ইসি ভাগ করে নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াত ও উপদেষ্টারা : এনসিপি

শাপলার জায়গায় দৃঢ় রয়েছি অবশ্যই অর্জন করব হাসনাত আবদুল্লাহ

প্রকাশ : ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  নিজস্ব প্রতিবেদক

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘নির্বাচন কমিশনকে (ইসি) গণিমতের মাল হিসেবে ভাগ করে নিয়েছে বিএনপি, জামায়াত, উপদেষ্টারা। আমরা জনগণের একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে দেখতে চাই।’ গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদের সাথে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।

নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনে আসতে আসতে আমাদের জুতার তলা ক্ষয় হয়ে যাচ্ছে। এই গণঅভ্যুত্থানটা যে হলো এখানে কিন্তু আওয়ামী লীগের অনেকগুলো এসেট তারা রেখে চলে গিয়েছিল। এই নির্বাচন কমিশনটা ১৫ বছর তারা নিজেদের মতো সাজিয়েছিল। এই যে তারা গণিমতের মালগুলো রেখে গিয়েছিল সেই গণিমতের মাল উপদেষ্টা, বিএনপি, জামায়াত সবাই ভাগ করে নিয়েছে। রাষ্ট্রের বর্তমান যা অবস্থা এই ইলেকশন কমিশনও তারা গণিমতের মাল হিসেবে ভাগ করেছে। আর্মি এক ভাগ নিয়েছে, বিএনপি এক ভাগ নিয়েছে, জামায়াত এক ভাগ নিয়েছে। কিন্তু আমরা তো জনগণের একটা প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশনকে দেখতে চাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ওনাদের (ইনিকে) বলেছি যে এটাকে গণিমতের মাল হিসেবে দেখবেন না। রুলস রেগুলেশনের মধ্যে আসতে হবে।’

নাসিরুদ্দীন বলেন, ‘আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে যারা কলঙ্কিত করার প্রচেষ্টা চালিয়েছিল তাদের আদালতের পর্যবেক্ষণে আনা হয়েছে এবং তাদের সেখানে তারা গৃহবন্দি হয়েছে। গত ১৫ বছরে সে সকল ব্যক্তির মধ্যে যেমন জিয়াউল আহসান, উনিও এই নির্বাচন কারচুপি থেকে শুরু এই প্রতিষ্ঠানটা ধ্বংসের মধ্যে অন্যতম কারিগর ছিল। আজকে আমরা বলেছি গত ১৫ বছরে যারা নির্বাচন কমিশনে এ সকল কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল, তাদেরও বিচারের আওতায় আনতে হব।’ এনসিপি নেতা আরও বলেন, ‘গণতান্ত্রিক যে যাত্রায় আমরা নির্বাচন কমিশনকে কোনও নির্দিষ্ট ধর্মের কাছে দিতে চাই না। কোনও ধর্মীয় রাজনৈতিক দলের কাছেও দিতে চাই না। অথবা কোনও ফ্যামিলির কাছেও আমরা এই নির্বাচন কমিশন বর্গা দিতে চাই না। আমরা চাই নির্বাচন কমিশনটা জনগণের হবে। এইজন্য আমরা জুতোরতলা ক্ষয় করে হলেও বারবার এই নির্বাচন কমিশনের কাছে আসি। আপনাদের সামনে দাঁড়াই। আমরা বলেছি যে নির্বাচন কমিশনকে স্বাধীন করুন। স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হিসেবে রাখুন।’

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ, যুগ্ম সদস্য সচিব জহিরুল ইসলাম মুসা প্রমুখ।

শাপলার জায়গায় দৃঢ় রয়েছি অবশ্যই অর্জন করব -হাসনাত আবদুল্লাহ : জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতীক হিসেবে শাপলার বিকল্প কোনো কিছু ভাবছেন না বলে জানিয়েছেন দলটির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেছেন, শাপলা মার্কার জন্য তাঁরা তাঁদের জায়গায় দৃঢ় রয়েছেন। তাঁদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে শাপলাকে অবশ্যই তাঁরা অর্জন করবেন। গতকাল রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন হাসনাত আবদুল্লাহ। বেলা ১১টার দিকে ইসি সচিবালয়ের সচিবের সঙ্গে হাসনাত আবদুল্লাহ, এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ও যুগ্ম সদস্যসচিব জহিরুল ইসলাম বৈঠক করেন। দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বৈঠক চলে।

বৈঠক শেষে হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘শাপলা ছাড়া বিকল্প কোনো অপশন নেই। আমরা বিকল্প কেন নেব? এটার আইনগত তো ব্যাখ্যা লাগবে। আমরা দেখেছি, এখন পর্যন্ত কোনো আইনগত ব্যাখ্যা, কোনো কিছুই নির্বাচন কমিশন আমাদের দিতে পারেনি। ...ব্যক্তি নিজের ইচ্ছেমতো একটা ব্যাখ্যা দাঁড় করিয়েছে। ...শাপলা, কেবল শাপলা এবং শাপলার জন্য, এই মার্কার জন্য আমরা আমাদের জায়গায় দৃঢ় রয়েছি। আমাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এই শাপলাকে অবশ্যই আমরা অর্জন করব। এ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।’

নির্বাচন কমিশনের আচরণের সমালোচনা করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমে মনে হয়, একটি ইনস্টিটিউশনাল অটোক্রেসি (প্রাতিষ্ঠানিক স্বৈরতন্ত্র) তৈরি হচ্ছে। নির্বাচন কমিশনের তালিকায় (শিডিউল) যে মার্কাগুলো রয়েছে, সেসব অন্তর্ভুক্তির কোনো নীতিমালা নেই। শাপলাকে কেন এই তালিকায় অন্তর্ভুক্তি করা হবে না, সেটারও স্পষ্ট নীতিমালা নেই। বাংলাদেশে যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে, তাদের যে মার্কাগুলো দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন সময়, কোন নীতিমালার ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে, সেটারও স্পষ্ট নীতিমালা নেই। মধ্যযুগীয় রাজা-বাদশাহদের আচরণের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের আচার-আচরণের সাদৃশ্য রয়েছে।