সুসংবাদ প্রতিদিন

সিরাজগঞ্জে আখ চাষে বাম্পার ফলন

প্রকাশ : ১২ আগস্ট ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  এস,এম তফিজ উদ্দিন, সিরাজগঞ্জ

সিরাজগঞ্জে এবার আখ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। অনেক স্থানে এ আখ মাড়াই শুরু হয়েছে এবং নতুন গুড় বাজারে উঠছে এরমধ্যেই। দাম ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে আখ চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার বেশি চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। উঁচু ও দোআশ জমিতে এ চাষাবাদ করেছে কৃষকরা। প্রায় আড়াই মাস আগে বিভিন্ন জাতের আখ সংগ্রহ করে (৩ চোখের ডাং) রোপণ করা হয়। এ জেলার চরাঞ্চলসহ কাজিপুর, রায়গঞ্জ, কামারখন্দ ও সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলায় বেশি চাষ হয়েছে। এসব আখের মধ্যে রয়েছে আইএসডি ৪১, ৪২, ৪৩, ইরি, বোন ও চুষে খাওয়ার আখ। এবার এ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে। অনেক স্থানে আখ মাড়াই করে নতুন গুড় বাজারেও উঠছে।

এছাড়া শহর বন্দরসহ বিভিন্ন যানবাহনেও এ আখ বিক্রি হচ্ছে এবং আখের রসের কদরও কম নয়। প্রতি গ্লাস রস এখন ১০ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর এতে যেমন কৃষকরাও লাভবান হচ্ছে, তেমনি আখ বিক্রেতারাও লাভবান হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকরা বলছেন, প্রায় ৩ যুগ আগে এ জেলার অধিকাংশ গ্রামঞ্চলের জমিতে নানা জাতের আখ চাষ হতো। এসব আখ মাড়াই করে রস জাল করে গুড় তৈরির ধুম পড়ত এবং হাট-বাজারে খোলা ও ডিমা গুড় বিক্রি হতো অবাধে। এ চাষে খরচ বাদে লাভের অংকও ভালো ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে ইরি-বোরো চাষে ঝুঁকে পড়ে কৃষকরা। এ কারণে ক্রমাগতভাবে আখ চাষাবাদ হ্রাস পায়। প্রায় এক যুগ আগে সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃষকরা ফের এ আখ চাষাবাদ শুরু করেছে। যমুনা নদীর তীরবর্তী কয়েকটি উপজেলাসহ গ্রামাঞ্চলে এ চাষাবাদের প্রভাব বাড়তে থাকে। সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মুনসুমি গ্রামের কৃষক আব্দুস সালাম ও নূরনবী বলেন, এবার ৬-৭ বিঘা জমিতে আখ চাষবাদ করেছি। লাখজনক আখ চাষ গত বছরের চেয়ে এবার বেশি করা হয়েছে। আশা করছি, খরচ বাদে প্রায় ২ লাখ টাকা লাভ থাকবে। এর মধ্যেই জমি ধরে আখ ক্রয়ে অনেক গ্রাহক আসছে। এছাড়া নতুন গুড় বাজারে উঠতে শুরু করেছে এবং বর্তমানে ১ ডিমা (৭০০ গ্রাম) গুড় ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এবং খাঁটি গুড় দেড়শ’ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে এবং প্রতিবছরই চিনি আটা মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করেও বিক্রি করে থাকে অসৎ কৃষকরা। এমন অভিযোগ এ অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে উঠেছে। এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক আঃ জাঃ মুঃ আহসান শহীদ সরকার আলোকিত বাংলাদেশকে বলেন, কম খরচে লাভ বেশি আখ চাষাবাদে কৃষকরা আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এবার এ চাষাবাদে বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাজার ভালো থাকায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।