সুসংবাদ প্রতিদিন
ভোলায় পেঁপে চাষে সাফল্য
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ফরহাদ হোসেন, ভোলা

ভোলায় পেঁপে চাষ করে সাফল্য অর্জন করেছেন মিলন মাঝি নামের এক কৃষক। দীর্ঘদিন পতিত থাকা ১৮০ শতাংশ জমিতে পেঁপে চাষ করে এ সাফল্য অর্জন করেন। সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশার বাঘার হাওলার কৃষক মিলন মাঝি বরিশাল থেকে সংগ্রহ করা ‘টপ লেডি’ জাতের ৩০০ পেঁপে চারা সার্জন পদ্ধতিতে ঘের তৈরি করে চারপাশে রোপণ করেন। বর্তমানে এর মধ্যে প্রায় ২৫০ থেকে ২৬৫টি গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে অসংখ্য পেঁপে। ‘টপ লেডি’ জাতের পেঁপে একটি হাইব্রিড জাত, যা ছোট গাছে বেশি ফলন দেয়, রোগ প্রতিরোধী এবং দীর্ঘ সময় ধরে ফলন দিতে সক্ষম। এর ফল পাকার পর লালচে হলুদ রঙের হয়, স্বাদে মিষ্টি ও সুস্বাদু। গাছ ছোট ও শক্তিশালী হওয়ায় ছাদ বাগানের জন্যও উপযোগী। রোপণের ৩-৪ মাস পরেই কাঁচা পেঁপে এবং ৬ মাস পরেই পাকা পেঁপে সংগ্রহ করা যায়।
এরইমধ্যে মিলন মাঝি প্রায় ২ লাখ টাকার পেঁপে বিক্রি করেছেন। আগামী তিন মাসে আরও পাঁচ লাখ টাকার বেশি বিক্রির সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনি জানান। প্রতিটি গাছের জন্য সার, ওষুধ ও পরিচর্যা বাবদ গড়ে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা খরচ হলেও প্রতি গাছ থেকে তিনি গড়ে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করছেন। একই সঙ্গে ঘেরে মাছ চাষ করেও অতিরিক্ত আয় আসছে। মিলন মাঝির এই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় কৃষকরাও এখন পতিত জমি কাজে লাগিয়ে কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার উদ্যোগ নিচ্ছেন।
এলাকার কৃষক জাফর বলেন, পেঁপে চাষ অত্যন্ত লাভজনক। তবে ভোলায় ভালো মানের চারা না পাওয়ায় আমরা কিছুটা সমস্যায় পড়ি। তা সত্ত্বেও আমরা পেঁপে চাষে আগ্রহী। মিলন মাঝির পেঁপে বাগান এখন এলাকায় একটি মডেল খামার হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে। দূর-দূরান্ত থেকে অনেকে তার বাগান ঘুরে দেখতে আসছেন এবং তার কাছ থেকে পেঁপে চাষের পরামর্শ নিচ্ছেন।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কামরুল হাসান বলেন, মিলন মাঝি তার এই বাগান থেকে ৪ থেকে ৫ গুণ মুনাফা পাচ্ছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে নিয়মিত মনিটরিং ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, যার ফলে তিনি একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা হতে পেরেছেন। তার দেখাদেখি এলাকায় আরও অনেক নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিকল্পিতভাবে এই উদ্যোগগুলো সম্প্রসারিত হলে ভোলায় পেঁপে চাষ একটি সম্ভাবনাময় কৃষি খাতে পরিণত হবে।
