ঢাকা ১২ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ৩০-০৯-২০২৪ তারিখে লিফলেটে প্রচারিত বক্তব্যে

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর মন্তব্য

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)-এর মন্তব্য

বাংলাদেশের পল্লী এলাকায় বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য আমেরিকান মডেলের আলোকে রাষ্ট্রপতির এক অধ্যাদেশ বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি সংবিধিবদ্ধ সংস্থা হিসেবে ১৯৭৭ সালে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মাধ্যমে পল্লী অঞ্চলের জনগণকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে আসছে। বর্তমানে ২০১৩ এর আইন দ্বারা এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এই আইনের সংস্থান অনুযায়ী আরইবি রেগুলেটরি বডি এবং ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি আরইবি’র অধিনে গঠিত ও নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। সম্প্রতি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ব্যানারে কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারী পরিচয়ে বিতরণকৃত লিফলেট-এর বিষয়ে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের বক্তব্য নিম্নরূপ :

১। গ্রাহকের বৈদ্যুতিক পরিসেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে গ্রাহক সংযোগের ভিত্তিতে প্রতিটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসারে অফিস, জনবল ও যানবাহনের প্রাপ্যতা তৈরি হয়। তদনুসারে আর্থিক সক্ষমতা বিবেচনাপূর্বক সমিতিসমূহে প্রয়োজনীয় অফিস, জনবল ও যানবাহনের সংস্থান করা হয়ে থাকে।

২। মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজের জন্য সমিতি কর্তৃক নিজস্বভাবে মালামাল সংগ্রহ পূর্বক সমিতির মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ স্টোরে মজুত রাখা হয়। ওঅ্যান্ডএম স্টোরে মালামালের ঘাটতি হলে গ্রাহকসেবা অব্যাহত রাখার স্বার্থে সুনির্দিষ্ট নীতিমালা অনুসারে বাপবিবোর মাধ্যমে প্রকল্প স্টোর হতে সার্বক্ষণিকভাবে মালামাল প্রদান করা হয়। বিগত বন্যায় চাহিদা মোতাবেক মালামাল সরবরাহ করে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপন করা হয়।

৩। বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে মালামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে পিপিআর-২০০৮ এর বিধি অনুসরণপূর্বক প্রতিযোগিতামূলক দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয়কার্য সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। প্রায় সকল মালামালের Specification আন্তর্জাতিক ANSI এবং IEC স্ট্যান্ডার্ড মোতাবেক প্রনীত এবং দরপত্র মূল্যায়ন কমিটিতে BUET / DUET -এর অধ্যাপক পদমর্যাদার কর্মকর্তা সদস্য হিসেবে উপস্থিত থাকেন। মালামাল গ্রহণকালে গুণগত মান নিশ্চিত হওয়ার পর তা গ্রহণ করা হয়।

৪। বর্তমানে ৮০টি পবিস-এর পিক ডিমান্ড প্রায় ১০,০০০ মেগাওয়াট-এর বিপরীতে আরইবি’র ১৩০৫টি উপকেন্দ্র বিদ্যুতায়িত আছে, যার বর্তমান ক্যাপাসিটি ১৯,০০০ মেগাওয়াট। এছাড়া, পবিস বিতরণ ব্যবস্থায় প্রায় ১৬ লাখ বিতরণ ট্রান্সফরমার স্থাপিত আছে, যার ক্যাপাসিটি প্রায় ২৬,০০০ মেগাওয়াট। এতে দেখা যাচ্ছে যে, চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ক্ষমতার উপকেন্দ্র-বিতরণ ট্রান্সফরমার নির্মিত আছে। তাছাড়া, আরইবি কর্তৃক আন্তর্জাতিক নির্মাণ স্ট্যান্ডার্ড অনুসরণ করে প্রায় ৫ লাখ ৪০ হাজার কিলোমিটার লাইন নির্মাণ করেছে।

৫। বর্তমানে ৮০টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিতে ৪৫,০০০ কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত আছেন। একটি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন কারণে শূন্য হওয়া পদের বিপরীতে লোকবল নিয়োগ একটি চলমান প্রক্রিয়া হিসেবে বিবেচিত হয়। এ পর্যন্ত সংঘটিত দুর্ঘটনার তদন্ত হয়েছে এবং অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল কারণ ভুল সাট-ডাউন, অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস এবং প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা বিধি প্রতিপালন না করা।

৬। বাপবিবো’র কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জাতীয় বেতন স্কেলের আওতাভুক্ত বিধায় গেজেটের বর্ণনা অনুযায়ী যথাসময়ে কার্যকর করা হয়। পবিসসমূহের বেতন কাঠামো ভিন্ন (যা সরকারি বেতন স্কেলের প্রায় দ্বিগুণ) হওয়ায় সরকার কর্তৃক প্রতি পে-স্কেল ঘোষণার সাথে সাথে বাপবিবো কর্তৃক সমিতির জন্য পে-কমিশন গঠন করে বেতন কাঠামো কার্যকর করা হয়েছে। ফলে বাপবিবো ও পবিস-এর গঠনগত পার্থক্যের কারণে উভয় প্রতিষ্ঠানের পদ, পদবি, পদোন্নতি, পদমর্যদা, গ্রেড-বৈষম্য দাবি করার সুযোগ নেই।

৭। বাপবিবোর্ড আইন ২০১৩-এর সংস্থান মতে বাপবিবোর্ডের আওতাধীন পবিসসমূহে প্রশাসনিক, আর্থিক ও কারিগরী বিভিন্ন অডিটিং-মনিটরিং-প্রশিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। বাপবিবোর্ড এবং পবিসের বিভিন্ন কার্যক্রমে সরকারি অর্থ ব্যয়ের বিষয়াদি সংশ্লিষ্ট থাকায় গ্রাহকসেবা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অডিটিং-মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ যাবৎ বাপবিবোর্ড কর্তৃক পরিচালিত অডিট-মনিটরিং-প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ক্ষেত্রে হয়রানির কোনো অভিযোগ-সত্যতা পাওয়া যায়নি।

০৮। সমিতির অধিকাংশ যৌক্তিক দাবি আরইবি কর্তৃক পূরণ করা হয়েছে। অবশিষ্ট মাত্র ২টি দাবি যাচাইয়ের লক্ষ্যে একাধিক কমিটির কার্যক্রম অব্যাহত আছে। পবিস-এর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য এতগুলো উদ্যোগ গ্রহণ করা সত্ত্বেও কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর দাপ্তরিক শৃঙ্খলা বহির্ভূতভাবে দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সভা-সমাবেশ, বিভিন্ন লিফলেট প্রদান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অপ-প্রচারে গ্রাহকসেবার মান বিঘ্নিত হচ্ছে, যা রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত