ঢাকার কেরানীগঞ্জে বিভিন্ন ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে গ্রীষ্মকালীন টমেটো। জমির ওপর পলিথিনের সেট নির্মাণ করে বিশেষ পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে এ টমেটো। অফ সিজনে টমেটো চাষ করে ফলন ভালো হওয়ায় ও বাজারে ভালো দাম পাওয়ায় গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে কৃষকের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিচ্ছে।
জুন-জুলাই মাসে টমেটো চারা রোপণ করে আগস্ট, সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাস পর্যন্ত ফলন পাওয়া যায়। শীতকালীন টমেটো সংরক্ষণ করে গ্রীষ্মকালে খেলে এর পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই গ্রীষ্মকালে উৎপাদিত টমেটো টাটকা হওয়ায় ও এর পুষ্টিগুণ ভালো হওয়ায় বাজারে এর ভালো চাহিদা রয়েছে এবং কৃষক ভালো দামও পাচ্ছে।
কেরানীগঞ্জের রুহিতপুর কলাতিয়া ও হযরতপুরসহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ হচ্ছে। এ টমেটো কেরানীগঞ্জ ও রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে।
রোহিতপুর ইউনিয়নের কৃষক আফজাল হোসেন বলেন, গ্রীষ্মকালীন সময় টমেটো চাষ আমাদের কাছে নতুন। আমি কৃষি অফিসের পরামর্শে এ বছরেই প্রথম ৩ শতাংশ জমির ওপর টমেটো চাষ করি। বিশেষ পদ্ধতিতে চাষ করার ফলে শীতকালীন সময় উৎপাদিত সমপরিমাণ টমেটো এ সময় উৎপাদিত হচ্ছে। শীতকালীন সময় আমরা টমেটো ১০ থেকে ১৫ টাকায় প্রতি কেজি বিক্রি করি এতে উৎপাদন খরচ বাদে বেশি একটা লাভ থাকে না। আর এ বছর গ্রীষ্মকালীন সময় উৎপাদিত টমেটো আমি ১২০ থেকে ১৪০ টাকা প্রতি কেজি দরে বিক্রি করেছি। প্রথম বছর অল্প জমিতে টমেটো চাষ করলেও ভালো লাভবান হয়েছি।
কলাতিয়া ইউনিয়নের কৃষক মহাসিন মিয়া বলেন, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল আমীন স্যার নিজে আমার জমিতে এসে গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের পদ্ধতি শিখিয়েছেন। তার পরামর্শে এ বছর গ্রীষ্মকালীন সময় টমেটো চাষ করে ভালো ফলন পেয়েছি এবং ভালো লাভবান হয়েছি। আগামী বছর আরও বেশি জমিতে গ্রীষ্মকালীন সময় টমেটো চাষ করব।
এ ব্যাপারে কেরানীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল আমীন বলেন, কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকদের গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষের ব্যাপারে উৎসাহ, প্রশিক্ষণ ও বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকি। ফলে এ বছর কেরানীগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নে কৃষকরা গ্রীষ্মকালীন সময় টমেটো আবাদ করে ভালো লাভবান হয়। গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষ পদ্ধতি কিছুটা ব্যতিক্রম। বৃষ্টিতে টমেটো গাছের গোড়ায় যাতে পানি জমে না যায়, এজন্য প্রতিটি গাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে উঁচু করে দিতে হয়। অতি বৃষ্টি ও অতিরিক্ত তাপের হাত থেকে রক্ষর জন্য টমেটো গাছের ওপর পলিথিনের সেট তৈরি করতে হয়। শীতকালীন সংরক্ষণ করা টমেটোর চেয়ে গ্রীষ্মকালীন টমেটো টাটকা হওয়ায় এর পুষ্টিগুণ বেশি থাকায় এ টমেটোর প্রতি জনগণের আগ্রহও বেশি। এছাড়া বাজার দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক গ্রীষ্মকালীন টমেটো চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।