অরক্ষিত চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক
প্রকাশ : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
এএইচ সেলিম উল্লাহ, কক্সবাজার অফিস

অরক্ষিত হয়ে উঠেছে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের কক্সবাজারের চকরিয়ার অংশের ৪৪ কিলোমিটার। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মহাসড়কের চকরিয়ার মালুমঘাট ঢালায় সশস্ত্র ডাকাত দলের হামলায় মাহমুদুল হক (২৮) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও তিনজন আহত হয়েছেন। নিহত মাহমুদুল হক উখিয়ার বালুখালী এলাকার বাসিন্দা।
চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল আনোয়ার জানান, বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) গভীর রাতে লামা পাহাড়কেন্দ্রিক একটি ডাকাত চক্র মহাসড়কে রশি টান দিয়ে মোটরসাইকেল থামানোর চেষ্টা করে। এসময় মোটরসাইকেল আরোহীরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বিপরীত দিক থেকে আসা গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে ঘটনাস্থলেই মাহমুদুল হক মারা যান এবং তিনজন আহত হন। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে চকরিয়া উপজেলা সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত একজনকে আটক এবং জড়িত সন্দেহে আরও তিনজনকে প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করে আটক করেছে পুলিশ। নিহতের মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ওসি তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, মালুমঘাট ঢালার এ ঘটনা ডাকাত দলের কৌশলগত হামলার অংশ। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং অন্যদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ডাকাতের কবলে পড়া মোটরসাইকেল দুইটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে।
পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ার আরও বলেন, পাহাড়ি জনপদ লামা কেন্দ্রীক একদল ডাকাত সুযোগবুঝে পাহাড়ি পথে কক্সবাজারে এসে চুরি, ডাকাতি সংগঠিত করে এবং কৌশলে পাহাড়ে ঢুকে পড়ে। যার কারনে মহাসড়কের ৪৪ কিলোমিটার অরক্ষিত হয়ে উঠেছে।
বাসচালক রোস্তম আলী বলেন, মহাসড়কের কক্সবাজার অংশের প্রায় ১০টি পয়েন্ট খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। চালক ও যাত্রীরা চরম আতংকে থাকেন। তার মতে, থানা ও হাইওয়ে পুলিশ টহল ডিউটির চেয়ে চাঁদাবাজির কাজে বেশি ব্যস্ত থাকেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মালুমঘাট হাইওয়ের পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, মহাসড়কে যানজট নিরসনের পাশাপাশি নিয়মিত দুইটি টহলদল অপরাধ নির্মূলে কাজ করছেন।
মহাসড়কের রামু অংশের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ ফরিদ বলেন, অপরাধ নির্মূলে রামু থানা পুলিশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। মহাসড়কের রামু অংশে দিনে দুুইটি টিম টহলে থাকেন এবং রাতের বেলায় তিনটি টিম টহলে থাকেন।
কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জসিম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, কীভাবে এ ঘটনা ঘটলো তা খতিয়ে দেখার পাশাপাশি জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগতব্যবস্থা নেওয়া হবে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেই প্রচেষ্টা চলছে। তার আলোকে মহাসড়ক সিসিটিভির আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে এবং মহাসড়কের কক্সবাজার অংশে যেসব স্পষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ, সেসব এলাকায় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ডিবি ও চকরিয়া থানা পুলিশ চেকপোস্ট বসিয়ে তল্লাশি করবেন।
