নভেম্বর থেকে খুলছে সেন্টমার্টিন

প্রকাশ : ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

পর্যটকদের জন্য সীমিত পরিসরে আগামী নভেম্বর থেকে চার মাসের জন্য খুলছে সেন্টমার্টিন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সচিব নাসরীন জাহান এ কথা জানিয়েছেন। এসময় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন উপস্থিত ছিলেন।

সেখানে প্রতিদিন ২ হাজার পর্যটক যাওয়ার সুযোগ থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমরা একটা সফটওয়্যার তৈরি করেছি,যেটা জাহাজ শিল্পের সঙ্গে ইন্টিগ্রেশন করার কাজ চলমান আছে। বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন সচিব নাসরীন জাহান। গত এক বছর সেন্টমার্টিনে পর্যটক নিয়ন্ত্রিত থাকার ফলে প্রাণ প্রকৃতি ফিরে আসার কথা বলছেন সচিব।

তিনি বলেন, দিন শেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি। সেন্ট মার্টিনের প্রবাল আমাদের একটা সম্পদ। গত এক বছর নিয়ন্ত্রণ করার ফলে প্রবালে কী পরিমাণ প্রাণের সঞ্চার হয়েছে সেটা আপনারা গেলে দেখতে পারবেন। তাই আমাদের পর্যটকদের জন্য একটা আচরণবিধি তৈরি করা হয়েছে। যখন আমরা দেখব সকলে পর্যটনবিধি মানছে, প্লাস্টিক কম ব্যবহার করছে, জীবাশ্মগুলো নষ্ট হচ্ছে না, তখন আমরা ধাপে ধাপে পর্যটকদের জন্য সময় বাড়ানোর পরিকল্পনা নেওয়া হবে। তবে এখন আগের বছরের মতই চলবে।

নাসরীন জাহান বলেন, আমরা প্রথম দুই মাস দিনের ট্যুর চালু করব। পরের দুই মাস রাতে থাকতে পারবে পর্যটকরা। কিন্তু প্রতিদিন পর্যটকের সংখ্যা ২ হাজারই থাকবে। এ বছর আমরা আগামী ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কন্টিনিউ করব।

নীতিমালাটা কি শুধু সেন্টমার্টিনের জন্য কিনা, এ প্রশ্নে উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন বলেন, “না, দেশের যত পর্যটন স্থান রয়েছে ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট যত কর্মকাণ্ড আছে, সেক্ষেত্রে সবার জন্য আচরণবিধি আমরা তৈরি করেছি। আগে আমাদের নিজেদের পর্যটক নিয়ে চিন্তা করতে হবে। তাদের ভ্রমণ পারিবারিক, সাশ্রয়ী, নিরাপদ ও আনন্দময় করাই আমাদের লক্ষ্য।”

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন সচিব বলেন, আমরা পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করছি। পর্যটন খোলার আগে আমাদের বিভিন্ন বিষয় দেখতে হয়- একদিকে যেমন পর্যটকদের নিরাপত্তা দিতে হবে, যেহেতু এটা আমাদের ইউএন ট্যুরিজমের হেরিটেজ জায়গা প্রবাল সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা আশা করছি পহেলা নভেম্বর থেকে আমরা খুলব। সীমিতভাবে প্রতিদিন ২ হাজার করে যাবে। তিনি বলেন, এ বিষয়ে একটা সফটওয়্যার এরই মধ্যে আমরা তৈরি করেছি। এখন জাহাজ শিল্পের সঙ্গে সেটি ইন্টিগ্রেশনের কাজ চলছে। আমরা আশা করি এটি নির্ধারিত সময়ে চালু করতে পারব। নভেম্বরের ১ তারিখ থেকে শুরু হবে। ‘আমরা মনে করছি প্রথমে দিনে ভ্রমণ শুরু হবে। শেষের দু-মাস রাতে (সেন্টমার্টিনে) থাকতে পারবে। তবে সংখ্যাটা ২ হাজারই থাকবে। এবার আমরা সম্ভবত ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কন্টিনিউ করবো’ বলেন নাসরীন জাহান।

গত এক বছরে বাংলাদেশে কত সংখ্যক বিদেশি পর্যটক এসেছেন জানতে চাইলে বিমান ও পর্যটন সচিব বলেন, ‘আমাদের ট্যুরিজম ডাটা সেন্টার এখনো হয়নি। ট্যুরিজম বোর্ড? পরিসংখ্যান বিভাগের সঙ্গে একত্র হয়ে ট্যুরিজম স্যাটেলাইট ডাটা চালুর উদ্যোগ নিয়েছি। এটা একটা রিয়েল টাইম ডাটা। এই মুহূর্তে সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারবো না, তবে ইমিগ্রেশন পুলিশ ও অন্যান্য তথ্য অনুযায়ী ২০২৪ সালে ৬ লাখ ২৫ হাজারের বেশি বিভিন্ন উদ্দেশ্যে বিদেশি টুরিস্টরা আমাদের এখানে এসেছেন। তবে সংখ্যা কমবেশি হতে পারে।’

পর্যটন সংশ্লিষ্টদের জন্য হচ্ছে আচরণ বিধিমালা: উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা একটি নীতিমালা প্রণয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছি। সারাদেশের যত পর্যটন স্থান রয়েছে, পর্যটন সংশ্লিষ্ট যত কর্মকাণ্ড আছে; সেক্ষেত্রে সবার জন্য আমরা আচরণবিধি তৈরি করছি।’

বিদেশি পর্যটকদের হার বেড়েছে কি না- জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘আগে আমাদের নিজস্ব পর্যটকদের নিয়ে চিন্তা করতে হবে। আমরা নিজেরা যারা পারিবারিক উদ্দেশ্যে যে ভ্রমণগুলো করি; সেগুলো নিরাপদ, সাশ্রয়ী ও আনন্দময় করার করার লক্ষ্য আমাদের। আমাদের নিজস্ব পর্যটকদের জন্য আমরা আরও কী ভালো ব্যবস্থা নিতে পারি। ভিসা জটিলতা আমাদের মনে হয় খুব একটা নেই। লজিস্টিক সমস্যা আছে। সামগ্রিকভাবে যখন আমাদের অবস্থার উন্নতি ঘটবে, আমরা মনে করি পর্যটন শিল্পের উন্নতি ঘটবে।’