সুসংবাদ প্রতিদিন

কিশোরগঞ্জে গাছআলুর বাণিজ্যিক চাষে সাফল্য

প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৫, ০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ

  শাহজাহান সাজু, কিশোরগঞ্জ

কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে গাছআলু। এক সময় গ্রামে বাড়ির আঙিনার গাছে চাষ হতো এ আলু। এবার এ সবজি জমিতে চাষ করে সহজে ভালো ফলন, বাজারে প্রচুর চাহিদা এবং ভালো দাম পাওয়ায় লাভবান হচ্ছেন কৃষক। জেলার তেরোটি উপজেলায় এ আলুর চাষ ছড়িয়ে দিতে কাজ করে যাচ্ছে কৃষি বিভাগ। বাজারে বিক্রির জন্য মাচায় ঝুলন্ত গাছ আলু সংগ্রহ করছেন কৃষক। এ আলুর ঝুলন্ত দৃশ্য দেখতেও মনোরম। গত চার বছর ধরে এমন দৃশ্যের দেখা মিলে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার কৃষি জমিতে। বছরের এপ্রিল মাসে রোপণ করা এ আলুর ফলন পাওয়া যায় আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত।

গাছ আলু অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে ও অল্প পরিশ্রমে অধিক লাভজনক হওয়ায় পাকুন্দিয়া উপজেলার চাষিদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। পাকুন্দিয়া উপজেলার সুখিয়া গ্রামের গাছআলু চাষি জামাল মিয়া বলেন, আমি গাছআলু রোপণ করেছি আট শতাংশ জমিতে। দুই থেকে তিন হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এ পর্যন্ত ১২ হাজার টাকার আলু বিক্রি করেছি। আশা করছি আরও কিছু বিক্রি করতে পারবো। এই গাছ আলু চাষ করে আমরা খুবই লাভবান। ব্যবসায়ীরা জমি থেকেই কিনে নিয়ে যায়। এ আলুর দাম এবং চাহিদা অন্যান্য আলুর চেয়ে দ্বিগুণ। চাষি আবুল কালাম বলেন, আমরা বাড়ির আশপাশের গাছে এ আলু রোপণ করতাম। এখন জমিতে চাষ করছি, ভালো ফলন হয়, ভালো দামও আছে। এই গাছ আলু দুই-তিন বছর যাবত চাষ করতেছি। খুবই লাভবান হচ্ছি। আমাদের দেখাদেখি আরও কৃষক চাষ করতেছে। আশাকরি সবাই লাভবান হবে।

অন্যান্য সবজির সাথী ফসল হিসেবে ফলানো যায় গাছ আলু। এপ্রিল মাসের শুরুতে রোপণ করে একই জমির মাচায় কুমড়া, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা ফলানোর পর আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফলন আসে গাছ আলুর। মিশ্র ও রিলে পদ্ধতিতে বিনা খরচে গাছ আলু আবাদ করা সম্ভব বলে জানালেন কিশোরগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডক্টর সাদিকুর রহমান। তিনি বলেন, পান আলু বা গাছ আলু একটি নতুন সবজি। এটা আগে মানুষের বাড়িতে ব্যাক্তিগত পর্যায়ে চাষ হতো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সারা দেশে এটা চাষের উদ্যোগ নিয়েছে। তারই অংশ হিসেবে পাকুন্দিয়া উপজেলায় এ বছর ৪০২ হেক্টর জমিতে গাছ আলু আবাদ হযেছে। আমরা আশা করছি ৬ হাজার টন উৎপাদন হবে। যার বাজার মূল্য প্রায় ২৫ কোটি টাকা। এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ সবজি এই জন্য, এ সময় সবজির ক্রাইসিস থাকে। ঐ মূহূর্তে এই সবজি মানুষের চাহিদা পূরণ করতে পারতেছে। আমরা কাজ করে যাচ্ছি, জেলার সব উপজেলায় যেন এটা সম্প্রসারণ করা যায়।