স্টেডিয়ামজুড়ে দর্শকদের তাণ্ডব ইউএনওসহ আহত অর্ধশতাধিক

প্রকাশ : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  কক্সবাজার অফিস

কক্সবাজারে আয়োজিত ডিসি (জেলা প্রশাসক) গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৫-এর ফাইনাল ম্যাচ গতকাল শুক্রবার দর্শকের তাণ্ডবে প- হয়ে গেছে। এতে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও হুড়োহুড়িতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করে হয়েছে স্টেডিয়ামের মূল ভবন, গ্যালারিসহ সব কিছু। দর্শকদের অভিযোগ, ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত ৬ গুণ টিকিট বিক্রি করা হয়েছে। আর ওই সময় টিকিট বিক্রি হয়েছে অতিরিক্ত মূল্যে। আর এসব দর্শকের বসার স্থান না থাকায় বিশৃঙ্খলার সূত্রপাত। এতো বড় আয়োজনে নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন।

কক্সবাজার বীরশ্রেষ্ঠ মোহাম্মদ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া এই টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ ছিল শুক্রবার। রামু ও টেকনাফ উপজেলা একাদশের মধ্যে বেলা ৩টায় ম্যাচটি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ৭টা থেকে স্টেডিয়ামে গিয়ে টিকিট সংগ্রহ শুরু করেছেন দর্শকরা। এই টিকিটের মূল্য ৫০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও দর্শকের উপস্থিত দেখে ক্রমাগত বাড়তে থাকে। দুপুর ২টা পর্যন্ত আয়োজক কমিটির অতিরিক্ত মূল্যে ধারণক্ষমতার ৬ গুণ টিকিট বিক্রি করে দেয়।

দর্শকরা জানিয়েছেন, ২০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে এক একটি টিকিট। স্টেডিয়ামটির ধারণক্ষমতা ৫ হাজার হলেও ৩০ হাজার টিকিট বিক্রি করে দেয়। এতে অতিরিক্ত দর্শক গ্যালারিতে বসার স্থান না পেয়ে গেট ভেঙে আড়াইটার দিকে দর্শক পুরো মাঠ দখল করে নেন। এতে কারণে মাঠে খেলা পরিচালনার সুযোগ না হওয়ায় আয়োজকসহ পুলিশ-র‌্যাবসহ সেনাবাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। কিন্তু দফায় দফায় চেষ্টা করেও তা সম্ভব হয়নি। এর মধ্যে স্টেডিয়ামে প্রবেশে ব্যর্থ দর্শকরা স্টেডিয়ামের বাইর থেকে ভবনে ভাঙচুর শুরু করে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। এর মধ্যে বিকাল ৫টা ১৫ মিনিটের দেখা মাঠ থাকা দর্শকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী লাঠিচার্জ করে বের করে দিতে সক্ষম হয়। এরপর মাঠে খেলা পরিচালনার প্রস্তুতি নিলেও গ্যালারিতে দর্শক ও বাইরের দর্শকরা একযোগে হামলা করে গ্যালারি, মাঠ, প্রেস বক্সসহ সব কিছু ভাঙচুর ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। এতে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিলুফা ইয়াসমিনসহ অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। যার মধ্যে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ১৫ জনকে চিকিৎসা প্রদানের তথ্য নিশ্চিত করেছেন জরুরি বিভাগে দায়িত্বশীল চিকিৎসক।

এর প্রেক্ষিতে ফাইনাল খেলা স্থগিত করলেও আয়োজক কমিটি, জেলা প্রশাসকসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কারও বক্তব্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা) স্টেডিয়ামের একাংশে আগুন জ্বালিয়ে দিতে দেখা গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।