ইসিকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা স্বাগত বিএনপি-জামায়াতের

প্রকাশ : ১২ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ বাস্তবায়ন আদেশের ওপর গণভোটের তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল বৃহস্পতিবার এক শুভেচ্ছাবার্তায় তিনি বলেন, ‘এই তফসিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অভিযাত্রা একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক অতিক্রম করলো। ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের পর দেশ এখন যে নতুন পথে অগ্রসর হচ্ছে— এই নির্বাচন ও গণভোট সেই পথরেখাকে দৃঢ় করবে। গণমানুষের মতকে প্রাধান্য দেবে এবং নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি আরও সুসংহত করবে।’ তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন তাদের সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন করবে স্বাধীনভাবে, নিরপেক্ষভাবে এবং সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের সঙ্গে। নির্বাচন ও গণভোটকে উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সম্পূর্ণ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করবে।’

দেশের রাজনৈতিক সব দল, প্রার্থী, গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ এবং সর্বোপরি দেশের জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই নির্বাচন ও গণভোটকে একটি জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করুন। ভিন্নমতের প্রতি শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ এবং গণতান্ত্রিক আচরণ আমাদের সামনের দিনগুলোকে আরও স্থিতিশীল করবে।’ তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ নতুন ভবিষ্যতের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। আপনাদের সবার সক্রিয় অংশগ্রহণ ও দায়িত্বশীল আচরণের মধ্য দিয়ে আমরা একটি আধুনিক, ন্যায়ভিত্তিক ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র নির্মাণে সফল হবো— এই আমার দৃঢ় বিশ্বাস।’

তফসির ঘোষণার মধ্যদিয়ে দেশ কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা শুরু করেছে- বিএনপি : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলকে বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য নতুন অধ্যায় হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, তফসিলের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে বাংলাদেশ একটি কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের দিকে যাত্রা শুরু করেছে। যে গণতন্ত্রে উত্তরণের জন্য দেড় যুগেরও বেশি সময় ধরে এ দেশের জনগণ জীবন বাজি রেখে লড়াই-সংগ্রাম করেছে। বৃহস্পতিবার তফসিল ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলেন তিনি। মির্জা ফখরুল আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী নির্বাচনে গণতন্ত্রপ্রিয় সব দল অংশ নেবে। একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট অনুষ্ঠিত হবে এবং সেই নির্বাচন নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) কখনোই কোনো শঙ্কা ছিল না। বিএনপি বরাবরই বলে এসেছে নির্বাচনই সংকট উত্তরণের একমাত্র পথ। সেই পথে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হওয়ায় ঘোষিত তফসিলকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।

দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি- জামায়াত : নির্বাচন কমিশন (ইসি) কর্তৃক আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তফসিল ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেন, আজ (বৃহস্পতিবার) অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর নির্বাচনের শিডিউল ঘোষণা করা হয়েছে। এই ঘোষণাকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। তফসিল ঘোষণার মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা থাকলে সেটা কেটে যাবে। তিনি বলেন, এখন নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার জন্য কমিশনকে নানা গুরুদায়িত্ব পালন করতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, নির্বাচনকে অর্থবহ করতে নির্বাচন কমিশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দায়িত্ব পালন করতে হবে। এক্ষেত্রে কোনো দুর্বলতা আমরা আশা করবো না। আমরা প্রত্যাশা করবো সুষ্ঠু-সুন্দর গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠ করতে আমাদের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা থাকবে। আশা করছি জনগণ একটি উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেবে। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থানের যে প্রত্যাশা আমাদের, সেটা পূরণ হবে।

জামায়াতে ইসলামীর এই নেতা বলেন, আমাদের যেসব দাবি ছিল কিছু পূরণ হয়েছে, কিছু পূরণ হয়নি। আমরা চাইবো গণভোটে যেন হ্যাঁ জয়যুক্ত হয়। সেই চেষ্টা আমাদের অব্যাহত থাকবে।

৮ দলের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা নিয়ে তিনি বলেন, জামায়াতে ইসলামী ৩০০ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। ৮ দলের শীর্ষ নেতারা বসছে, শীগগির আমরা ৮ দল চূড়ান্ত প্রার্থী দেবো। আমাদের লক্ষ্য সর্বোচ্চ সংখ্যক আসনে বিজয়ী হওয়া, কত আসনে প্রার্থী দেবো এটা গুরুত্বপূর্ণ নয়।