ঢাকা ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২৪ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

দুই মামলায় খালাস পেলেন সালাহউদ্দিন আহমদ

দুই মামলায় খালাস পেলেন সালাহউদ্দিন আহমদ

কক্সবাজারের বৃহত্তর উপজেলা চকরিয়ার আলোচিত চরণদ্বীপ এলাকার চিংড়িঘেরে হামলা ও লুটপাটের ‘মিথ্যা অভিযোগে’ দায়ের করা দু’টি মামলায় আদালত থেকে বেখসুর খালাস পেয়েছেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও কক্সবাজার-০১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ। তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক আখতার জাবেদের আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করেন। একই সাথে ২০০৭ সালে তৎকালিন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে করা এ দুটি ‘মিথ্যা’ মামলা থেকে তাকে বেখসুর খালাস দিতে আবেদন করেন।

সালাহউদ্দিন আহমদ দুপুর ২টার দিকে তার পেকুয়া উপজেলার নিজের বাড়ি থেকে এসে কক্সবাজার শহরে আদালত পাড়ায় হাজির হন। এ সময় শত শত আইনজীবী ও বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আহমদ স্লোগান দিয়ে তাকে স্বাগত জানান। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আখতার জাবেদ দু’টি মামলারইলেন কার্যক্রম স্থগিত করে সালাহউদ্দিন আহমদসহ সকল আসামিকে বেখসুর খালাস দেন। সুত্র মতে, খালেদা জিয়ার নেতৃত্বাধীন বিএনপি সরকারের বিদায়ের পর ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলের সুবিধা নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদকে প্রধান আসামি করে ওই দুটি মামলা করা হয়।

মামলাগুলোতে সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও চকরিয়া উপজেলা ও পৌর বিএনপি এবং অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়। এ দুটি মামলারই বাদী মাহমুদুল হক নামের একজন ব্যক্তি। এজাহার সূত্র মতে, দুটি মামলার একটিতে ২৩ জন ও অন্যটিতে ৩৪ জনকে আসামি করা হয়েছিল। এদের মধ্যে সালাহউদ্দিন আহমদ ছাড়াও বিএনপি নেতা এনামুল হক, নুরুল ইসলাম হায়দারসহ অন্য নেতাকর্মীরা রয়েছেন। এসব মামলার সকল আসামিই সালাহউদ্দিন আহমদের ঘনিষ্ট রাজনৈতিক সহকর্মী। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, চিংড়িঘেরে হামলা কিংবা দখলবাজির মতো ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত আওয়ামী লীগই এসব মামলা করিয়েছিল।

সালাহউদ্দিন আহমদ সংশ্লিষ্ট সুত্র মতে, ২০০৭ সালে দায়ের করা এসব ‘মিথ্যা মামলা’য় সালাহউদ্দিন আহমদ নিয়মিত আদালতে হাজিরা দিতেন এবং স্থায়ী জামিনে ছিলেন। কিন্তু ২০১৫ সালে স্বৈরাচারি শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করতে গিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় মুখপাত্রের দায়িত্ব পালনকালে সাদা পোষাকধারি আইন শৃংখলা রক্ষাকারি বাহিনীর হাতে ‘গুম’ হন সালাহউদ্দিন আহমদ। দীর্ঘ ৬২ দিন গুম থাকার পর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং শহরে চোখ বাঁধা অবস্থায় তাঁকে ফেলে আসা হয়। তখন থেকে তিনি দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর শিলং শহরে নির্বাসিত জীবন কাটিয়েছেন। এই সময়ে এ দুটি মামলাসহ অন্যসব রাজনৈতিক মামলায় হাজিরা দিতে পারেননি তিনি।

এদিকে আদালতে সালাহউদ্দিন আহমদের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন কক্সবাজার জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পিপি অ্যাডভোকেট শামীম আরা স্বপ্না, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি তওহিদুল আনোয়ার, অ্যাডভোকেট আবু সিদ্দিক ওসমানীসহ শতাধিক আইনজীবী। অ্যাডভোকেট আবু সিদ্দিক ওসমানী জানান, সরকারপক্ষ দীর্ঘ ১২ বছরেও মামলা দুটিতে সাক্ষী হাজির করতে না পারায় দুটি মামলাই খারিজ করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০০৭ সালে দায়ের করা মামলা দুটির চার্জ গঠন হয় ২০১২ সালে। তারপর দীর্ঘ ১২ বছর পার হলেও কোনো সাক্ষী হাজির হয়নি আদালতে। রাষ্ট্রপক্ষও তাদের ব্যর্থতা স্বীকার করে নিয়েছেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত