কৃত্রিম মরুভূমিতে দুম্বা চাষ আয়ের নতুন দিশা

আছে পাহাড়, সমতল আর সমুদ্র। কিন্তু এই বাংলায় কোনো মরুভূমি নেই। তবু সৌদি আরবের দুম্বা পালন হচ্ছে? হ্যাঁ, এটা সত্যি। বাড়িতেই ছোট আকারের কৃত্রিম মরুভূমি বানিয়ে দুম্বা পুষছেন মিরাজুল শেখ। এতে বাণিজ্যিকভাবে সাফল্যও অর্জন করেছেন তিনি। বাড়িতে দুম্বা লালন-পালন করে এখন গোটা বাংলাকে দিশা দেখাচ্ছেন মিরাজুল। জানা গে ছে, কোরবানির ঈদ এলেই মিরাজুল শেখের খামারমুখো হন ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায়ের বহু ধনী ব্যক্তি। কয়েক লাখ টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে যান আরবীয় জাতের দুম্বা। মিরাজুলের কথায়- আমি কোরবানির সময় দেখতাম, একেকটি দুম্বার দাম ২ লাখ থেকে ৩ লাখ টাকা। কেউ আবার ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা দিয়েও কোরবানির জন্য দুম্বা কিনছেন। আমি রাজস্থান মরুভূমি এলাকায় গিয়ে দেখলাম, সেখানে বাড়িতেই দুম্বা লালন-পালন করা হচ্ছে। ওদের কাছ থেকে দুম্বা কিনে এনে বিক্রি করতাম। এখন লালন-পালনের পদ্ধতি জেনে এসে বাড়িতেই খামার তৈরি করে চাষ শুরু করেছি। এতে লাভ ভালোই হচ্ছে। বলতেই পারি, দুম্বা পুষলে এক বছরেই লাখপতি হতে পারবেন। বাংলার আবহাওয়াও ধীরে ধীরে দুম্বা পালনের অনুকূল হয়ে উঠছে, দাবি মিরাজুলের। তার পরামর্শ, এই রাজ্যেও দুম্বা পালনের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। তবে রাজস্থানের মতো মরুভূমি এলাকা থেকে একটু প্রশিক্ষণ নিয়ে আসতে হবে। কী এই দুম্বা? চর্বিযুক্ত মোটা লেজওয়ালা ভেড়ার মতো দেখতে এক ধরনের প্রাণী। তবে এর পেছনের অংশ ভারী। ভেড়ার মতোই দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। চর্বিযুক্ত মাংস উৎপাদনে ছাগল-ভেড়ার চেয়ে বেশি কার্যকরী। কোরবানির ঈদের সময় দুম্বার চাহিদা খুব বেড়ে যায়। অনেকেই কোরবানির জন্য সুদূর তুরস্ক কিংবা সৌদি আরব থেকেও দুম্বা নিয়ে আসেন। দুম্বার প্রচুর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। খাসি বা ছাগল নয়, কোরবানির জন্য ইদানীংকালে বাড়ছে দুম্বার চাহিদাও। মিরাজুল বছর দুয়েক আগে নিজেই দুম্বা চাষ শুরু করেন। রোজ এই দুম্বাদের ঘাস, কাঁঠালপাতা ও খড় খাওয়ানো হয়। মাত্র ৬ থেকে ৭ মাস বয়সেই বড় হয়ে ওঠে এই দুম্বা। মিরাজুল জানান, বাড়িতে দুম্বা পুষতে হলে খামারে টেবিল ফ্যানের হাওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। দিনের বেলায় দুম্বা বাড়ি বা খামার থেকে বের হয় না। সন্ধ্যার পর এবং খুব ভোরে ওদের ঘুরতে নিয়ে যেতে হয়। একেকটি দুম্বা এক থেকে দেড় কুইন্টাল ওজনের হয়ে থাকে। কোরবানিতে একেকটি দুম্বা দেড় থেকে ২ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন মিরাজুল।