপর বাংলাদেশ নতুন সূচনার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এরপর অধ্যাপক ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার সমাজের সব অংশের ব্যাপক সমর্থন লাভ করে। বর্তমানে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানের প্রতি আস্থা পুনরুদ্ধার, অর্থনীতি পুনর্গঠন এবং গণতান্ত্রিক উত্তরণের পথ প্রশস্ত করে- এমন প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজের মুখোমুখি জাতি।

এই পটভূমিতে পতনশীল শাসকগোষ্ঠীর বাহিনী তাদের বিদেশি পৃষ্ঠপোষকদের প্রকাশ্য ও গোপন সমর্থন নিয়ে ভুল ও বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়ানো এবং সহিংসতার উসকানি দিয়ে দেশে সক্রিয়ভাবে বিভেদের বীজ বপন করছে। বিশেষ করে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিপীড়নের অতিরঞ্জিত, অলংকৃত এবং ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা প্রতিবেদনের একটি সমন্বিত প্রচারণা রয়েছে। এই প্রচারণার ফলে দুর্ভাগ্যবশত গত ২৬ নভেম্বর চট্টগ্রামে সরকারি আইনজীবী সাইফুল ইসলামকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। আমরা দ্ব্যর্থহীনভাবে এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই এবং দ্রুত পূর্ণাঙ্গ তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি দাবি করছি।

এতে আরও বলা হয়, যেকোনো সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের বিশ্বাসকে শেষ করে দেবে। তবে বাংলাদেশের জনগণ চরম সংযম দেখিয়েছে এবং দৃঢ়তার সঙ্গে সহিংসতার বৃদ্ধিকে প্রতিহত করেছে। হত্যাকারীরা কোনো সম্প্রদায়, ধর্ম বা ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে না। কিন্তু তারা পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার পৃষ্ঠপোষকদের এজেন্ট হতে পারে।

বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্তে যদি এমনটি প্রমাণিত হয় তবে এটি নিশ্চিত করবে যে ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরশাসক বাংলাদেশের জাতীয় ঐক্য, সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার জন্য সরাসরি হুমকি। ভারত থেকে হাসিনা বাংলাদেশের প্রতি ভয়ংকর হুমকি অব্যাহত রেখেছেন। এই প্রেক্ষাপটে, আমাদের বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের লক্ষ্যে সব গণতন্ত্রপন্থি শক্তিকে ধৈর্য ও সংযম অবলম্বন করতে হবে। যেকোনো উসকানির ডাক বা কার্যকলাপ আগুনে ঘি ঢেলে পতিত স্বৈরশাসকের উদ্দেশ্য হাসিলে সাহায্য করতে পারে। তাছাড়া, হাসিনা সরকার আমাদের দেশকে যে বিরাট অর্থনৈতিক ব্ল্যাকহোলে ছেড়ে দিয়েছে তা থেকে আমরা এখনও উত্তরণ হতে পারিনি। সাম্প্রদায়িক বা রাজনৈতিক সহিংসতা আমাদের অর্থনৈতিক পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করে তুলবে, দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে শঙ্কা তৈরি করবে। এ বিনিয়োগ এই মুহূর্তে খুবই প্রয়োজন।

এতে আরও বলা হয়, এই হুমকির মুখে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখার জন্য আমরা ধর্ম, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা, আদর্শ, লিঙ্গ, বয়স বা অন্য যেকোনো বৈশিষ্ট্য নির্বিশেষে সব বাংলাদেশির প্রতি আহ্বান জানাই। আমরা বাংলাদেশের ঐক্যবদ্ধ কণ্ঠের জন্য আমাদের সংহতি প্রকাশ করি।

বিবৃতি দাতাদের মধ্যে রয়েছেন- বাংলাদেশ গবেষণা বিশ্লেষণ ও তথ্য নেটওয়ার্কের আহ্বায়ক ড. রুমি আহমেদ খান, ডায়াস্পোরা অ্যালায়েন্স ফর ডেমোক্রেসির প্রতিষ্ঠাতা ড. শামারুহ মির্জা, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট ডা. শফিকুর রহমান, আইনজীবী এহতেশামুল হক, অর্থনীতিবিদ ও লেখক মো. জ্যোতি রহমান, বিজ্ঞানী ও কর্মী ড. ফাহাম আবদুস, প্রকৌশলী নুসরাত খান মজলিশ, বিজ্ঞানী ড. নুসরাত হোমায়রা, ড. সৈয়দ রউফ (পাবলিক সার্ভিস, কানাডা), অর্থনীতিবিদ ও সামাজিক উদ্যোক্তা নাজিয়া আহমেদ, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট মেজর শাফায়াত আহমদ (অব.), অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ও প্রকৌশলী ড. আহমদ হাবিবুর রহমান, শিক্ষাবিদ ও মানবাধিকার রক্ষাকারী সুলতান মোহাম্মদ জাকারিয়া, ড. মোবাশার হাসান, ইফাত তাবাসসুম, অধ্যাপক ড. সাইফুল খন্দকার, রূপম রাজ্জাক, ড. মোহাম্মদ মিয়া, ড. জেড চৌধুরী, আসাদ উল ইসলাম, এম রাশেদ, লেখক ও অ্যাক্টিভিস্ট আবু সাঈদ আহমেদ, মুনতাসির মামুন, আশরাফুল হাসান, জন ড্যানিলোভিজ, কাজী আহমেদ, তৌকির আজিজ, এহতাশাম হক, মুর্শিদ শালিন, আসিফ খান, মারিহা তাহসিন, সাইফ শাহ মোহাম্মদ, মাহমুদুল খান আপেল, ফয়সাল মাহমুদ, ড. ক্যাপ্টেন (অব.) খান সোবায়েল বিন রফিক, মো. সুবাইল বিন আলম, ইমতিয়াজ মির্জা, জায়েদ উল্লাস, আসিফ ইকবাল, সাইমুম পারভেজ, ডা. শাহাদ মুন্না, জিয়া হাসান, ফাহিম মাশরুর, সাইনুল হোসেন, জিয়া হাসান সিদ্দিক, রুশাদ ফরিদী, ড. ইসলামুল হক, ওয়াসিম আলিম ও রুবাইয়াত সারোয়ার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত