ঢাকা ১৪ অক্টোবর ২০২৪, ৩০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

বন্ধ্যাত্বের হার বাড়ছে ঘেরের নারী শ্রমিকদের

অধিকার বঞ্চিত নির্মাণ, চা ও ঘের শ্রমিকরা

অধিকার বঞ্চিত নির্মাণ, চা ও ঘের শ্রমিকরা

খাদ্য, বাসস্থান, চিকিৎসর মতো মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন দেশের নির্মাণ খাতের শ্রমিক এবং চা বাগান ও চিংড়ি ঘেরের শ্রমিকরা। এর মধ্যে ঘের শ্রমিকরা শ্রম আইনের আওতায় না থাকায় তারা সব ধরণের শ্রম অধিকার থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ঘেরের নারী শ্রমিকরা দীর্ঘ সময় ধরে কোমর পানির মধ্যে কাজ করার তাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের হার বাড়ছে, যা বড়ই উদ্বেগের। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর গুলশানে সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় বলা হয়, জীনের অনেক ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হচ্ছে নির্মাণ শ্রমিকদের। তারা এক দিকে যেমন কর্মস্থলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা উপকরণ পাচ্ছে না, অন্যদিকে নিয়োগ কর্তাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা না নেয়ায় হরহমেশাই দুর্ঘটনায় পড়ে কর্মস্থলে প্রাণ হারাতে হচ্ছে নির্মাণ শ্রমিকদের। এর পাশাপাশি নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য পানি ও স্যালাইনের ব্যবস্থা রাখা হলেও অনেকেই জানেন না কখন কী পরিমাণে স্যালাইন গ্রহণ করতে হবে। অনেকেই মাত্রাতিরিক্ত স্যালাইন গ্রহণ করার কারণে কিডনি রোগে আক্রান্ত হবার পাশাপাশি আরো নানা রকম জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এমনো ঘটেছে অতিরিক্ত গরমে বেশি স্যালাইন-পানি খাবার পরপরই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েছেন শ্রমিক। তাই এসব বিষয়ে শ্রমিকদের সচেতন করতে কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেই। সলিডারিটি সেন্টার বাংলাদেশ আয়োজিত মতবিনিময় সভায় অংশ নেন বাংলাদেশ লেবার রাইটস জার্নালিস্ট ফোরামের (বিএলআরজেএফ) সদস্য সাংবাদিকরা। সভায় উপস্থিত ছিলেন, সলিডারিটি সেন্টারের প্রোগ্রাম অফিসার ও প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম, প্রোগ্রাম অফিসার (জেন্ডার) জেসমিন ইসলাম অনি, প্রোগ্রাম অফিসার (এমইএল) রোমানা আফরোজ মীম, বিএলআরজেএফ’র সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, যুগ্ম-সম্পাদক আলমগীর হোসেন প্রমুখ। মতবিনিময় সভায় বক্তারা আরো বলেন, চা শ্রমিকরা যেমন দিনে মাত্র ১৭০ টাকার মতো কম মজুরি পায়, তেমনি তাদের আবাসন সংকট রয়েছে প্রকট এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকিতেও আছে তারা। কর্মস্থলে চা শ্রমিকদের হরহামেশাই নানা রকম দুর্ঘটনায় পড়তে হয়। বিশেষ কর্মস্থলে তাদের দেয়া হয় না পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জাম। এ জন্য চা বাগানে শ্রমিকরা নিয়মিত সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া চিংড়ি ঘেরের শ্রমিকরা চরম মানবেতর জীবনযাপন করে। শ্রম অধিকার বলতে তাদের কিছুই নেই। এখানে নারী শ্রমিকরা সবচেয়ে অবহেলিত। তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকিও বেশি। দীর্ঘক্ষণ পানির মধ্যে কাজ করতে হয় বলে তারা মাসিক বন্ধের ওষুধ সেবন করে।

দীর্ঘ দিন ধরে এ ধরণের ওষুধ সেবনের কারণে ঘেরের নারী শ্রমিকদের মাঝে বন্ধ্যাত্বের হার বাড়ছে। চার চরম উদ্বেগের বিষয়। এ বিষয়ে সচেতনতা যেমন দরকার, তেমনি এই খাতের শ্রমিকদের শ্রম আইনের আওতায় এনে তাদের শ্রম অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত