ঢাকা ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ২০ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

নতুনদের পদচারণায় মুখরিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

নতুনদের পদচারণায় মুখরিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ছাত্রলীগের দখলদারিত্বহীন, লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতিবিহীন একটি মুক্ত স্বাধীন ক্যাম্পাসে গতকাল পদচারণা ঘটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থীদের। এদিন সকাল থেকে তাদের ক্লাস কার্যক্রম শুরু হয়। সকাল থেকেই উৎসুক শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ছিল সরব উপস্থিতি। এর আগে গত কয়েকদিন ধরে ক্যাম্পাসজুড়ে নবীন শিক্ষার্থীদের পদচারণা দেখা যায়। আনমনে ঘুরে বেড়ানো দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কৃষ্ণচূড়ায় ফুটেছে নতুন ফুল।

‘ভয়ভীতিহীন একটি স্বাধীন ক্যাম্পাস, যেখানে কোনো রাজনৈতিক দখলদারিত্ব কিংবা দাসত্ব নেয়, এমন একটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদচারণার সুযোগ পেয়ে নিজেকে সর্বোচ্চ ভাগ্যবান মনে হচ্ছে।’ কথাগুলো বলেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের নবীন শিক্ষার্থী রাফিদ হাসান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে কেমন প্রত্যাশা জানতে চাইলে আব্দুল্লাহ সালেহিন নামের এক নবীন শিক্ষার্থী বলেন, ঢাকাশহরে বড় হওয়ার সুবাদে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অতীত ইতিহাস মোটামুটি জানি। নতুন দিনে নতুন প্রশাসনের কাছে খুব বেশি কিছু চাওয়ার নেই। শুধু চাই এই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেন সত্যিকার একটি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠে।

আরেক শিক্ষার্থী সানজিদা তাবাসসুম বলেন, আসলে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে প্রত্যাশা অনুযায়ী কিছুই হয় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে আমাদের যে প্রত্যাশা রয়েছে তার কতটা পূর্ণ হবে তা বলা যায় না। তবে নবীন শিক্ষার্থী হিসেবে অবশ্যই আমাদের কিছু প্রত্যাশা রয়েছে। যেমন, পড়াশোনার একটি সুষ্ঠু সুন্দর পরিবেশ, একটি সুন্দর আবাসন ব্যবস্থা, গণতান্ত্রিক ছাত্র রাজনীতির ধারায় ডাকসু নির্বাচনের ব্যবস্থা ও একটি গবেষণাভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়।

এর আগে রোববার নবীন শিক্ষার্থীদের শুভেচ্ছা বার্তা পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ। শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি বলেন, আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি আনন্দের দিন।

২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শ্রেণিকার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। তোমরা যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ লাভ করেছ, তাদের জন্যও নিশ্চয় দিনটি আনন্দের। আমি বিশ্বাস করি, তোমরা দেশের সেরা মেধাবীদের অংশ। তোমাদের পেয়ে আমরাও গর্বিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে নতুন সব শিক্ষার্থীকে আমি স্বাগত জানাই। শতাব্দীর অধিককাল ধরে নানা চড়াই–উতরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের রাজনৈতিক- সামাজিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাসের পরিবর্তন ও অগ্রযাত্রার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের। সাম্প্রতিক জুলাই বিপ্লব ইতিহাসের এক নতুন সন্ধিক্ষণে নিয়ে এসেছে আমাদের। এ নব অভিযাত্রার অগ্রসৈনিক তোমরা।

ভিসি বলেন, এখন তোমাদের জীবনেরও সন্ধিক্ষণ। আমি আশা করি, পড়াশোনার পাশাপাশি নিজেকে তৈরি করার সব সুযোগ তোমরা নেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদার, উন্মুক্ত প্রান্তর জীবনের বোধ ও উপলব্ধিকে পূর্ণ করে। এখানে ব্যক্তির প্রতিভার বিকাশ ও প্রকাশের বহুমাত্রিক সুযোগ ঘটে। তোমাদের সামনে চলার পথে আমার দোয়া ও শুভকামনা রইল। শিক্ষার পরিবেশ আমরা যত নিবিড় করতে পারব, শিক্ষার চাহিদা আমরা যত পূরণ করতে পারব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক ও দেশীয় ক্ষেত্রে তত প্রশংসিত হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নেয়ার পথে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করতে চাই।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত অংশগ্রহণে সংঘটিত জুলাই বিপ্লব-উত্তর বৈষম্যহীন বাংলাদেশে এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক প্রাঙ্গণে তোমাদের আবারও আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। এ বিপ্লবে যারা শহীদ হয়েছেন ও আহত হয়েছেন এবং অংশ নিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও অভিবাদন জানাই।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত