‘অন্তর্বর্তী সরকার দেশকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে’
প্রকাশ : ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ঢাবি প্রতিনিধি
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট এবং একই দিনে জাতীয় নির্বাচন দিয়ে সরকার দেশকে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন, জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসুর) সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মুসাদ্দেক আলী ইবনে মোহাম্মাদ। গতকাল শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনের সামনে ইসরাফিল ফরাজীর পরিচালনায় জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ও চলমান পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।
মুসাদ্দেক আলী বলেন, গণ-অভ্যুত্থানের পর তিনটি কাজের জন্য এই সরকারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তাদের কাজ ছিল গণহত্যার বিচার, দেশ সংস্কার এবং একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন। কিন্তু সরকার এই ৩টি কাজ ছাড়া সব কিছুই করেছে। সর্বশেষ জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়েও দেশকে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। মুসাদ্দেক বলেন, এই সরকার চাঁদাবাজদের নিরাপত্তা দিচ্ছে। প্রশাসনে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করা হয়েছে। এসব কিছুই হচ্ছে কয়েকজন উপদেষ্টাদের কারণে। বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি থেকে এক অপরকে দোষারোপ করছে। ড. ইউনূসের কাছে তালিকা দিয়ে আসছে। অথচ রাষ্ট্রের মালিক দেশের জনগণের কাছে পরিষ্কার করছে না। অভিলম্বে সব জুলাইয়ের গাদ্দারদের নাম প্রকাশ করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জুলাই ঐক্যের সংগঠক ও ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক এবি জুবায়েল বলেন, জুলাই বিপ্লব পরবর্তী প্রায় দেড় বছর অতিক্রান্ত হচ্ছে। বৈষম্যহীন, সাম্য ও ন্যায়ভিত্তিক নতুন বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এ বিপ্লব সংগঠিত হলেও রাজনৈতিক দলগুলোর স্বার্থান্বেষী চিন্তা ও ভোগবাদী মানসিকতার ফ্যাসিবাদী আচরণ ক্রমেই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা কে দুর্বল করে তুলছে। দীর্ঘদিন পার হলেও জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দেওয়ার কাজ দোদুল্যমান ছিলো। সম্প্রতি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য গণভোটের তারিখ ঘোষণা করেছেন প্রধান উপদেষ্টা, যা প্রশংসনীয়। কিন্তু আমাদের জন্য অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশে স্বাক্ষর করেছেন ফ্যাসিবাদের সহযোগী রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। রাজনৈতিক দলগুলোর অনৈক্য ও পরস্পরের রেষারেষি আমাদেরকে এ কলঙ্কের মুখোমুখি করেছে। যারা জুলাই সনদ চায়নি, বারবার এই সনদ বাস্তবায়নের কার্যক্রম কে নানান জটিলতা দেখিয়ে বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে তাদেরকে ইতিহাসের কাছে এই কলঙ্কের দায় মেটাতে হবে। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের পূর্বে জুলাই সনদের গণভোট আয়োজনের জন্য আমরা বারবার দাবি জানিয়েছিলাম। কিন্তু সরকার কিছু রাজনৈতিক দলের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে জাতীয় নির্বাচনের দিনই গণভোটের আয়োজন করছে। কিন্তু এই গণভোট আয়োজনের প্রক্রিয়া নিয়ে জাতির সামনে ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। কোন প্রক্রিয়াতে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে তা এখনো জানানো হয়নি। বিশেষ করে রাজনৈতিক সহিংসতায় কোনো কেন্দ্রের ভোট স্থগিত হলে সে কেন্দ্রের গণভোটের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত কি হবে তা বিশাল প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অস্পষ্টতা আগামী নির্বাচনকে একটি অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত দ্রুতই জনমনের এই বিভ্রান্তি দূর করা।
