তরমুজের গুড় আর চুইঝালের গুঁড়া তৈরির পর এবার খুলনায় তৈরি করা হয়েছে সজনে পাতার গুঁড়া। পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ এই সজনে পাতার গুঁড়া যাবে দুবাইয়ে। খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার নবদ্বীপ মল্লিক এই গুঁড়া তৈরি করছেন। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ডুমুরিয়ার বরাতিয়া গ্রামে দেড় বিঘা জমিতে ৪০০টি গাছ লাগিয়ে সজনেপাতার বাণিজ্যিক চাষ শুরু করেছেন নবদ্বীপ। মাত্র আট মাসে তিনি এই কাজে সফলতার মুখ দেখেন। সাতক্ষীরার ব্যবসায়ী আবু নাসের মোহাম্মদ আবু সাঈদের সহযোগিতায় সজনেপাতার গুঁড়া দুবাইয়ে রপ্তানি করবেন নবদ্বীপ মল্লিক। তিনি বলেন, ডুমুরিয়ার বরাতিয়ায় দেড় বিঘা জমিতে ৪০০ পিস সজনেগাছের চারা লাগিয়েছিলাম জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে। সেখান থেকে সজনে তুলেছি এবং বিক্রিও করেছি। সজনে হওয়ার পর গাছ ছাঁটাই করতে হয়। তাতে দেখলাম প্রচুর পরিমাণে সজনে পাতা ফেলে দিতে হবে। এ বিষয়ে আবু নাসের মোহাম্মদ আবু সাঈদ ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করি। তিনি তখন আমাকে বলেন, পাতাগুলো শুকিয়ে গুঁড়া করে পাউডার বানালে কেমন হয়? আমি বলি, ভালো হয়। তখনই সজনে পাতা শুকিয়ে পাউডার বানিয়ে বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই। যেহেতু এই পাতা দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় না, তাই শুকিয়ে গুঁড়া করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দুই সপ্তাহ আগে গাছ থেকে প্রায় শত কেজি পাতা কেটে শুকানো হয়। চার-পাঁচ দিন রোদে শুকানোর পর স্থানীয় মিলে গুঁড়া করে ১৮ কেজি সজনে পাতার গুঁড়া পেয়েছি। সজনে পাতার কিছু গুঁড়া সাতক্ষীরার একটি শপিং মলে এবং বৃক্ষমেলায় বিক্রি করা হয়েছে। আর বাকি সজনে পাতার গুঁড়া দুবাইয়ে রপ্তানির জন্য প্যাকিং করে মজুত রাখা হয়েছে। এই পাউডার ২ হাজার টাকা কেজি মূল্যে দুবাইয়ে পাঠানো হবে। স্থানীয় কৃষকরা বলেন, আমরা সজনে উৎপাদন করে সেগুলো বাজারে বিক্রি করেছি। আর পাতা অনেকে রান্না করে খেয়েছে। তবে এবারই প্রথম দেখলাম নবদ্বীপ সজনে পাতা দিয়ে পাউডার তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তার দেখাদেখি আমরাও এটা করার চেষ্টা করব। নবদ্বীপ দুবাইয়ে যে গুঁড়া পাঠাচ্ছেন, তা দুই হাজার টাকা কেজিতে। মূল্য কম থাকায় বাংলাদেশের সজনের গুঁড়া বেশি বিক্রি হবে, যা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ভূমিকা রাখবে।