ষড়যন্ত্রকারীরা জনগণের শক্তির কাছে পরাজিত হবে : আমির খসরু
প্রকাশ : ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ষড়যন্ত্রকারীরা বারবার গণতন্ত্রকে ধ্বংসের চেষ্টা করেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা জনগণের শক্তির কাছেই পরাজিত হবে। আমির খসরু বলেন, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন শুধু বিএনপির জয় নয়, এটি হবে গণতন্ত্রের জয়। বিএনপি এই দেশে গণতন্ত্রের পথপ্রদর্শক। তাই এই দায়িত্ব আমাদের পালন করতে হবে। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকার ফার্মগেটে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিজয়ের মাস উপলক্ষে আয়োজিত সাতদিনব্যাপী ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মসূচির শেষদিনের কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে তিনি এসব কথা বলেন। এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতারা বক্তব্য দেন।
আমির খসরু বলেন, ‘আমাদের নেতা দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আগামীর বাংলাদেশ গড়ার যে প্রত্যয়, রূপরেখা ও স্বপ্ন দেখছেন তার অংশ হিসেবে আজকের এই দেশ গড়ার কর্মসূচি।’ তিনি বলেন, আগামী ২৫ তারিখে তারেক রহমান বাংলাদেশে ফিরে আসবেন। এটি বিএনপি ও জনগণের জন্য আনন্দের সংবাদ। তারেক রহমানকে ‘গণতন্ত্রের টর্চ বেয়ারার’ হিসেবে অভিহিতি করে তিনি বলেন, যার নেতৃত্বে জাতি ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে সফল হয়েছে, সেই আন্দোলনের নায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বেই দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে যাবে। ইনকিলাব মঞ্চের নেতা ওসমান হাদির ওপর গুলিবর্ষণের প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সভাপতির ওপর হামলা হয়েছে। গত শুক্রবারও আরেকটি ঘটনা ঘটেছে এমন সময়ে, যখন দেশের স্থিতিশীলতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। এ ধরনের সহিংসতা উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন, গত ১৭ বছর ধরে দেশের মানুষ নিপীড়ন ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। ৫ আগস্টের পর মানুষের মনোজগতে যে পরিবর্তন এসেছে, তা মাথায় রেখে একটি স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়ার রাজনীতি ধারণ করেছেন তারেক রহমান।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আমির খসরু বলেন, বর্তমানে দেশে ‘মবোক্রেসির রাজনীতি’ দেখা যাচ্ছে। অসম্মান, অশালীন ভাষা এবং অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করার রাজনীতি গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর। বিএনপি শান্তিপূর্ণ ও সহনশীল রাজনীতির প্রত্যয় ঘোষণা করেছে। সেখান থেকে সরে দাঁড়ানো যাবে না। তিনি আরও বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওসমান হাদিকে দেখতে গিয়ে যে আচরণ করা হয়েছে, তা আগামীর নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। জনগণ এমন রাজনীতি দেখতে চায় না। জাতির মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।
গণতন্ত্রের পথ থেকে বিএনপি কখনও বিচ্যুত হয়নি উল্লেখ করে এই সিনিয়র নেতা বলেন, আওয়ামী লীগ একদলীয় বাকশাল কায়েম করেছিল। বিপরীতে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ, বেগম খালেদা জিয়ার আদর্শ এবং তারেক রহমানের আদর্শের বার্তা ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে। দেশ পরিচালনার ভবিষ্যৎ রূপরেখা তুলে ধরে আমির খসরু বলেন, গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের সুফল দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। শুধু রাজনৈতিক গণতন্ত্র নয়, অর্থনীতিতেও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ক্ষমতায় যাওয়ার প্রথম দিন থেকেই এ কাজ শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, ‘উন্নয়নের নামে মেগা প্রকল্প নয়, বরং শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে বিনিয়োগই হবে বিএনপির অগ্রাধিকার। মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।’ বিএনপি ক্ষমতায় গেলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, ফ্যামিলি কার্ড, কৃষক কার্ড ও কর্মসংস্থানসহ আটটি খাতে কীভাবে কাজ করা হবে, তা নিয়ে দল ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জন্য ধারাবাহিক কর্মশালা ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। গতকাল এ কর্মসূচির শেষ দিনে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ওলামা দলসহ বিভিন্ন সহযোগী সংগঠন অংশ নিচ্ছে।
