সুসংবাদ প্রতিদিন

নওগাঁয় পান চাষে আগ্রহ বাড়ছে

প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  আব্বাস আলী, নওগাঁ

উত্তরের জেলা নওগাঁয় ধান চাষের পাশাপাশি পান চাষেও আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। পরিশ্রম ও খরচ কম হওয়ায় বাড়ছে লাভের অংশ। একবার রোপণে দীর্ঘসময় ফলন পাওয়ার সুবাদে বাড়ছে চাষের পরিধি। পান চাষের জন্য উঁচু, বেলে দোঁআশ মাটি ও ছায়াযুক্ত জায়গা উপযুক্ত। উৎপাদিত পান স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।

রাজশাহী মোহনপুর থানার ধুরইল গ্রামের পানচাষি সাদ্দাম হোসেন। দুই বছর আগে নওগাঁ সদরে শালুকা গ্রামে ৫বিঘা জমি ৬ বছরের জন্য বন্ধক নিয়ে পান চাষ করছেন। জমি বন্ধকসহ হালচাষ, চারা রোপণ, মাচা তৈরিসহ আনুষঙ্গিক খরচ পড়েছে ২৭ লাখ টাকা। রোপণের ৬ মাস পর থেকে পান উঠানো শুরু হয়। প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার টাকার পান বিক্রি হচ্ছে।

পানচাষি সাদ্দাম হোসেন বলেন, বর্তমানে পানের দাম কিছুটা কম রয়েছে। প্রতি বিড়া পান প্রকারভেদে ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি সপ্তাহে সার, কীটনাশক, সেচ ও শ্রমিক খরচ হচ্ছে। খরচের তুলনায় লাভের পরিমাণ খুবই কম। আগামী দেড়মাস পর দাম বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তবে বছর শেষে খরচ বাদে বিঘাপ্রতি ২-৩ লাখ টাকা লাভের আশা করা হচ্ছে।

চাষিরা বলছেন, এসব পান মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হতো। তবে গত এক বছর থেকে রপ্তানি বন্ধ থাকায় কমেছে দাম। এক বছর আগেও ২০০ টাকা বিড়া বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে উৎপাদন খরচই ঠিকমতো উঠছে না। আবারও যদি মধ্যপাচ্যের বিভিন্ন দেশে পান রপ্তানি শুরু হয় চাষিরা দাম পাবে।

পানচাষি বাদল হোসেন বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় পানের উৎপাদন বেশ ভালো হচ্ছে। তবে দাম কম থাকায় উৎপাদন খরচ ওঠা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। গত এক বছর থেকে রপ্তানি বন্ধ থাকায় কমেছে দামও। আগে ২০০ টাকা বিড়া বিক্রি হলেও বর্তমানে ৫০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবারও যদি রপ্তানি শুরু করা যায়, তাহলে পানচাষে আগ্রহ বাড়বে এবং ভালো দাম পেয়ে লাভবান হওয়া যাবে।

পানচাষি লিটন আহমেদ বলেন, পানে রোগবালাই কম হয়ে থাকে। অন্য ফসলের তুলনা পানচাষ লাভজনক। আমরা মিঠা জাতের পানচাষ করে থাকি। শক্তপানার পানের দাম বেশি হয়ে থাকে। এসব পান রাজশাহী ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়।

শ্রমিক আকাশ আহমেদ বলেন, প্রতিদিন পানের বরজে পান উঠানো, মাচা মেরামত ও পানি সেচসহ বিভিন্ন কাজ করতে হয়। বরজে ৮-১০ জন শ্রমিক করে দিতে জনপ্রতি ৫০০-৬০০ টাকা আয় করছে। এসব কাজ সবাই করতে পারে না। জেলার বাইরের বিশেষ করে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার শ্রমিকরা এ কাজে বেশি অভিজ্ঞ। তাদের থেকে পান বরজের কাজ করে নিতে হয়। নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) খলিলুর রহমান বলেন- জেলায় ৪৩ হেক্টর জমিতে মিঠা ও সাচি জাতের পানের আবাদ হয়েছে। যা থেকে বছরে প্রায় ৫২৬ টন পান উৎপাদনের আশা। জেলা সদর, মান্দা, বদলগাছী ও সাপাহার উপজেলায় পানচাষ হয়ে থাকে। রোগবালাই কম হওয়ায় খরচও কম এবং স্বল্প সময়ে অথনৈতিকভাবে লাভবান হওয়া সম্ভব। চাহিদা পূরণে বাড়ির পাশে স্বল্প জমিতে পান চাষাবাদের পরামর্শ প্রদান করা হয়।