এখনই দেশে ফিরতে পারছেন না বিএসএফের পুশইন করা ছয় ভারতীয়

প্রকাশ : ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশে ঠেলে পাঠানো (পুশইন) ছয় ভারতীয় নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন পিছিয়েছে। আগামী ৬ নভেম্বর তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের দিন ধার্য করেছেন আদালত। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে চাঁপাইনবাবগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (তৃতীয় আদালত) আশরাফুল ইসলাম এ আদেশ দেন। অভিযোগ গঠনের দিন পেছানোয় ছয় ভারতীয় নাগরিক এখনই দেশে ফিরতে পারছেন না। এর আগে এক রিট পিটিশনের পরিপ্রেক্ষিতে চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের ভারতে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্ট। এতে বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে ওই ভারতীয় নাগরিকদের দেশে ফেরা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ছয় ভারতীয় নাগরিক হলেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বীরভূম জেলার ধিতোরা গ্রামের দানিশ শেখ (২৮), তাঁর স্ত্রী সোনালি বিবি (২৬), তাঁদের ৮ বছর বয়সী ছেলে এবং সুইটি বিবি (৩৩) ও তাঁর ১৬ ও ৬ বছর বয়সী ছেলে। তাঁদের মধ্যে সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা।

গত ২০ আগস্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরের আলীনগর এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশ ও আসামিপক্ষের আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ওই ভারতীয় নাগরিকেরা দিল্লিতে কাগজ কুড়ানোর কাজ করতেন। দিল্লি পুলিশ তাঁদের আটক করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মাধ্যমে কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠায়। পরে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আটক হলে তাঁদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশ আইনে মামলা করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। আসামিপক্ষের আইনজীবী একরামুল হক বলেন, আদালত আগামী ৬ নভেম্বর অভিযোগ গঠনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন। ওই দিন শুনানি শেষে অভিযোগ গঠন করা হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার ছয়জনই ভারতীয় নাগরিক।

এ-সংক্রান্ত কাগজপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। তাঁরা বিএসএফের মাধ্যমে পুশ ইনের শিকার। গ্রেপ্তার ছয়জনের মামলার তদারক করতে বাংলাদেশে এসেছেন ভারতের নাগরিক মফিজল শেখ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ আদালত প্রাঙ্গণে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, দিল্লি পুলিশ জঘন্য একটি কাজ করেছে। শুধু বাংলায় কথা বলার কারণে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে যাচাই-বাছাই ছাড়াই বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে গিয়েছিলেন। বিচারপতি রায় দিয়েছেন, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের দেশে ফেরাতে হবে। গতকাল শুক্রবার চার সপ্তাহ শেষ হয়েছে। এরপরও কেউ কোনো সহযোগিতা করেনি।

মফিজল শেখ বলেন, ‘তারা অসহায়-গরিব মানুষ। আমরা চাই তারা দেশে ফিরে যাক। ছয়জনের মধ্যে সোনালি বিবি অন্তঃসত্ত্বা। বাংলাদেশের কোর্টের কাছে আমরা আবেদন করেছি যে তাঁদের বিচার যেন দ্রুত শুরু করা হয়। বাংলাদেশের আইনকে সম্মান জানিয়েই আমরা তাঁদের ফিরিয়ে নিয়ে যেতে চাই।’ চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এন এম ওয়াসিম ফিরোজ বলেন, কুড়িগ্রাম সীমান্ত দিয়ে পুশ ইনের পর ওই ছয় ভারতীয় নাগরিক ঢাকায় গিয়েছিলেন।

সেখান থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে আসার পর পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। তাঁদের দেশে ফেরার আকুতি ছিল। কিন্তু বৈধ কোনো কাগজপত্র (পাসপোর্ট-ভিসা) না থাকায় তাঁদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা করা হয়। এরপর আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়।