ধানমন্ডিতে ফ্ল্যাট বরাদ্দ

সাবেক দুই দুদক কমিশনার, সাত সচিবসহ ১২ কর্মকর্তাকে তলব

প্রকাশ : ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

নিয়ম ভঙ্গ করে ঢাকার ধানমন্ডিতে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট বরাদ্দের অভিযোগে সাবেক সাত সচিব, দুদকের সাবেক দুই কমিশনার, সাবেক দুই বিচারক এবং মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গত বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে জানতে জিজ্ঞাসাবাদ করা অনুসন্ধান দলের নিয়মিত কার্যক্রমের অংশ। যাঁদের তলব করা হয়েছে, তাঁরা হলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সাবেক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক খান ও মো. জহুরুল হক, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. ইউনুসুর রহমান, সাবেক সচিব এম এ কাদের সরকার, সাবেক সিনিয়র সচিব এম আসলাম আলম, সাবেক সচিব আকতারী মমতাজ, সাবেক সচিব মো. সিরাজুল হক খান, সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ, সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল ও সাবেক সিনিয়র জেলা জজ সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ, সাবেক সিনিয়র সচিব মো. আনিছুর রহমান এবং সাবেক সিনিয়র সচিব এস এম গোলাম ফারুক।

দুদকের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, ১৭, ১৮ ও ২১ সেপ্টেম্বর তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডাকা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ‘গৃহায়ণ ধানমন্ডি (প্রথম পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায় নীতিমালা ভেঙে উচ্চ মূল্যের ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়। ধানমন্ডি আবাসিক এলাকার ১৩ নম্বর (নতুন ৬/এ) সড়কের ৭১১ নম্বর (নতুন ৬৩) প্লটে নির্মিত ১৪ তলা ভবনে মোট ১৮টি ফ্ল্যাট ছিল। এর মধ্যে ৬০ শতাংশ (১২টি) সরকারি ও ৪০ শতাংশ (৬টি) বেসরকারি কোটায় বরাদ্দ হওয়ার কথা থাকলেও সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়।

দুদকে আসা অভিযোগে বলা হয়, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ‘দিনের ভোট রাতে নেওয়ার সঙ্গে জড়িত’ কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করতে শেখ হাসিনার আমলে এই ফ্ল্যাট বরাদ্দ দেওয়া হয়। গত ৫ মে বেসরকারি একটি টিভি চ্যানেল এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করলে দুদক অনুসন্ধানে নামে। ১২ মে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার কথা জানায় সংস্থাটি।

টেলিভিশন প্রতিবেদনে বলা হয়, ধানমন্ডি-৬ এর প্লট ৬৩ মূলত খাসজমি, যার বাজারমূল্য অত্যন্ত বেশি। অভিযোগ রয়েছে, শেখ হাসিনার নির্দেশে এ জমি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং সেখানে ১৪ তলা ভবন নির্মাণ করা হয়।

ভবনটিতে রয়েছে দুটি ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট, নিচতলাসহ দুই তলা গাড়ি পার্কিং। ডুপ্লেক্স ফ্ল্যাট দুটি বরাদ্দ পান দুদকের সাবেক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান ও জহরুল হক। অন্য ১০টি ফ্ল্যাট বরাদ্দ হয় মো. ইউনুসুর রহমান, কাদের সরকার, এম আসলাম আলম, আকতারী মমতাজ, মো. সিরাজুল হক খান, মো. মঞ্জুরুল বাছিদ, সৈয়দ আমিনুল ইসলাম, মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন, এম গোলাম ফারুক ও আনিছুর রহমানের নামে। দুদকের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অভিযোগের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে ধারাবাহিকভাবে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।