ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর না থাকলে পোস্টাল ব্যালটের ভোট বাতিল

প্রকাশ : ২১ নভেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশি ভোটারদের পোস্টাল ব্যালটের (আইটি সাপোর্টেড) মাধ্যমে ভোটদানের জন্য নিবন্ধন শুরু হয়েছে। এই লক্ষ্যে পোস্টাল ভোটিং নিয়ে পরিপত্র জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিলেই কেবল হবে না। ভোটারকে একটি ঘোষণাপত্রও সই করতে হবে। অন্যথায় তার ভোটটি অবৈধ বলে গণ্য হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার পোস্টাল ব্যালট ভোটিং নিয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) উপ-সচিব মোহাম্মদ মনির হোসেনের সই করা এ সংক্রান্ত এক পরিপত্র থেকে এই তথ্য জানা যায়। পরিপত্রে পোস্টাল ভোটিংয়ের নিয়ম তুলে ধরা হয়েছে।

ভোটদানের নিবন্ধন পদ্ধতি : (ক) নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় প্রবাসী ভোটার যে দেশ থেকে ভোট দিতে ইচ্ছুক কেবল সেই দেশের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করতে হবে। (খ) পোস্টাল ব্যালট প্রাপ্তি এবং ভোট প্রদানের জন্য ‘গুগল প্লে স্টোর/অ্যাপ স্টোর’ থেকে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ মোবাইল অ্যাপ ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে হবে। (গ) ব্যবহারকারী বাংলা/ইংরেজি যেকোনও একটি ভাষা নির্বাচন করে অ্যাপে নিবন্ধনের নিমিত্তে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও নির্দেশাবলি সম্পর্কে জানতে পারবেন। (ঘ) আবেদনকারী নিয়ম অনুযায়ী নিবন্ধন করবেন। ওটিপি, লাইভলিনেস (খরাবষরহবংং) ও এনআইডি যাচাই করে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। (ঙ) বিদেশে ব্যালট প্রাপ্তি নিশ্চিতকল্পে নির্ভুল ঠিকানা দেওয়া আবশ্যক।

রিটার্নিং কর্মকর্তার পাঠানো প্যাকেটে যা থাকবে : ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ মোবাইল অ্যাপে নিবন্ধিত সব ভোটারের নিকট পর্যায়ক্রমে ব্যালট পেপার পাঠাবে ইসি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নিবন্ধিত ভোটারদের প্রদত্ত ঠিকানায় নির্বাচন কমিশনের পাঠানো পোস্টাল ব্যালটসহ খাম পাবেন। খাম পেয়ে পরপরই ভোটার ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ মোবাইল অ্যাপে লগইন করে খামের ওপর দেওয়া কিউআর কোডটি স্ক্যান করবেন। এতে তিনি যে ব্যালট পেপারটি হাতে পেয়েছেন তা সিস্টেমে শনাক্ত হবে। ভোটাররা নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত বহির্গামী খামে একটি পোস্টাল ব্যালট সংবলিত খামের মধ্যে পোস্টাল ব্যালট পেপার, এক পাশে ভোট দেওয়ার নির্দেশাবলি ও ওপর পাশে একটি ঘোষণাপত্র সংবলিত একটি পৃথক কাগজ এবং একটি ফেরত খাম পাবেন; যেখানে সংশ্লিষ্ট আসনের রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা মুদ্রিত থাকবে।

ভোট দিয়ে ডাকযোগে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পাঠাতে হবে : (ক) পোস্টাল ভোটিং প্রক্রিয়ায় প্রেরিত ব্যালট পেপারে সকল প্রতীক মুদ্রিত থাকবে, যার প্রতিটি প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘর রয়েছে। ভোট দেওয়ার আগে ভোটাররা নির্দেশনাপত্র পড়ে ঘোষণাপত্রে যথাযথভাবে ব্যালট পেপারের ক্রমিক নম্বর, ভোটারের নাম, জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর উল্লেখ করে প্রদত্ত স্থানে স্বাক্ষর করবেন। নিরক্ষর/অক্ষম ব্যক্তি অন্য একজন বৈধ ভোটারের সাহায্যে এর সংশ্লিষ্ট অংশ পূরণ করে সত্যায়ন করে স্বাক্ষর করবেন। এই ঘোষণাপত্র/সত্যায়নপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) ছাড়া ব্যালট পেপারটি বৈধ হিসাবে গণ্য হবে না। (খ) প্রতীক বরাদ্দ সম্পন্ন হলে অ্যাপের মাধ্যমে অথবা নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইট হতে ভোটারগণ অবগত হবেন। ভোট প্রদানের জন্য ভোটাররা ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ মোবাইল অ্যাপে লগইন করে সংশ্লিষ্ট আসনের প্রার্থীদের তালিকা দেখতে পাবেন এবং নির্দেশিকাতে দেওয়া পদ্ধতিতে ব্যালট পেপারে মুদ্রিত প্রতীকের পাশে ফাঁকা ঘরে টিক (?) চিহ্ন কিংবা ক্রস (দ্ধ) চিহ্ন দেবেন। ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ মোবাইল অ্যাপে ভোটদান পদ্ধতির ভিডিও টিউটোরিয়াল বা ডিজিটাল কনটেন্ট থাকবে। (গ) পোস্টাল ব্যালট পেপারে ভোটার ভোট চিহ্নিত করার পর শুধু ব্যালট পেপারটি ছোট খামে রেখে খামটি বন্ধ করবেন, অতঃপর উক্ত ব্যালট পেপার সংবলিত খামটি এবং স্বাক্ষরিত ঘোষণাপত্রটি রিটার্নিং অফিসারের ঠিকানা মুদ্রিত খামে প্রবেশ করিয়ে তা বন্ধ করে বন্ধকৃত খামটি ডাকযোগে দ্রুত প্রেরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

উভয় খামই সেলফ-অ্যাডহেসিভযুক্ত থাকবে ফলে সেলফ-অ্যাডহেসিভ অংশের উপরিভাগের টেপটি খুলে নিলেই খাম বন্ধ হবে। খামটি পাঠানোর জন্য কোনও ডাক মাশুল প্রেরককে প্রদান করতে হবে না। এটি সরকারের পরিশোধিত থাকবে। পোস্টাল ভোট গণনা শুরু করার পূর্ব পর্যন্ত প্রাপ্ত পোস্টাল ব্যালট পেপারগুলোই কেবল গণনার আওতায় আসবে। (ঘ) নির্বাচন কমিশন হতে কেন্দ্রীয়ভাবে পোস্টাল ব্যালট ভোটারের নিকট প্রেরণের পর হতে রিটার্নিং কর্মকর্তার নিকট ফেরত আসা পর্যন্ত সমগ্র প্রক্রিয়াটির বিভিন্ন পর্যায়ে ব্যালটের অবস্থান মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা যাবে। ভোটারগণও স্ব-স্ব মোবাইল থেকে চড়ংঃধষ ঠড়ঃব ইউ মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করে নিজ ব্যালটের অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন।

রিটার্নিং অফিসারের ব্যালট গ্রহণ ও সংরক্ষণ : রিটার্নিং অফিসার ডাকযোগে পোস্টাল ব্যালটের খামসমূহ প্রাপ্তির পর তার ওপর দেওয়া কিউআর কোড স্ক্যান করার মাধ্যমে প্রাপ্ত রেকর্ড রাখবেন, যা পোস্টাল ব্যালট বিতরণ ও প্রাপ্তি তালিকা হিসাবে সফটওয়্যার থেকে জেনারেট হবে। সফটওয়্যার থেকে জেনারেট করা এই ফরমে রিটার্নিং অফিসার স্বাক্ষর করবেন।

যথাযথ স্বাক্ষরবিহীন ঘোষণাপত্র/ ঘোষণাপত্রবিহীন ব্যালটের খাম বাতিল/অবৈধ বলে সংরক্ষণ করবে রিটার্নিং অফিসার।