সুসংবাদ প্রতিদিন

ফেলে দেয়া মাছের আঁশে ফিরছে সচ্ছলতা

প্রকাশ : ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  ইসহাক, ঈশ্বরগঞ্জ, ময়মনসিংহ

শিল্পের উত্তরণ ঘটছে মাছের আঁশে। ময়লার স্তূপ থেকে তার ঠাঁই হচ্ছে বৈঠকখানায়। ফেলে দেয়া মাছের আঁশ এখন হস্তশিল্পের উপকরণ, তৈরি হচ্ছে ওষুধ, প্রসাধন সামগ্রীসহ নানা কিছু। বড় সাইজের বিভিন্ন মাছ থেকে আঁশ সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হচ্ছে। এরপর শুকানো হচ্ছে তপ্ত রোদে ফেলে। আর্দ্রতা কাটিয়ে শুকিয়ে মচমচে হলে মাছের এসব আঁশ প্যাকেটজাত হয়ে দেশ থেকে চলে যাচ্ছে বিদেশে।

অনেকক্ষেত্রে মাছের চেয়েও যেন আঁশের দাম বেশি। প্রতি কেজি মাছের আঁশ রপ্তানিকারক বিভিন্ন কোম্পানির কাছে বিক্রি হয় ৭০ থেকে ৮০ টাকায়। মাছ কাটার পর ফেলে দেয়া এসব আঁশ বিক্রি করে এখন স্বাবলম্বী ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার শরীফা বেগম। মাছ বিক্রেতা তার স্বামীর কাছ থেকে মাছের আঁশ সংগ্রহ করে বিক্রি করা শরীফা বেগম বলেন, আমি এই মাছের আঁশ বিক্রি করে ছেলে-মেয়ের পড়াশোনাসহ সংসারের খরচ মিটাই। পরিত্যক্ত এসব মাছের আঁশ বাজার থেকে সংগ্রহ করার পর প্রথমে ধুয়ে পরিষ্কার করা হয়। এরপর প্লাস্টিকের ত্রিপলে আঁশগুলো মেলে দিয়ে রোদে শুকানো হয়। আঁশ বিক্রেতা শরীফা জানান, ‘মাছের আঁশ সংগ্রহ করি, তারপর ময়লা বাইছা ফালাই, এরপর রোদে লাইড়া শুকাই। রোদ থাকলে এক দিন লাগে, রোদ না থাকলে ২ দিন লেগে যায় শুকাতে। শুকানোর পরে এসব মাছের আঁশগুলো বস্তাভর্তি করে রেখে দেয়া হয় একমাসের বেশি সময়। এরপর বিদেশে রপ্তানির জন্য বাড়ি থেকে ক্রয় করে নিয়ে যায় বিভিন্ন কোম্পানি। ৮ বছর ধরে মাছের আঁশ বিক্রি করে ৬ জনের সংসার চালিয়ে ভালোভাবেই জীবনযাপন করছেন শরীফা বেগম। শরীফা বেগমের সফলতা দেখে এলাকার আরো ৩-৪ জন মহিলা জড়িত হয়েছে এই মাছের আঁশের ভিন্নধর্মী ব্যবসায়। শরীফা বেগম আরো বলেন, ফেলে দেয়া মাছের আঁশ বিক্রি করে বছরে লাখ টাকার উপরে উপার্জন হয়। ৪ ছেলে-মেয়ের খরচসহ সংসার চালাতে আর কোনো বেগ পোহাতে হয় না।